বিজ্ঞানীরা কোন জাগতিক সৃষ্টির প্রথম স্রষ্টা নন (১ম পর্ব)

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২২ | ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২২ | ১২:০১ অপরাহ্ণ

এই পোস্টটি 141 বার দেখা হয়েছে

বিজ্ঞানীরা কোন জাগতিক সৃষ্টির প্রথম স্রষ্টা নন (১ম পর্ব)

পারমাণবিক বিশ্লেষণ হতে আমরা দেখতে পায় যে, অসংখ্য পরমাণুর সমষ্ঠিতে এই জড় জগতটি গঠিত হয়েছে। এই জড় জগত ঘড়ির কাঁটার দিকে দুর্বোধ্য গতিতে প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছে। বিজ্ঞানীরা কিছু মহাকাশ যান তৈরি করেছে কিন্তু তারা কি ভেবে দেখেছে যে, পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বহু পূর্বেই এর চেয়েও অতি উন্নত মডেলের মহাকাশ যান তৈরি করে রেখেছেন। যেমন- মহাকাশে স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে ভাসমান কোটি কোটি গ্রহ-নক্ষত্র ও তারকাপুঞ্জ। আমরা যদি স্থিরভাবে এবং পূর্ণ সতর্কতার সাথে এই সকল বিস্ময় জাগানো গ্রহ-নক্ষত্রগুলোর সম্পর্কে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করি তাহলে আমরা উপলব্ধি করতে পারব অবশ্যই একজন সর্বোচ্চ বুদ্ধিমত্তার অধিকারীর অধিনে এইগুলো বিজ্ঞানীরা কোন জাগতিক সৃষ্টির প্রথম স্রষ্টা নন পরিচালিত হয়েছে। শ্রীকৃষ্ণের সুনিয়ন্ত্রিত নির্দেশে এই প্রকৃতি সুসজ্জিত। এইটি একটি সাধারণ জ্ঞান যে, প্রত্যেকটি কর্মের পিছনে একজন কর্তা রয়েছেন। যেমন- একজন অপারেটর ছাড়া একটি মেশিন নিজে নিজে চলতে পারে না। আধুনিক বিজ্ঞানীরা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র উদ্ভাবন করতে পেরে নিজেদেরকে খুব গর্বিত বলে মনে করে, কিন্তু স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটি তৈরির জন্য যে বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন তা এলো কোথা থেকে। এমন কি বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনষ্টাইনও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, সকল জাগতিক সৃষ্টির নিয়ম-নীতি সমূহ একজন পরম নিয়ন্তার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।” যখন আমরা বুদ্ধিমত্তা ও অপারেটর নিয়ে আলোচনা করি তখন স্বাভাবিকভাবে একজন ব্যক্তিকেই নির্দেশ করা হয়। ইহা কখনই অব্যক্তিক হতে পারে না। যে কেউ প্রশ্ন করতে পারে কে এই ব্যক্তি? তিনি হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যার নির্দেশে সমগ্র বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে, যা তিনি আজ হতে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে শ্রীমগবতগীতায় প্রতিপন্ন করেছেন।

