কি যাদু সেই বাঁশির সুরে !

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২২ | ৫:১২ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২২ | ৫:১২ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 138 বার দেখা হয়েছে

কি যাদু সেই বাঁশির সুরে !
শ্রীকৃষ্ণের বাঁশীর মূর্ছনাতে বৃক্ষলতা অংকুরিত হয়, বৃক্ষলতাতে পাতাফুল ফল বিকশিত হয়। আকাশে মেঘের সঞ্চার হয়। নদনদী প্রবাহিত হয়। স্রোতশীলা নদী স্তব্ধ হয়। বাঁশীর ধ্বনিতে আকৃষ্ট হয়ে ব্রহ্মা-শিবের ধ্যান ভঙ্গ হয়। বংশীধ্বনি থেকে ব্রহ্মা বেদমন্ত্র লাভ করেন। ভগবানের বেণুমাধুরীতে ধরিত্রী পুলকিতা হন। বাঁশী শুনেই গাভীরা কৃষ্ণের কাছে এসে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে দূর দূরান্তে ঘাস খেতে খেতে গাভীরা যখন কৃষ্ণ তাদের দৃষ্টির আড়ালে চলে গেছেন বলে অনুভব করে, তখন তাঁরা বাঁশী শুনার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। বাঁশীর রব উঠলেই পাখীরা গাছে গাছে তাদের নিজেদের কলরব বন্ধ করে দিয়ে মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকে। মাধবের বাঁশীর প্রতি কে না আকৃষ্ট হয় ?
শ্রীকৃষ্ণের বাঁশী বহু রকমেরঃ
১। বেণু : ছয় ইঞ্চি দীর্ঘ।
অঙ্গুষ্ঠের মতো মোটা। ছয়টি ছিদ্র থাকে। বেণুর নাম ‘মদনঝকৃতি’। সথাদের এটি খুব প্রিয়।
২। মুরলী : দুহাত বা আঠারো ইঞ্চি লম্বা। এক প্রান্তে একটি মুখরন্ধ্র আছে এবং গায়ে চারটি স্বরছিদ্র আছে। মনোহর নাদ উৎপন্ন হয়। এতে উত্থিত গৌড়ী ও গুজরী এই দুটি রাগ কৃষ্ণের অতি প্রিয়। মুরলীর নাম ‘সরলা’। মুরলী ধ্বনি রাধারানীর অতি প্রিয়।

৩। বংশী : বংশীর অর্ধআঙ্গুল অন্তর আটটি স্বরছিদ্র। দেড় আঙ্গুল ব্যবধানে একটি মুখরন্ধ্র। মাথার দিকে চার আঙ্গুল ও পুচ্ছের দিকে তিন আঙ্গুল মোট নয়টি ছিদ্রযুক্ত। সতেরো আঙ্গুল পরিমাণ লম্বা। বাঁশের তৈরি। বংশীর নাম ‘ভুবনমোহিনী’। ৪। মহানন্দা : বংশীর মুখছিদ্র থেকে স্বরছিদ্রের মাঝের ব্যবধান দেড় আঙ্গুল না হয়ে দশ আঙ্গুল পরিমাণ থাকে, সেই বংশীকে ‘মহানন্দা’ বা ‘সম্মোহিনী’ বলে। এটি মণিমাণিক্য দিয়ে খচিত। মহানন্দার ধ্বনি রাধারাণীর চিত্ত হরণ করে।

৫। আকর্ষণী : বংশীর মুখছিদ্র থেকে স্বরছিদ্রের মাঝের ব্যবধানটি বারো আঙ্গুল পরিমাণ হলে সেই বংশীকে ‘আকর্ষণী বলে। এটি সোনার তৈরি ।

। আনন্দিনী : বংশীর মুখছিদ্র থেকে স্বরছিদ্রের মাঝের ব্যবধান চৌদ্দ আঙ্গুল পরিমিত হলে সেই বংশীকে ‘আনন্দিনী’ বলা হয়। একে ‘বংগুলী’ ও বলে। বাঁশের তৈরি। এর ধ্বনি গোপবালকদের অত্যন্ত প্রিয়। রূপ গোস্বামী বর্ণনা করেছেন, শ্রীকৃষ্ণ যখন অধরে বাঁশী তুলে বাজাতে থাকেন, তখন বাঁশী শ্রীকৃষ্ণের দন্তকান্তিতে স্ফটিকের মতো রূপ প্রাপ্ত হয়, শ্রীকৃষ্ণের রক্তবর্ণ হাতের সংস্পর্শে বাঁশী পদ্মরাগমণির মতো শোভা লাভ করে, শ্রীকৃষ্ণের নীলকমলের মতো গুগণ্ডপ্রান্তে লগ্ন হয়ে বাঁশী ইন্দ্রনীল মণির মতো কান্তি বিস্তার করে। এভাবে কৃষ্ণবংশী তিন রকমের রত্নের ভ্রম জন্মায়। বৃন্দাদেবীর উক্তি ‘সমস্ত জগতের সঙ্গীত পদ্ধতির প্রথম আবাসস্থল হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের বাঁশী।’ হরেকৃষ্ণ!


 চৈতন্য সন্দেশ আগস্ট -২০০৮ প্রকাশিত
সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।