লক্ষ্মীপতির ঐশ্বর্যধাম (পর্ব-১)

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১২:১৫ অপরাহ্ণ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২২ | ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 114 বার দেখা হয়েছে

লক্ষ্মীপতির ঐশ্বর্যধাম (পর্ব-১)

পৃথিবীর অন্যতম ঐশ্বর্যশালী তিরুপতি ধামের আবির্ভাব রহস্য!

চন্দনযাত্রা দাস


ভগবান শ্রীব্যেঙ্কটেশ্বর স্বামীর ভূমণ্ডলে স্থান হলো তিরুপতি। যিনি হলেন সমগ্র বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের অধিপতি, তাকে সপ্ত পর্বতের ভগবানও বলা হয় । তিরুপতি হলো এমন একটি পবিত্র স্থান যেখানে ভগবানকে গভীর শ্রদ্ধায় আরাধনা করা হয়। তিরুপতি মন্দির পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা ঐশ্বর্যশালী মন্দির। যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী শ্রীব্যেঙ্কটেশ্বর স্বামীকে দর্শন করতে আসেন। যিনি বালাজী নামেও ব্যাপক পরিচিত। ভগবান বালাজীর এই অসাধারণ মন্দিরটি দক্ষিণ ভারতের তিরুমালার ভেঙ্কটাচল (ভেঙ্কট পর্বত) এর সপ্ত শিখরে অবস্থিত। ভগবানের স্বয়ং অধ্যক্ষতায় শ্রীব্যেঙ্কটাচল পরিচালিত হয় এজন্য তিনি শ্রীব্যেঙ্কটেশ্বর (ভেঙ্কট পর্বতের ভগবান) নামে খ্যাতি লাভ করেছেন।
‘ব্যেঙ’ শব্দের অর্থ ‘পাপ’ এবং ‘কট’ শব্দের অর্থ ‘মুক্তি’। অর্থাৎ শ্রীব্যেঙ্কট শব্দের অর্থ হল সমস্ত পাপ থেকে নিবৃত্তি। ‘শ্রীব্যেঙ্কটেশ্বর’ মানে সেই ভগবান যিনি তাঁর ভক্তের হৃদয় থেকে সমস্ত পাপ দূরীভূত করেন। পাপ হলো পরমেশ্বর ভগবানের সাথে আমাদের প্রেমময়ী সম্পর্কের মধ্যবর্তী প্রবৃত্তি। যখন আমরা পরমেশ্বর ভগবানের মুখোমুখি হই তখন আমাদের প্রার্থনা হওয়া উচিত, “হে ভগবান শ্রীব্যেঙ্কটেশ্বর কৃপাপূর্বক আমার সকল ইন্দ্রিয়তৃপ্তির বাসনা ও অহঙ্কার দূরীভূত করুন এবং আমি যাতে আপনার অহৈতুকী সেবক হতে পারি সেই কৃপা করুন।” ভগবান চিন্ময় জগতের শাশ্বত ঐশ্বর্য প্রদান করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন ।
এই সুপ্রাচীন এবং পবিত্র মন্দিরের কথা ঋকবেদ এবং অষ্টাদশ পুরাণসমূহ যেমন বরাহ পুরাণ, ভবিষ্যৎ পুরাণে উল্লেখিত রয়েছে। এই সমস্ত শাস্ত্রে ভগবান শ্রীব্যেঙ্কটেশ্বর ভগবানকে একজন কৃপালু বর প্রদানকারী হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। ভগবান শ্রীব্যেঙ্কটেশ্বর তিরুমালার প্রধান মন্দিরে একটি বিশেষ প্রাসাদের অভ্যন্তরে অবস্থান করেন। তিনি বালাজী, শ্রীনিবাস ও শ্রীব্যেঙ্কটাচলপতি হিসেবেও খ্যাত।
১৫১০ সনে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তার দক্ষিণ ভারত পরিভ্রমণকালে তিরুপতি মন্দির পরিদর্শন করেন যা শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত মধ্যলীলা (৯/৬৪) শ্লোকে বর্ণিত হয়েছে- “তারপর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তিরুপতি তিরুমল্লে চতুর্ভূজ মূর্তি দর্শন করলেন । সেখান থেকে তিনি ব্যেঙ্কট পর্বতে গেলেন ।”
