জন্মাষ্টমীতে মহাপ্রভুর রাখাল বেশ!

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২১ | ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২১ | ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 230 বার দেখা হয়েছে

জন্মাষ্টমীতে মহাপ্রভুর রাখাল বেশ!

শ্রীল নরহরি চক্রবর্তী ঠাকুর কৃত শ্রীশ্রীভক্তিরত্নাকর (১২/৩১৪৮-৩১৬৮) অবলম্বনে

একদিন শ্রীবাসের গৃহে বসে মহাপ্রভু হেসে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বললেন, “আগামীকাল কৃষ্ণের জন্মদিন,” প্রভুর মন বুঝতে পেরে শ্রীবাস ও অন্যরা তৎক্ষনাৎ উপলদ্ধি করলেন যে, আগামীকাল বিশ্বম্বর রাখাল বালকের বেশ ধারণ করে নৃত্য করবেন। পরমানন্দে শ্রীবাস ও অন্যান্য ভক্তরা তখন প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করলেন। সেদিন, শ্রীবাসের গৃহে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চিন্ময় অভিষেক আয়োজনের আনন্দে পূর্ণ হয়ে উঠল, অভিষেকের পর সবাই সমগ্র রাত্রি ধরে সংকীর্তন আনন্দে নিমগ্ন হলেন। রাত্রির শেষ ভাগে প্রভু গৌরচন্দ্র ভাবাবেশে একজন রাখাল বালকের বেশ ধারণ করলেন। যিনি এই বেশ ধারণ করার জন্য দক্ষ সেই নিত্যানন্দ প্রভুও একজন রাখাল বালকের বেশ ধারণ করলেন। গৌরহরিকে এই বেশে দর্শন করে কেউ আর তখন নিজেদের ধরে রাখতে পারলেন না। রামাই, সুন্দরানন্দ, গৌরদাস ও অন্যান্য ভক্তরাও তখন রাখাল বালকের বেশ ধারণ করলেন। তারা সবাই দই ও মাখনে পূর্ণ মাটির পাত্র নিয়ে সেগুলোকে দড়ি দিয়ে বাঁধলেন এবং পরে সেই পাত্রগুলোকে আবার একটি কাঠির সঙ্গে বেঁধে দিলেন। এরপর সেই কাঠিগুলোকে কাঁধে ধারণ করে তারা সবাই শ্রীবাস কক্ষে প্রবেশ করলেন। রাখাল বালকের ভাবে নিমগ্ন হয়ে শ্রীবাস ও অদ্বৈত কংসের চতুর্দিকে দই ও তেঁতুল ছুড়তে লাগলেন। এভাবে নৃত্য, কীর্তন সুর ও রম্যরসের মহানন্দে বিভোর হয়ে শ্রীবাস গৃহ তখন যেন নন্দ মহারাজের গৃহে পরিণত হল। মহাপ্রভুর এই অপ্রাকৃত লীলা নিয়ে নরহরি চক্রবর্তী ঠাকুর এক গীত রচনা করেছিলেন, সেটি নিম্নে প্রদত্ত হল:
গোরা মোর গোকুলের শশী।
কৃষ্ণের জনম আজি কহে হাসি হাসি ॥
সে আবেশে থির হৈতে নারে।
ধরি, গোপবেশ নাচে উল্লাস অন্তরে ॥
নিতাই গোপের বেশ ধরি’।
হাতে লৈয়া লগুড় নাচয়ে ভঙ্গি করি’ ॥
গৌরীদাস রামাই সুন্দর ।
নাচে গোপবেশে কাঁধে ভার মনোহর ॥
শ্রীবাস অদ্বৈত গোপবেশে ।
ছড়ায় হলদী দধি মনে উল্লাসে ॥
কেহ কেহ নানা বাদ্য বায়।
মুকুন্দ মাধব সে জনম-লীলা গায়॥
করে সুমঙ্গল নারীগণ।
শ্রীবাস-আলয় যেন নন্দের ভবন ॥
জয়ধ্বনি করি বারে বারে।
ধায় লোক-ধৈরয় ধরিতে কেউ নারে ॥
কত সাধে দেখে আঁখি ভরি’।

শোভায় ডুবন ভুলে ভণে নরহরি ॥


মাসিক চৈতন্য-সন্দেশ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।