জিবিসি কার্যনির্বাহী পর্ষদ কর্তৃক প্রেরিত শ্রীল ভক্তিচারু স্বামী মহারাজের অপ্রকট পরবর্তী দিকনির্দেশনা।

প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২০ | ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৬ জুলাই ২০২০ | ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 518 বার দেখা হয়েছে

জিবিসি কার্যনির্বাহী পর্ষদ কর্তৃক প্রেরিত শ্রীল ভক্তিচারু স্বামী মহারাজের অপ্রকট পরবর্তী দিকনির্দেশনা।

৫ই জুলাই, ২০২০ – ভারতীয় সময় বেলা ১টা।

প্রিয় ভক্তবৃন্দ,
আমাদের বিনম্র প্রণতি গ্রহণ করুন। শ্রীল প্রভুপাদের জয়!

যদিও শ্রীল ভক্তিচারু স্বামী মহারাজের অপ্রকটের কারণে আমরা যে বর্ণনাতীত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি, সেটি সহ্য করার চেষ্টা করছি, তবুও আমরা আপনাদের সেই মহিমান্বিত অপ্রকটের প্রাসঙ্গিক বিবরণ এবং এর পর আমাদের করণীয় সম্পর্কে জানাতে চাই।

শ্রীগুরু পূর্ণিমার মহিমান্বিত দিন, পূণ্যময় শ্রাবণ মাস এবং চাতুর্মাস্যের প্রথম দিন এবং শ্রীল সনাতন গোস্বামীর অপ্রাকৃত তিরোভাব তিথি, ৪ঠা জুলাই সকাল প্রায় ৮.৩০ মিনিটে (যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলের সময় অনুসারে) আমাদের প্রিয়তম শ্রীল ভক্তিচারু মহারাজ তাঁর অপ্রাকৃত গুরুদেব, শ্রীল প্রভুপাদের চরণকমলে প্রস্থান করেছেন।

মহারাজের অপ্রকটের পরপরই একজন ভক্ত এসে কীর্তন করেছেন, মহারাজকে পবিত্র দ্রব্যাদি নিবেদন করেছেন এবং প্রার্থনা যথা ব্রহ্মসংহিতা এবং গজেন্দ্রমোক্ষ শ্লোকসমষ্টি পাঠ করেছেন। তাঁর বর্ণনায়, মহারাজের দেহ ছিল জড়াতীত এবং জ্যোতির্ময়। তাঁর বুকের উপরে শ্রীমদ্ভগবদগীতা রাখা ছিল এবং দক্ষিণ কর্ণের সামনে শ্রীল প্রভুপাদের কীর্তন ধ্বনিত হচ্ছিল। তিনি তুলসীপত্র, গঙ্গাজল এবং শ্রীধাম মায়াপুরের শ্রীনৃসিংহদেবের পবিত্র প্রসাদী তৈল দ্বারা বিভূষিত হয়েছেন। এসকল দ্রব্যাদি পূর্বেই সেই মুহূর্তের প্রস্তুতি রূপে মহারাজের কক্ষে রক্ষিত ছিল।

মহারাজের শেষ কৃত্য আগামী রবিবার সকালে (যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলের সময়ানুযায়ী) স্থানীয় এক সৎকার আলয়ে সম্পাদিত হবে। এখানে কেবল বিশেষ অনুরোধেই সৎকার করা হয়। মহারাজের দেহ স্নান, বস্ত্র পরিধান এবং তিলকাদি পুণ্যবস্তু দ্বারা অলংকরণ শেষে আরতি নিবেদন করা হবে।

কোভিড-১৯ এর কঠোর নিয়মাবলির কারণে এই অনুষ্ঠানটি জনসমাগমে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য উন্মুক্ত নয়। যারা মহারাজকে অত্যন্ত ভালোবাসেন, সেই সমস্ত ভক্তদের জন্য শেষ দর্শনের সুযোগ করে দিতে আমরা সংক্ষিপ্ত পরিসরে একটি সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করছি। এই ব্যাপারে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রস্তুত হওয়ার সাথে সাথেই জানিয়ে দেওয়া হবে।

মহারাজের পরমপ্রিয় শ্রীধাম মায়াপুরের উদ্দেশ্যে তাঁর শেষযাত্রার প্রস্তুতিরূপে মহারাজের দেহ এরপর একটি বিশেষ আধারে সুরক্ষিত করা হবে এবং সেখানে মায়াপুরে তিনি শ্রীল প্রভুপাদের পুষ্পসমাধির এবং তাঁর প্রিয় গুরুভ্রাতাদের সমাধির কাছে সমাধিস্থ হবেন।

স্বল্পসংখ্যক বিমানের প্রাপ্যতা এবং সংযোজিত সরকারি নিয়মকানুনের জন্য মহারাজের মায়াপুরে পোঁছাতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। সেখানকার ভক্তেরা ইতিমধ্যেই তাদের প্রিয় ভক্তিচারু মহারাজকে বরণ করতে অপূর্ব আয়োজন করছেন। পাশাপাশি উজ্জয়নীর ভক্তেরা সেখানে একটি পুষ্পসমাধি নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই উভয় অনুষ্ঠানই কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে কিছুমাত্রায় সীমিত পরিসরে হবে। এই ব্যাপারে আরও বিস্তারিত নির্দেশনা প্রস্তত হওয়ার সাথে সাথে জানিয়ে দেওয়া হবে।

এখন এইসময়ে আমরা সকলে তিনদিন যাবৎ মহারাজের গুণমহিমা কীর্তন করতে পারি। মহারাজের তিরোধানের পর তৃতীয় দিনে (সোমবার ৬ই জুলাই) মহারাজের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আমরা আঞ্চলিক সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নিয়মকানুনের সীমা বজায় রেখে স্মৃতিসভা করতে পারি। যদি এটি আরও বেশি উপযুক্ত হয়, অনুষ্ঠানটি মঙ্গলবার, ৭ই জুলাই অনুষ্ঠিত হতে পারে।

মন্দিরে শ্রীল প্রভুপাদের পাদপদ্মে মহারাজের চিত্রপট রেখে আমাদের তাঁকে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করা উচিত, মহারাজের মহিমাকীর্তন, কীর্তন, আরতি এবং অবশেষে একটি মহাভোজের ব্যবস্থা করা উচিত।

যদিও এটি বিরহের সময়, আমাদের শ্রীল ভক্তিচারু মহারাজের মহিমান্বিত জীবন ও তিরোধান সম্বন্ধে জেনে আশ্বস্ত হওয়া উচিত। যে ব্যক্তির জীবন ভগবানের সেবায় উৎসর্গীকৃত হয়েছে, তাঁর তিরোধান ও পরবর্তী গন্তব্য নিশ্চিতভাবে পরম মঙ্গলময় এবং শ্রদ্ধাযোগ্য।

ভক্তিচারু স্বামীর অন্যতম প্রিয় একটি শ্লোকে কৃষ্ণ এটি নিশ্চিত করেছেন:

“হে অর্জুন! যিনি আমার এই প্রকার দিব্য জন্ম ও কর্ম যথাযথভাবে জানেন, তাঁকে আর দেহত্যাগ করার পর পুনরায় জন্মগ্রহণ করতে হয় না, তিনি আমার নিত্য ধাম লাভ করেন।”

[ভগবদগীতা ৪.৯]

শ্রীল ভক্তিচারু স্বামীর জয়!
শ্রীল প্রভুপাদের জয়!

আপনাদের সেবক,

রামাই স্বামী
ভক্তি চৈতন্য স্বামী
ভানু স্বামী,
জিবিসি কার্যনির্বাহী পর্ষদ।

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।