এই পোস্টটি 26 বার দেখা হয়েছে
তর্কের বেতালে তাল খায় শেয়ালে
এক বিশাল তাল গাছ ছিল। তাতে বড় বড় অনেক তাল ফলেছিল। প্রতিদিন একটি করে সুমিষ্ঠ তাল কুড়িয়ে নিয়ে পালায়। একদিন দুইজন লোক সকাল সকাল তালগাছের কাছাকাছি পথ ধরে যাচ্ছিল। সেই সময়ে ধপাস করে এক শব্দ হলো। লোক দুইজনের চোখ তালগাছের দিকে গেল। তাল পড়েছে দেখেই তারা তাল কুড়াবার উদ্দেশ্যে দৌড়াতে লাগলো। দুই জনে একসঙ্গে তাল নিয়ে টানাটানি শুরু করলো। একজন বললো, এটি আমার তাল, কারণ আমিই প্রথমে কুড়িয়েছি। অন্যজন বললো, না, না আমিই প্রথমে তাল দেখে দৌড়িয়ে এসেছি। অতএব এটি আমারই প্রাপ্য। কিন্তু দুজনই নাছোড়বান্দা। তর্ক ও মারামারি শুরু হলো। একজন তাল নেওয়ার কামনা যদি এড়িয়ে চলতো, তা হলে অন্য জন সেই তাল স্বচ্ছন্দে নিতে পারতো। কিংবা দুজনেই সমান ভাগ করে নেওয়ার চিন্তা করতে পারতো। কিন্তু তাদের তর্ক বিতর্ক ক্রমশ হিংস্র আকার ধারণ করলো। তাই তালটি দূরে ছুঁড়ে ফেলে দুজনে হাতাহাতি করতে লাগলে। তালগাছের অদূরে ছিল শেয়ালের বাসা, শেয়ালের চোখ পড়লো সেই তালটির দিকে। শেয়াল তখন সুমিষ্ঠ তালটিতে দাঁত বসিয়ে কামড়িয়ে ধরে চম্পট দিল। এদিকে বহুক্ষণ হাতাহাতিতে দু’জনেই বিক্ষুদ্ধ ক্লান্ত হয়ে ইতঃস্তত দুই দিকে সরে পড়লো। তারপর তারা কেউ সেই তালটিকে খুঁজেও পেলো না। তাই দুজনেই অত্যন্ত অবাক হয়ে গেল। তাদেরকে সেই অবস্থায় দেখে এক আগন্তুক স্থানীয় লোক প্রশ্ন করলো, আপনারা কি খুঁজছেন? আপনাদের কি কিছু হয়েছে?
হ্যাঁ, হয়েছে বৈ কি! তাদের একজন বলল। এই তালগাছে বেতাল থাকে। বেতাল ভুত আমাদের ঘাড়ে চেপেছিল। তাই সকাল সকাল এখানে এসে শুধু শুধু বহুক্ষণ ধরে হাতাহাতি ও কলহ করার জন্য মেতেছি।
হিতোপদেশর
কলিযুগে তামসিক উগ্র স্বভাবের মানুষ একটুও অন্যের প্রতি সহানুভুতি দেখাতে চায় না। তারা ট্রেনে বাসে বসার জায়গা নিয়ে ঝগড়া করে। ঘরে বাইরে যত্রতত্র অহমিকা ও তর্কের মাধ্যমে একে অন্যকে হঠাতে চেষ্ঠা করে। আবার কিছু তামসিক লোক ছুটে গিয়ে অনর্থক কলহ বাড়িয়ে তোলে। পরিণামে কোন দিনও তারা সুফল পায় না।
হরে কৃষ্ণ ,
মাসিক চৈতন্য সন্দেশ , আগস্ট ২০১০ ইং