শ্রীল প্রভুপাদ কর্তৃক তাৎপর্য: শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর ভৌগোলিক ক্রম অনুসারে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভ্রমণ বর্ণনা করেছেন। তিরুপতি মন্দিরকে কখনও কখনও তিরুপটুর বলা হয়। তা উত্তর আকর্জটে চন্দ্রগিরি তালুকের অন্তর্গত প্রসিদ্ধ তীর্থ ব্যেঙ্কটেশ্বরের নামানুসারে ব্যেঙ্কটগিরি পর্বতের ওপর আট মাইল দূরে ‘শ্রী’ ও ‘ভূ’ শক্তিদ্বয় সহ চতুর্ভূজ ‘বালাজী’ বা ব্যেঙ্কটেশ্বর বিষ্ণু-বিগ্রহ আছেন। এই স্থানটিকে ‘ব্যেঙ্কটক্ষেত্র’ বলা হয়। দক্ষিণ ভারতে বহু ঐশ্বর্যমণ্ডিত মন্দির রয়েছে, কিন্তু এই বালাজী মন্দির বিশেষ ঐশ্বর্যপূর্ণ ও সম্পদশালী মন্দির । আশ্বিন মাসে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) এখানে একটি অতি বৃহৎ মেলা হয়। দক্ষিণ রেলওয়ের তিরুপতি নামক স্টেশন আছে। ব্যেঙ্কটাচলের উপত্যকায় “নিম্ন তিরুপতি’ অবস্থিত। সেখানে কয়েকটি মন্দির বর্তমান। এখানে শ্রীগোবিন্দরাজ শ্রীরামচন্দ্রের বিগ্রহ আছেন । ‘তিরুমলু’—সম্ভবত “ঊর্ধ্ব তিরুপতি’র প্রাচীন কালের নাম।
১৯৭৪ সালে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের সরকার ইস্কন প্রতিষ্ঠাতা আচার্য এ.সি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদকে তিরুপতিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভ্রমণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিরুমালাতে অবস্থানকালে ভগবান ব্যেঙ্কটেশ্বরের দর্শন লাভ করে শ্রীল প্রভুপাদ অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলেন। তিরুপতি মন্দিরের দক্ষ পরিচালনা শ্রীল প্রভুপাদকে আকৃষ্ট করেছিল । কিন্তু ভগবানের বাণী প্রচারের মাধ্যমে ভগবানকে সন্তুষ্ট করার জন্য শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর হৃদয়ে বৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। তিনি সেখানকার সরকারের একজনের সাথে কথোপকথনের সময় শ্রীল প্রভুপাদ বলেছিলেন, ‘সরকারের উচিত ভগবদ্‌গীতার শিক্ষা অতি দ্রুত ব্যাপক আকারে সর্বত্র প্রচার করা, আর এটিই হলো সমগ্র বিশ্বে শান্তি এবং পারস্পরিক সৌহার্দ্য রক্ষার একমাত্র পন্থা। যেহেতু সরকারের একটি পরিকাঠামো রয়েছে তাই তাদের উচিত ইস্কন ভক্তদের সহযোগিতা নিয়ে সকলের উপকারের জন্য ব্যাপক আকারে প্রচারে আত্মনিয়োগ করা।’ শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর সকল অনুসারীদের জন্য আরেকটি বিশেষ বার্তা প্রদান করেছেন, বালাজীর মতো আকর্ষণীয় মন্দির তৈরি কর, যেখানে তীর্থযাত্রীদের থাকার অসাধারণ সুবিধাদি থাকবে।’ ভগবান ব্যেঙ্কটেশ্বর স্বামীর কৃপায়, শ্রীল প্রভুপাদের প্রার্থনায়, স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় এবং ভক্তদের অবিশ্রান্ত সেবায় তিরুপতিতে ২০০৭ সালে একটি অসাধারণ হরেকৃষ্ণ মন্দির স্থাপিত হয়েছে। সেখানে শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দজী এবং অষ্টসখী হলেন প্রধান বিগ্রহ। এখানে বিভিন্ন সুবিধাদি রয়েছে যেমন-
১. অতিথি নিবাস ২. বিখ্যাত গোবিন্দাস্ রেস্টুরেন্ট ৩. গিফট সফ্ট ৪. গো-শালা ৫. অডিটোরিয়াম ৬. প্রসাদ হল ও স্টল প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত এই মন্দির পরিদর্শন করে থাকেন ।

