সেক্স এবং পরবর্তী প্রজন্ম

প্রকাশ: ৭ মার্চ ২০২২ | ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৭ মার্চ ২০২২ | ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 225 বার দেখা হয়েছে

সেক্স এবং পরবর্তী প্রজন্ম
সারা বিশ্ব জুড়ে প্রত্যেকের মধ্যেই সেক্স আকাঙ্খা বিদ্যমান কিন্তু কেউই এই বিষয়টি প্রকাশ করতে চায় না। জনসম্মুখে আমাদের ভদ্রতা রক্ষার্থে আমরা আমাদের সেক্স ভাবনা প্রকাশ করি না। কিন্তু সবচেয়ে গোপনীয় বিষয় এই যে, আমরা সবসময় এই যৌন আকাঙ্খা পূরণের জন্য উদগ্রীব থাকি, কানাকানি করি এবং অবিরামভাবে এই বিষয়ের ধ্যানে মগ্ন থাকি। বর্তমান সমাজের তরুণ-তরুণীদের মাঝে এমনকি বয়োঃবৃদ্ধদের মধ্যেও এই সেক্স উত্তেজনা বিদ্যমান। আর তারই ফলশ্রুতিতে এই সেক্স আকাঙ্খা মেটাতে গিয়েই বিভিন্ন অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত হতেও আমরা দ্বিধা বোধ করি না। আর সেই কারণে বর্তমান সমাজে এর থেকে উৎপত্তি হচ্ছে বিভিন্ন সংঘর্ষ, ধর্ষণ, এসিড সন্ত্রাস, বিবাহ বিচ্ছেদ এমনকি পাশবিক হত্যাযজ্ঞ চালাতেও মানুষ ই পিছপা হচ্ছে না। যেমন-আলোচিত মডেল কন্যা তিন্নি জ হত্যাকাণ্ড, চিত্রনায়ক সালমান শাহ, সোহেল চৌধুরী ন হত্যাকাণ্ড তরুণ-তরুণীরা তাদের অধিকাংশ মূল্যবান সময়ই সেক্স ভাবনায় অতিবাহিত করে থাকে। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট, বাজারে প্রচলিত বিবিধ যৌন বিষয়ক সিডি ক্যাসেট, প্রকাশনা, হলিউড-বলিউডের সেমি ন্যুড ছবি এবং স্যাটেলাইট, ডিশ এন্টিনার যে প্রসার তাতে করে আধুনিকতার হল দিয়ে মনে মনে তারা সেক্স ভাবনায় গভীরভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। যেমন-সম্প্রতি ঐশ্বরিয়া রাই এর সেমি ন্যুড ছবি নিয়ে তাদের পরিবারে দেখা দিয়েছে অশান্তি। (সূত্র-২০ মার্চ প্রথম আলো) এই ধরনের ডিশ কালচারের নগ্ন সংস্কৃতিকে অনুকরণ করতে গিয়ে আমাদের যুব সমাজও নৈতিকতার অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক একটি আলোচিত ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, এই কামরূপ অজ্ঞানতা কতটা ভয়াবহ হতে পারে। বর্তমানে আমরা যাদেরকে অনুসরণ করে আমাদের ব্যক্তিত্ব, পোশাক-আশাক, চলন-বলন,  আধুনিকতার গড্ডালিকায় গা ভাসাচ্ছি সেই উন্নত শিক্ষিত মিডিয়া তারকারাও তাদের কদর্য পাশবিক যৌন আখাঙ্খা মেটানোর জন্য যৌনশক্তিবর্ধক, ভয়ঙ্কর ক্ষতিকারক নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ইয়াবা গ্রহণ করতেও পিছপা হচ্ছে না। ইয়াবা রাজ্যে শুধুমাত্র মিডিয়ার তারকারাই নন, সেইসাথে গায়ক, গায়িকা, মডেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের যুবক যুবতীরা, ধনীর দুলালীরা সহ সাধারণ মানুষও প্রবেশ করছে। ইয়াবা কেলেঙ্কারীর সাথে জড়িত অন্যতম আলোচিত মডেল কন্যা নিকিতার কথা এখানে উল্লেখযোগ্য। বর্তমান প্রগতিময় সমাজ নিজেকে ভদ্র সমাজ বলে দাবি করছে। কিন্তু আমরা কতটা পবিত্র এবং ভদ্র তা আমাদের সূক্ষ্ম অজ্ঞানতার জন্য উপলব্ধি করতে পারি। না । অনেক যুবক-যুবতী আছে যারা বেশ্যাবৃত্তিটাকে ঘৃণা করে। