ভূত বনাম হরে কৃষ্ণ!

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৩ | ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ | ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 113 বার দেখা হয়েছে

ভূত বনাম হরে কৃষ্ণ!
ইতালি যদি রোমের জন্য ঐতিহাসিকভাবে বিখ্যাত হয়ে থাকে। তবে রোমের অদূরে একটি ছোট্ট গ্রাম বর্তমান সময়ের জন্য বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। কেননা খুব সম্প্রতি এ ছোট্ট গ্রামটিতেই ঘটে গেছে এক অদ্ভুত কাণ্ড। বলতে গেলে এক দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান, যে সমস্যার সমাধানের অপেক্ষায় এক দম্পতিসহ তার পরিবারকে কাটাতে হয়েছে নয়টি বছরের এক দীর্ঘ সময়। তবে যে সমস্যা নিয়ে এত দীর্ঘকাল অপেক্ষা সে সমস্যার বিষয়টি শুনলে বোধহয় বিজ্ঞানমনস্ক ছাত্র-ছাত্রীদের হাস্যকর বিষয় বলে মনে হতে পারে। আসলে বিষয়টি হাস্যকর নয় কিংবা অবাস্তবও নয় বরঞ্চ কঠিন এক সত্য বাস্তবতা। যে বাস্তবতার নাম হল ‘ভূত’। নামটি শুনেই হাসিতে উড়িয়ে দিয়ে বিষয়টিকে গুরুত্বহীন করবেন না। কেননা ভগবদ্গীতা ও অন্যান্য বৈদিক শাস্ত্রের স্বীকারোক্তি পড়লে বিষয়টি আর হাল্কাভাবে দেখার অবকাশ নেই। এখন প্রশ্ন হল প্রকৃতপক্ষে ভূত কি? এ বিষয়ে শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার ১ম অধ্যায়ের ৪১নং তাৎপর্যে ব্যাখ্যা করেছিলেন। “বিষ্ণুকে উৎসর্গীকৃত প্রসাদ সেবন করার ফলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তিলাভ হয়। অনেক সময় পিতৃপুরুষেরা নানা রকমের পাপের ফল ভোগ করতে থাকে এবং অনেক সময় তাদের কেউ কেউ জড় দেহ পর্যন্ত ধারণ করতে পারে না। সূক্ষ্ম দেহে প্রেতাত্মারুপে থাকতে বাধ্য করা হয়। যখন বংশের কেউ তার পিতৃপুরুষদের ভগবৎ প্রসাদ উৎসর্গ করে পিন্ডদান করে, তখন তাদের আত্মা ভূতের দেহ অথবা অন্যান্য দুঃখময় জীবন থেকে মুক্ত হয়ে শাস্তি লাভ করে। অর্থাৎ কোন একটি জীবাত্মা যখন অত্যধিক পাপের কারণে, অনাকাঙ্খিত বা অস্বাভাবিক মৃত্যু আত্মহত্যা ইত্যাদির কারণে মৃত্যুবরণ করে তখন সেই আত্মা অন্য কোন দেহ না পেয়ে মন, বুদ্ধি অহংকার সম্বলিত সূক্ষ্ম দেহে অবস্থান করে এবং যাতনা অনুভব করে। তখন সেই পতিত আত্মাকে বলা হয় প্রেতাত্মা বা ভূত। রোমের নিকটে এরকম একটি প্রেতাত্মা বা ভূত এক পরিবারকে অনেক যাতনা নিয়েছিল। নয় বছর পূর্বে একটি মেয়েকে ছেলে পক্ষ বিবাহের প্রস্তাব দেয় কিন্তু মেয়েটি তা নাকচ করে। পরবর্তীতে ত বা যাদুবিদ্যায় পারদর্শী ছেলেটির মা মেয়েটিকে অভিশাপ বা সাবধানবাণী দেয় যে, সে আর কখনো একটি দিনের জন্যও শান্তিতে থাকতে পারবে না। সেই থেকে মেয়েটি এবং তার স্বামী তাদের ঘরে একটি দিনের জন্যও শান্তিতে ছিল না। সন্ধ্যা হলেই আস্তে আস্তে শুরু হয় নানারকম অদ্ভুত সব কার্যকলাপ। কখনো। বা বিকট অদ্ভুত শব্দ, কখনো বা চেয়ার টেবিল বা ভারী জিনিস শূন্যে ভাসিয়ে দেয়ালে কিংবা মেঝেতে আঘাত করা। কখনো বা আলো সব নিভে যাওয়া, কখনো বা ঘরের সব জিনিসপত্র কাঁপতে থাকা ইত্যাদি বহু অদ্ভুত কার্যকলাপ ঘটত। সেই প্রেতাত্মার ভয়ে ভীত হয়ে বাড়ি ছাড়বে তারও জো নেই কেননা তাদের বাবা-দাদার আমলের সম্পত্তি। কেউ জমিটি কিনতেও চায় না ঐ ভয়ে। ৯টি বছর এভাবেই সব মিলিয়ে ৯টি কেটেছিল। মাঝে মাঝে ভূত তাড়াবার জন্য সুগন্ধযুক্ত ধুপকাটি এবং মোমবাতি প্রজ্বলন করেও কোন ফল হয়নি। গীর্জার ধর্মযাজকদেরও সহায়তাও চেয়েছিল কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। একসময় মেয়েটির