তিরুপতির দর্শন

১. ভগবান শ্রীব্যেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দির
২. শ্রীআদি বরাহ স্বামী মন্দির
৩. শ্রীস্বামী পুষ্করিনী (পবিত্র জলাশয়)
৪. শ্রীবরি পদলু (ভগবান ব্যেঙ্কটেশ্বরের শ্রীপাদপদ্ম)
৫. শ্রীবেনুগোপাল স্বামী মন্দির ও হাতিরাম বাবা সমাধি
৬. অক্ষয় গঙ্গা তীর্থ
৭. পাপবিনাশনম তীর্থ
৮. শিলাতোরনম্ (সেতু)

তিরুপতিতে

৯. ইস্‌কন তিরুপতি (শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দির)
১০. শ্রীপদ্মাবতি আম্মাবরি মন্দির (তিরুচানুর)
১১. শ্রীগোবিন্দরাজ স্বামী মন্দির
১২. শ্রী কোদানদরাম স্বামী মন্দির
১৩. শ্রী কল্যাণ ব্যেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দির (শ্রীনিবাস মঙ্গপুরম)
১৪. শ্রী কপিলেশ্বর স্বামী মন্দির

তিরুপতির সন্নিকটবর্তী

১৫. শ্রী কল্যাণ ব্যেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দির (নারায়ণমবনম্)
১৬. শ্রীবেদনারায়ণ স্বামী মন্দির (নাগালাপুরম্)
১৭. শ্রীকাৰ্যমানিক্য স্বামী মন্দির (গজেন্দ্র মো -নগরী)
১৮. শ্রীবেণুগোপাল স্বামী মন্দির (করবেতীনগরম্)
১৯. শ্রীপ্রসন্ন ব্যেঙ্কটেশ্বর মন্দির (অপলয়গুন্টা)
২০. শ্রীকালহস্তি পঞ্চভূত বায়ুক্ষেত্র

তিরুমালা পর্বত এবং শেষাদ্রি পর্বতমালার ইতিহাস

শ্রীমদ্ভাগবতে বর্ণিত আছে যে, সত্যযুগে হিরণাক্ষ্য নামে এক অসুর ছিলেন যার দুষ্কর্মের কারণে পৃথিবী গর্ভোদক সমুদ্রের তলদেশে নিমজ্জিত হয়। সেসময় সকল দেবতাগণ ব্রহ্মার সম্মুখে উপস্থিত হয়ে তারপর তাদের সসমস্যা সবিস্তারে বলা পর ব্রহ্মা ভগবান বিষ্ণুর প্রতি প্রার্থনা জানান। ভগবান বিষ্ণু তখন ব্রহ্মার নাসারন্দ্র থেকে বরাহ রূপে আবির্ভূত হন। শ্রীবরাহদেব হিরণ্যাক্ষকে বধ করেন এবং গর্ভোদক সাগরের তলদেশ থেকে পৃথিবী তথা ভূদেবীকে তাঁর দন্তের সাহায্যে উদ্ধার করেন। ভূদেবী হলেন লক্ষ্মীদেবীর প্রকাশ, তিনি বরাহদেবকে দর্শন করে খুবই আনন্দিত হলেন কেননা বরাহদেবের নিত্যসঙ্গীরূপে ভূদেবী বিরাজমান। বৈকুণ্ঠে ভূ-বরাহ নিত্যকাল অবস্থান করেন। তাই ভূদেবী বরাহদেবকে প্রার্থনা করেন পৃথিবীতে তার সাথে অবস্থান করার জন্য। বরাহদেব তার অভিলাষ পুরনের জন্য গরুড়দেবকে আদেশ দিলেন বৈকুণ্ঠ থেকে ভগবানের প্রিয় পর্বতসমূহ পৃথিবীতে নিয়ে আসতে। গরুড়দেব স্বয়ং যে পর্বতসমূহ পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলেন তা আজ তিরুমালা নামে খ্যাত।
পরমেশ্বর ভগবানের চিন্ময় বিস্তৃতি অনন্তশেষ ভগবানের শয্যা, চপ্পল রূপে ভগবানের সেবা করে থাকেন । সেই অনন্তশেষ পৃথিবীতে তিরুমালায় ৭টি পর্বতরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাই এই সপ্ত পর্বতকে বলা হয় শেষাদ্রি। পরমেশ্বর ভগবান এই পর্বতসমূহে বসবাস করতে আসবেন তা জেনেই ভগবানের সেবার নিমিত্তে অনন্তশেষ ভগবানের লীলায় সহযোগিতা করার জন্য অবস্থান করতে চেয়েছিলেন ।