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, তারা নিজেরাই ধীরে ধীরে বেশ্যাবৃত্তিটাকে গ্রহণ করে, কিন্তু তারা তা স্বীকার করছে না। এই বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে সুস্পষ্ট করা যায় যুবক যুবতীরা তাদের পরস্পরের মধ্যে কামরূপ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারা একে অপরের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। এই প্রেমের জন্য হাজার হাজার টাকা অপব্যয় করে চিঠি, মোবাইলে কথোপকথন, উপহার সামগ্রী এবং ইন্টারনেটে ভাবের আদান প্রদান ইত্যাদি করার মাধ্যমে তাদের হৃদগ্রন্থি তাদের পরস্পরের প্রতি অনুরক্ত করে। এর ফলে এক পর্যায়ে পরস্পরের প্রতি আসক্তি স্বরূপ তারা অবৈধ যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে দেখা যায় যে, যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হবার পর তাদের সেই কথিত প্রাণাধিক প্রিয় ভালোবাসার বিচ্ছেদ ঘটে। সেই বিচ্ছেদ পরিপূর্ণরূপ হতে না হতেই তারা পূনরায় একই কর্মে। লিপ্ত হয়। একটু ভালভাবে লক্ষ্য করুন যেখানে একজন বেশ্যা ৫০, ১০০, ৫০০ কিংবা হাজার টাকার বিনিময়ে কারো সঙ্গে যৌন সম্ভোগে লিপ্ত হয়, সেখানে এই শিক্ষিত সমাজের তথাকথিত ভদ্র যুবক যুবতীরা হাজার টাকা মোবাইলে বা অন্য কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করে সেই একই যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হচ্ছে। তাহলে এই বেশ্যা সমাজে আর আমাদের তথাকথিত উন্নত, আধুনিক, পরিমার্জিত ভদ্র সমাজের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আমরা যদিও বেশ্যাবৃত্তিকে ঘৃণা করি কিন্তু আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষই লোক চক্ষুর অন্তরালে ও ভদ্রতার মুখোশ পরে একই কুকর্ম করে চলেছে। আবার অনেকে গর্ব করে বলে যে, “আমরা বাপু এসব নোংরা কাজে লিপ্ত হই না। আমাদের এ ধরনের বাজে স্বভাব নেই।” কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে, তারাও কামরূপ দাবাগ্লিতে দগ্ধ হয়ে মনে মনে কাম বিষয়ক চিন্তা করে থাকে। কিন্তু সেই পরিকল্পনাটাকে বাস্তবে রূপ দিতে না পারায় তাদের কামেন্দ্রিয়গুলো অত্যন্ত প্রবলভাবে উত্তেজিত হয়ে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিকে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট করে। ফলে তারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে কি করা উচিত বা কি করা অনুচিত সেই দিকে মনোনিবেশ না করে সাময়িকভাবে নিজের যৌন বাসনাকে নিবৃত্ত করার জন্য হস্তমৈথুনে লিপ্ত হয়। নারী-পুরুষরা আধুনিকতার নামে পরস্পরকে আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন কামোত্তেজক পোশাক পরিধান করে। কিন্তু একবারও কি তারা ভেবে দেখেছে তারাও প্রকৃতপক্ষে একজন বেশ্যার মতো আচরণ করছে। একজন বেশ্যা যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হওয়ার বাসনায় অন্যকে আকর্ষন করার জন্য যে ধরনের পোশাকে সজ্জিত হয়ে বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে, আমাদের সমাজের অধিকাংশ নারী পুরুষরাও পরস্পরকে আকর্ষনের জন্য সেই রকম পোশাকে সজ্জিত হয়ে ভদ্রতার আড়ালে একই ধরনের আচরণ করে। আজকাল হলিউড, বলিউড এর নায়ক নায়িকার অনুকরণে আমাদের রাস্তাঘাটে, পার্কে, পর্যটন এলাকায় ও ক্লাবে যুবক-যুবতীদের অশ্লীল পোশাকের বাহারী প্রদর্শন সহজেই দেখা যায়। এজন্যই সমাজে পরকীয়া ধর্ষণ ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তারা