শ্রীমতি রাধারাণী-সমগ্র বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের মাতা

প্রকাশ: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১:১১ অপরাহ্ণ আপডেট: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১:১৫ অপরাহ্ণ

এই পোস্টটি 250 বার দেখা হয়েছে

শ্রীমতি রাধারাণী-সমগ্র বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের মাতা

প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশে ভাদ্র মাসের এক অর্ধচন্দ্র রজনীতে রাজা বৃষভানু যমুনা নদীতে স্নান সমাপন করতে নামেন। তিনি যমুনা নদীতে দেখলেন একটি পদ্মপাতা হতে সোনালী (স্বর্ণময়) দিব্য জ্যোতি বের হয়ে চতুর্দিক গ্রাস করছে এবং ঐ পদ্মের চক্রাকার বলয়ের মধ্যখানে একজন শিশু বালিকা দাঁড়ানো অবস্থায় আছে।
যখন রাজা শিশুটিকে সাথে নিয়ে রাজপ্রাসাদে ফিরলেন তখন রাণী কীর্তিদা খুবই আনন্দিত হলেন। কিন্তু তিনি সেইসাথে মর্মাহত হলেন যখন দেখলেন শিশু সন্তানটি ছিল অন্ধ ৷
যখন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মাতা যশোদা তার প্রিয় সখী কীতির্দার শিশু সন্তানের কথা শুনলেন, তৎক্ষণাৎ তিনি তার স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে কীতির্দার রাজপ্রাসাদে এলেন। তখন কৃষ্ণ হামাগুড়ি দিয়ে শিশুটির দোলনার নিকটে গেলেন, দাঁড়ালেন এবং ভেতরে তাকালেন। ঠিক সেই মুহূর্তে শিশুটির চক্ষু স্পন্দিত হল এবং পদ্মফুলের ন্যায় তার চোখের পাতা প্রস্ফুটিত হল। এ ঘটনায় সকলেই খুশি হলেন। এই শিশুটিই হলেন শ্রীমতি  রাধারাণী।
শ্রীমতি রাধারাণী এই বিশ্বচরাচরের মাতা। তিনি সকল জীবাত্মার আধ্যাত্মিক মাতা, ‘মাতা’ শব্দটি পরম পবিত্রতার প্রতীক। এই শব্দটি পবিত্রতা, আত্মভিমানশূন্যতা, যত্নশালিনী, আশ্রয় প্রদানকারিনী, প্রতিপালনকারিনী এবং প্রেমভক্তি প্রদায়িনী অর্থে ব্যবহৃত হয়।
যখন আমরা পবিত্র নাম কীর্তন করিঃ

হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ, হরে হরে
হরে রাম, হরে রাম, রাম রাম, হরে হরে।

হরে মানে রাধারাণী। এই মহামন্ত্রের মাধ্যমে আমরা মাতার নিকট গভীর উন্মত্তে, আবেগে, আকুতিতে কান্না ব্যক্ত করে বলি- হে রাধারাণী!  দয়া করে আমাদেরকে দুঃস্বপ্নরূপ এই ভয়ানক জীবন হতে উদ্ধার করুন। আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিন আমাদের পরম পিতা সম্পর্কে যাকে আমরা ভুলে গিয়েছি এবং আমাদেরকে আপনার ধামে আপনাদের প্রেমময়ী সেবায় নিযুক্ত করুন।
কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তিমূলক সেবার অংশ হিসেবে ভক্তরা সতর্কতার সাথে শ্রীমতি রাধারাণীর আরাধনা করেন। হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রে পূর্ণ মনোযোগের সহিত তার নাম জপ, তার শ্রী বিগ্রহের অর্চনের মাধ্যমে এবং তার নির্দেশাবলী অনুসরণ করার মাধ্যমে আমরা ভগবদ্ ধাম লাভ করতে পারি।

চৈতন্য চরিতামৃত-
“হে কল্যাণি রাধারাণী! তোমার দেহ, সমস্ত সৌন্দর্যের উৎস। তোমার রক্তিম অধর অমৃতের মাধুর্য থেকে ও মধুর, তোমার শ্রীমুখে পদ্মের সৌরভ, তোমার মধুর বচন কোকিলের কূজনকেও হার মানায় এবং তোমার অঙ্গ চন্দনের থেকেও সুশীতল। এই রকম রূপ-গুণ সমন্বিত লীলাময়ী তোমাকে লাভ করে, আমার ইন্দ্রিয়সমূহ পুনঃ পুনঃ  মহানন্দে মগ্ন হচ্ছে।”

রাধানন্দ দাস


মাসিক চৈতন্য সন্দেশ জানুয়ারি ২০০৮ সালে প্রকাশিত

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।