এক বন্ধুর পিতা-মাতার সাহায্য চাওয়া হল যারা ২০টি বছর হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ করে কৃষ্ণভাবনাময় জীবন পালন করে আসছিল। মহামন্ত্রের আদৌ কি শক্তি বিদ্যমান এটি প্রমাণ/পরীক্ষ করার এই একটি সুযোগ। এটি ভেবে পাঁচ-সাত জনের একটি কৃষ্ণভক্তের দল গিয়েছিল বিষয়টির সমাধান করতে। তবে বিষয়টির সমাধানের সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রেতাত্মার সদগতি করাও তাদের অভিযানের উদ্দেশ্য। যথারীতি সন্ধ্যা হল, মৃদঙ্গ, করতালের সাথে সাথে উদণ্ড নৃত্য সহকারে উচ্চস্বরে হরিনাম শুরু করল ভক্তরা। এদিকে সেই প্রেতাত্মা তার অদ্ভুত কার্যকলাপ দেখিয়ে যথারীতি সবাইকে ভয় দেখাতে লাগল। যথারীতি শূন্যে ভাসমান বস্তুর এক রুম থেকে অন্য রুমে নিয়ে গিয়ে আছড়ে ফেলতে লাগল। মেয়েটিকে যে ঘরে রাখা হল সেই ঘরের দেয়ালে একের পর এক ভাঙচুর। এদিকে ভক্তরা প্রাথমিকভাবে ধারণারও অতীত অবস্থার সম্মুখীন হয়েও মহামন্ত্রের উপর আস্থা রেখে উচ্চস্বরে কীর্তন করতে লাগলেন। কিন্তু তবুও সেই প্রেতাত্মার কার্যকলাপ অব্যাহত রয়েছে । অবশেষে ভক্তরা নৃসিংহ শালগ্রাম বের করে তাকে স্নান করানোর পর সেই পবিত্র জল ঘরের চারপাশে ছড়াতে লাগল এবং পরিবারটির সদস্যদের তা খাওয়ানো হল। এক রুম থেকে অন্য রুমে যাওয়ার সময় সারাটা ঘরে এভাবে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রের সাথে সাথে ঐ পৰিত্ৰ জল ছিটানো হল। এদিকে ভক্তরা মহামন্ত্রের কাছে প্রার্থনাও করতে লাগল, “হে পরমেশ্বর ভগবান, আপনার শক্তি দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করুন, কৃপা করুন এ পরিবার তথা ঐ অধঃপতিত আত্মার প্রতি। হে প্রভু, কৃপা করুন, এভাবে যখন ভগবানের প্রতি প্রার্থনা নিবেদন, কীর্তন এবং বিপদ ভঞ্জনাকারী নৃসিংহ শালগ্রামের চরণামৃত ব্যবহার করা হল তখন কিছুক্ষণ পর সেই ভয়ংকর মুহূর্তের অবসান ঘটিয়ে সব কিছু কেমন জানি স্বাভাবিক হয়ে গেল। মনে হল এই অন্ধকারেও দিনের আলো উদ্ভাসিত হল। দীর্ঘ যাতনা থেকে মুক্ত হয়ে ঐ দম্পতির নয় বছরের মধ্যেই এই প্রথম কোন সন্ধ্যায় এতটা নিরাপদ এরপর ভক্তরা খুবই উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে এবং পরিনাম প্রতি কৃতজ্ঞ তারপর আরো কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করে শ্রীমৎ ভাগবত গীতা প্রথম অধ্যায় আলোচনা করেন এরপর থেকে রোমের সেই গৃহে আর কোন সন্ধ্যায় ভূতের ভয় কাটাতে হয় নি  বৈদিক শাস্ত্রে বলা হয়েছে হরে কৃষ্ণ মহমন্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে সমস্ত নেতিবাচক পরিস্থিতির দূরীভূত করতে সক্ষম যার প্বরমাণ ভূত বনাম হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র লড়াইয়ে অবশেষে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ বা প্রেতাত্মার সম্পর্কে বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণার ফলাফল ও বৈদিক শাস্ত্রে নিয়ম বিষয়ে সত্যতা সহ নানা প্রমাণাদি নিয়ে প্রতিবেদন ভবিষ্যতে তুলে ধরা হবে যাতে বিষয়টি নিয়ে কোনো সন্দেহ বা অবিশ্বাস’ না থাকে চোখ রাখুন চৈতন্য সন্দেশ সামনে সংখ্যাগুলোর হরে কৃষ্ণ

চৈতন্য সন্দেশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন :https://play.google.com/store/apps/details?id=com.differentcoder.csbtg


 

Hare Krishna Thanks For Reading

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।