নব গ্রহের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে শ্রীশ্রী ভগবান নৃসিংহদেবের বিশেষ নয়টি নাম

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২১ | ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৩ মে ২০২১ | ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 867 বার দেখা হয়েছে

নব গ্রহের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে শ্রীশ্রী ভগবান নৃসিংহদেবের বিশেষ নয়টি নাম

নব গ্রহের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে শ্রী শ্রী ভগবান নৃসিংহদেবের বিশেষ নয়টি নাম প্রতিদিন জপ করুন। নিম্নে ভগবান শ্রী শ্রী নৃসিংহদেবের বিশেষ নয়টি নামের বিবরণ করা হলো।

(১): শ্রীশ্রী জ্বালা নৃসিংহ দেব-– ভগবান এই রূপ ধারণ করা মাত্রই তার কেশরের স্পর্শে বহু অসুর ধ্বংস হয়েছিল এবং ভগবান নৃসিংহদেবের চোখ দুটি ছিল স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল।

যেহেতু, সবকিছু জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন তাই ভগবানের এই বিগ্রহের নাম শ্রী জ্বালা নৃসিংহদেব। ভগবানের এই বিগ্রহের নাম স্মরণ করার ফলে মঙ্গল গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

(২): আহোবিলা নৃসিংহদেব–আহো মানে আশ্চর্য এবং বিলা মানে গুহা। একবার শ্রী গরুর দেব ও শ্রী প্রহলাদ মহারাজ একটি গুহার মধ্যে তপস্যা করছিলেন। ভগবান নৃসিংহদেব সেই গুহার মধ্যে সেই রূপে প্রকট হলেন যে রূপে হিরণ্যকশিপু কে বধ করেছিলেন। তাই ভগবানের এই বিগ্রহকে শ্রী শ্রী আহোবিলা নৃসিংহদেব বলা হয়।

শ্রী শ্রী আহো বিলা নৃসিংহ দেবের নাম স্মরণ করলে বৃহস্পতি গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

(৩): শ্রী শ্রী নৃসিংহদেব- মা মানে শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দেবী এবং লোলা মানে প্রিয়া। শ্রী প্রহলাদ মহারাজ কে কৃপা করার পর শ্রী শ্রী নৃসিংহ দেব মাতা শ্রী লক্ষী দেবী কে তার কোলে বসিয়েছিলেন। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের ভাষায় ভগবান নৃসিংহদেবের এই রূপ কে শ্রী শ্রী মলোলা নৃসিংহদেব বলা হয়।

শ্রীশ্রী মালোলা নৃসিংহদেবের নাম স্মরণ করার ফলে শুক্র গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

(৪).শ্রী বরাহ নৃসিংহদেব – এই রূপধারণ করে দাঁতের উপর ধরনি দেবীকে তিনি ধারণ করে আছেন। শ্রী বরাহ নৃসিংহদেবের নাম স্বরণ করার ফলে রাহু গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

(৫). শ্রী করঞ্জ নৃসিংহদেব- করঞ্জ বৃক্ষের তলায় আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে তার এই রূপের নাম করঞ্জ নৃসিংহদেব। ভক্তশ্রেষ্ঠ হনুমানের তপস্যায় এই নৃসিংহদেব আবির্ভূত হয়েছিলেন তাই কেউ কেউ শ্রী  রাঘব নৃসিংহদেব বলেও স্বরণ করেন। শ্রী করঞ্জ  নৃসিংহদেবের নাম উচ্চারণের ফলে চন্দ্র গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

(৬). শ্রী ভার্গব নৃসিংহদেব – ভগবানের অংশ অবতার পরশুরাম ভগবান নৃসিংহদেবপর তপস্যা করেছিলেন।  ভগবান নৃসিংহদেব সন্তুষ্ট হয়ে যে রুপে দর্শন দিয়েছিলেন সেই রূপের নাম শ্রী ভার্গব নৃসিংহদেব।  এই ভার্গব নৃসিংহদেবের নাম স্বরণ করার ফলে রবি গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

(৭). শ্রী যোগানন্দ নৃসিংহদেব- ভগবান নৃসিংহদেব এই রূপে প্রকট হয়ে ভক্ত প্রহলাদ মহারাজকে রাজনীতি ও যোগ সম্মন্ধে শিক্ষা প্রদান করেছিলেন। এই বিগ্রহ খুবই শান্ত ও হাস্য মুখমণ্ডল এবং খুবই কৃপালু। যোগানন্দ নৃসিংহদেবের নাম স্বরণ করার ফলে শনি গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

(৮). শ্রী ছত্রবটা নৃসিংহদেব – নৃসিংহদেব একবার পিপিল বৃক্ষের নিচে বসেছিলেন এবং সেখান থেকে আহা ও উহু নামের দুই গন্ধর্ব গান গাইতে গাইতে যাচ্ছিলেন। তখন ভগবান নৃসিংহদেব তাদের ডেকে বললেন তারা যেনো প্রতিদিন গান শুনিয়ে যায়। তাই এই বিগ্রহের উপরের দুই হাতে শঙ্খ, চক্র ও নিচের ডান হাতে অভয় দান করেছিলেন এবং বাম হাত দিয়ে তিনি গানের তাল দিয়েছিলেন।

এই বিগ্রহের নাম স্বরণ করার ফলে কেতু গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

(৯). শ্রী পবন নৃসিংহদেব – নৃসিংহদেবের এই রূপকে স্থানীয় লোকেরা জামাই বলেও সম্মোধন করে থাকেন। কারন একবার প্রসন্ন হয়ে লক্ষিদেবী দুর্দশাগ্রস্ত চঞ্চু কুলে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তখন ভগবান পাবন নৃসিংহদেব রুপে আবির্ভূত হয়ে মাতা লক্ষীদেবীকে বিবাহ করে চঞ্চু কুলের সকল দুঃখ, কষ্ট ও পাপ নষ্ট করে সেখানেই অবস্থান করেন। সকল প্রকার পাপ নষ্ট করে দেন বলে এই বিগ্রহের নাম শ্রী পাবন নৃসিংহদেব। শ্রী পাবন নৃসিংহদেবের নাম স্বরণ করার ফলে বোধ গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

এই হচ্ছে ভগবান নৃসিংহদেবের নয়টি বিশেষ নাম। যা স্বরণ করার ফলে নব গ্রহের দোষ নষ্ট হয়ে যায়।

ভক্তিভরে ভগবান নৃসিংহদেবের নাম স্বরণ এবং স্তব করলে ভক্তি পথের সমস্ত বাধা বিঘ্ন কে আমরা অতিক্রম করতে পারি।

তাহলে আজ থেকেই আপনি এবং আপনার পরিবারের সবাই ভক্তবৎসল ভগবান শ্রী নৃসিংহদেবের স্তব ও এই নয়টি বিশেষ নাম পাঠ করুন, যার থেকে নবগ্রহের প্রকোপ বা দোষ থেকে আপনারা রক্ষাপেতে পারেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।