পশুবৃত্তিক নিকৃষ্ট, জঘন্যতম কামোদ্দীপক আচরণের মাধ্যমে মূল্যবান সময় নষ্ট করে তাদের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারের পথে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে মাতা-পিতার প্রতি শ্রদ্ধাভক্তি হ্রাস পায়, পরিবার ভেঙ্গে যায়, একটি উজ্জ্বল প্রতিভা বিনষ্ট হয়, নৈতিকতার হয় অধঃপতন, সামাজিক বা পারমার্থিক বিধি নিষেধের অবমাননা করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ- প্রেমিকাকে পরিবার হতে সম্মতি না দেওয়াকে কেন্দ্র করে যুবরাজ বীরেন্দ্র কর্তৃক নেপালের রাজ পরিবারে বহুল আলোচিত পৈশাচিক নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। বর্তমান নারী পুরুষরা অধিকাংশ সময়ই অনেক ধরনের ই নীতিবাক্য মুখ দিয়ে আউলিয়ে থাকে। মাঝে মধ্যে তারা এমনও উদাহরণ দিয়ে থাকে যে, “প্রেম থেকেই এ জগতের সৃষ্টি, প্রেম হচ্ছে সবচেয়ে পবিত্র, কোন ধর্ম কি বলেছে প্রেম করা নিষিদ্ধ?” কিন্তু তারা এটা উপলব্ধি করতে পারে না, ধর্মে যে প্রেমের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তারা তার বিপরীতটাই গ্রহণ করছে। তারা একে অপরের দেহকে ভোগ করার যে নোংরা প্রয়াস তাকে প্রেম বলে জাহির করছে। তারা যদি প্রকৃতই ভালবাসত তাহলে দৈহিক সৌন্দর্য্যকে কখনোই প্রাধান্য দিত না। তারা যদি প্রকৃতই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলত তবে প্রতিটি সন্তান উৎপাদনের জন্য শুধুমাত্র একবারই ■ দৈহিক মিলনে রত হত। কারণ একটি সন্তান জন্ম দানের জন্য একবার মিলনই যথেষ্ট। যেমন-সাধারণত পশু সমাজে আমরা দেখি যে, একটি গাভী তার একটি সন্তান উৎপাদনের জন্য শুধুমাত্র একবারই দৈহিক মিলন করে থাকে। কিন্তু সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব বলে বিবেচিত মনুষ্য সমাজ তাদের বিকৃত দৈহিক সুখকে প্রাধান্য দিয়ে বহুবার যৌন মিলনের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে তাদের কামোত্তেজক ইন্দ্রিয়গুলোকে উপভোগ করার ব্যর্থ প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচেছ। বেশীবার, বেশীক্ষণ রতিক্রীড়া করার জন্য কামোন্মুখ ব্যক্তিরা বিভিন্ন এ্যালোপেথিক, কবিরাজি ঔষধের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু এর ফলে কিছু সময় যেমন-এক ঘন্টা, দেড় ঘন্টা নতুবা দুই ঘন্টা তাদের কামেন্দ্রিয়গুলোকে তারা সংযত রাখতে পারে কিন্তু পরক্ষণেই সেই কামরুপ দাবাগ্নি তাদের হৃদয়ে আবার দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। এর ফলে তারা পুনঃ পুন যৌন মিলনে লিপ্ত হয়। এ যেন পেট্রোল দিয়ে আগুন নেভানোর মত। এরই পরিণতিতে তাদের ঔরসে উৎপন্ন বহু সন্তানকে (ভ্রুণ) তারা চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ঔষধ পত্রাদি, পিল প্রভৃতির মাধ্যমে অনবরত হত্যা করেই যাচেছ। তাহলে এটিই কি মাতা-পিতার তাদের সন্তানের প্রতি ভালবাসার নিদর্শন? এ বিষয়ে শ্রীল প্রভুপাদ বলেছেন, “আমরা আমাদের দৈহিক মিলনকে প্রাধান্য দিই। কিন্তু তার ফলে উৎপন্ন সন্তানের ভার বহন করতে রাজি নই। ফলশ্রুতিতে আমরা তাকে গর্ভেই হত্যা করি।” সাধারণত এ রকম আধুনিক যুগের তথাকথিত মা-বাবারা ছেলে

 

চৈতন্য সন্দেশ এপ্রিল – ২০০৮ প্রকাশিত

 

 

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।