প্রকৃতিং স্বামবষ্টত্য বিসৃজামি পুনঃ পুনঃ।
ভূতপ্রামমিমং কৃসমবশং প্রকৃতেশাৎ ॥

অর্থাৎ, এই জগৎ আমারই (ভগবান শ্রী কৃষ্ণ) প্রকৃতির অধীন, তারা প্রকৃতির বশে অবশ হয়ে আমার দ্বারা পুনঃ পুনঃ সৃষ্ট হয় এবং আমারই ইচ্ছায় অন্তকালে বিনষ্ট হয়। (গীতা ৯/৮) এখন আমরা সৃষ্টির কয়েকটি দৃষ্টান্তের আলোকে প্রতিপন্ন করব যে, প্রত্যেকেরই এই উন্নত ধারণাটি থাকা উচিত যে, শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎস তথা পরম বৈজ্ঞানিক (Supreme Scientist), কেননা এই জাগতিক সৃষ্টির প্রতি পরতে পরতে রয়েছে তাঁর সুনিয়ন্ত্রিত পরিকল্পনা। যেমন- সূর্যকে আমরা সব চেয়ে নিকটস্থ নক্ষত্র হিসাবে প্রতিদিন দেখতে পায় যার ব্যসার্ধ একশটি পৃথিবীর পরিধির সমান এবং যেটি পৃথিবী হতে ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মাইল দূরে অবস্থিত। এই দূরত্বে থেকে সূর্য পৃথিবীর উদ্দেশ্য একটি সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট তাপশক্তি ও আলো বিকিরণ করে। সূর্যের মোট বিকিরিত শক্তির অতিক্ষুদ্র পরিমাণ পৃথিবীতে এসে পৌঁছে। হিসেব করে দেখা গেছে যে, সূর্যে উৎপাদিত (1.00 X 1e19) ভাগের মাত্র পাঁচ ভাগ শক্তি পৃথিবীতে এসে পৌঁছে যা পৃথিবীর সমস্ত কলকারখানা ও অন্যান্য উৎস হতে উৎপাদিত শক্তির চেয়ে এক লক্ষগুণ বেশি। এছাড়া সূর্যে উৎপাদিত এক সেকেন্ড শক্তি দিয়ে এক কিলোওয়াটের একটি অগ্নি চুল্লী প্রায় (1.00 x 1e16) বছর জ্বলতে পারবে। আবার অন্য দিকে সূর্যে উৎপাদিত এক সেকেন্ডের শক্তি মানব সভ্যতার আদি ইতিহাস যতটুকু বিস্তৃত তা হতে আজ পর্যন্ত মানুষ অত শক্তি খরচ করতে পারে নি। উক্তিটি বিজ্ঞানী ফ্রেড হোলের। আমরা জানি, সূর্য হচ্ছে অগণিত নক্ষত্রগুলোর মধ্যে একটি এবং সূর্যে উৎপাদিত শক্তি অন্যান্য নক্ষত্রে উৎপাদিত শক্তির তুলনায় অতি নগণ্য। জাগতিক বিজ্ঞানীরা তাদের বুদ্ধিমত্তার দ্বারা প্রকৃতির বিভিন্ন উৎস হতে তাপ বিদ্যুৎ এবং পারমাণবিক শক্তির সাহায্যে অতি নগণ্য পরিমাণ তাপ, আলো এবং শক্তির যোগান দিয়ে নিজেদের গর্বিত মনে করছে যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। শুধুমাত্র একটি নক্ষত্র হতে প্রতিনিয়ত অফুরন্ত শক্তি উৎপাদন করছেন এবং সেইসাথে প্রতিটি গ্রহে পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তির যোগান দিচ্ছেন। ভগবদ্‌গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন

যদাদিত্যগতং তেজো জগদ্ ভাসতেহখিলম্‌ ।
যচন্দ্রমসি যজ্ঞাগ্নৌ তত্ত্বেচ্ছো বিন্ধি মামকম্‌ ।।

অনুবাদ-সূর্যের যে জ্যোতি সমগ্ৰ জগতকে উাসিত করে, তা আমারই তো। এবং চন্দ্র ও অগ্নির যে জ্যোতি তাও আমরই। (গীতা-১৫/১২) আমরা জানি, সূর্য হচ্ছে অগনিত নক্ষত্রগুলোর মধ্যে একটি এবং আমরা জানি যে, গ্রহসমূহ একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে একইভাবে একটি পরমাণুতেও ইলেকট্রনসমূহ নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এসমস্ত পারমাণবিক বিশ্লেষণ হতে আমরা বুঝতে পারি অসংখ্য পরমাণুর সমন্বয়ে এ জগত সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বিজ্ঞানীরা বহু সাধনার পর কিছু আকাশযান তৈরি করেছে কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ এই রকম মহাকাশচারী এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রহ নক্ষত্র বহু পূর্বেই তৈরি করে রেখেছেন ৷

গামাবিশ্য চ ভূতানি ধারয়াম্যহমোেজস ।
পুষ্ণামি চৌষধীঃ সর্বাঃ সোমো ভূত্বা রসাত্মকঃ ॥

অনুবাদ- প্রতিটি গ্রহে প্রবিষ্ট হয়ে আমি আমার শক্তির দ্বারা চরাচর সমস্ত প্রাণীদের ধারণ করি এবং রসাত্মক চন্দ্ররূপে ধান, যব আদি ওষধি পুষ্ট করি।-(গীতা-১৫/১৩) এই সকল নিয়ম উন্নত বুদ্ধিমত্তার দ্বারা র প্রতিষ্ঠিত যা কখনও ভুল হতে পারে না। যেমন- আমরা কখনও সূর্যকে পশ্চিমে উদিত কিংবা পূর্বে অস্ত যেতে দেখি না।  নিয়মতান্ত্রিকভাবেই প্রতিবছর ঋতুগুলো সে আবর্তিত হচ্ছে। …… হরেকৃষ্ণ!

বিজ্ঞানীরা কোন জাগতিক সৃষ্টির প্রথম স্রষ্টা নন (শেষ পর্ব)

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।