ভৃগু মুনীর পরীক্ষা

নারদ মুনি একবার মহান ঋষিদের সন্নিকটে আসলেন যারা যজ্ঞ করছিলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা যজ্ঞের ফল সমূহ কাকে নিবেদন করছ? সকল দেব-দেবীর মধ্যে কে সর্বশ্রেষ্ঠ?” কয়েকজন ঋষি ব্রহ্মাকে দেবশ্রেষ্ঠ বলে বর্ণনা করলেন, কেউ বিষ্ণুকে, আর কেউ শিবকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে অভিমত প্রকাশ করলেন। ঋষিদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব শুরু হলো যে কে দেবশ্রেষ্ঠ হতে পারে। অবশেষে সকলে সিদ্ধান্ত নিলেন, ব্ৰহ্মা বিষ্ণু-শিব তিনজন দেবতার মধ্যে তিনিই হবেন শ্রেষ্ঠ যিনি সম্পূর্ণরূপে জড়গুণ থেকে মুক্ত। তারা সকলেই ভৃগুমুনিকে নির্বাচন করলেন তাদের তিনজনের শ্রেষ্ঠত্বের পরীক্ষা নেয়ার জন্য ।
দায়িত্ব গ্রহণের পর মহামুনি ভৃগু সর্বপ্রথম তাঁর পিতৃনিবাস ব্রহ্মলোকে গেলেন। এ কারণেই ভৃগু মুনি ব্রহ্মলোকে গিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাঁর পিতা ব্রহ্মাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দিলেন না। এমনকি তাকে প্রণামও করলেন না এবং তাঁর উদ্দেশ্যে স্তুতিও গাইলেন না। প্রতিটি সন্তান বা শিষ্যের গুরু দায়িত্ব হল যখন সে তার পিতা বা গুরুর নিকট গমন করবে তখন তাকে অবশ্যই তাঁর পিতা বা গুরুকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করতে হবে এবং উপযুক্ত মন্ত্র উচ্চারণ পূর্বক তাঁর স্তবস্তুতি করতে হবে। পুত্রের এইরূপ দৃষ্টতায় ব্রহ্মা ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন। এমনকি ভৃগু মুনিকে অভিশাপ দ্বারা শাস্তিও দিতে চাইলেন । কিন্তু যেহেতু ভৃগু মুনি ব্রহ্মার পুত্র সেহেতু ব্ৰহ্মা তাঁর ক্রোধ সংবরণ করলেন। ব্রহ্মাকে পরীক্ষা করার পর ভৃগুমুনি সরাসরি কৈলাসে চলে গেলেন, যেখানে ভগবান শিব অবস্থান করেন। ভৃগু মুনি প্রভু শিবের ভ্রাতা হন। তাই ভৃগু মুনিকে দেখা মাত্রই শিব আলিঙ্গনের জন্য এগিয়ে এলেন। শিব এগিয়ে আসলেও ভৃগু মুনি আলিঙ্গন করতে অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন, “প্রিয় ভ্রাতা তুমি সর্বদা খুবই অপবিত্র সর্বদা দেহে ভস্ম লেপন কর, সেজন্য তুমি এত বেশি পরিচ্ছন্ন নও। দয়া করে আমাকে স্পর্শ করবে না।” শিবকে অপবিত্র বলে অপমানিত করার পর যখন ভৃগুমুনি তাকে আলিঙ্গন করতে অস্বীকৃতি জানালেন তখন শিব ভয়ানক ক্রুদ্ধ হলেন। শাস্ত্রে বর্ণিত আছে যে শরীর, বচন বা মন দ্বারা অপরাধ সংগঠিত হয়। ভৃগু মুনির প্রথম অপরাধ যেটি ব্রহ্মার প্রতি সংঘঠিত হয়েছিল সেটি ছিল মন দ্বারা সংঘটিত অপরাধ। দ্বিতীয় অপরাধ শিবকে তার অপরিষ্কার স্বভাবের জন্য অপমান ও সমালোচনার মাধ্যমে করা হয়েছিল। এটি বাচিক অপরাধ। যেহেতু শিবের মধ্যে তমোগুণ প্রধান তাই তিনি ভৃগু মুনির কটুক্তিগুলো শোনা মাত্রই তার চোখ ক্রোধে জ্বলে উঠল। প্রচণ্ড ক্রোধে তিনি ত্রিশূল হাতে নিয়ে ভৃগু মুনিকে বধ করতে উদ্যত হলেন। সেসময় প্ৰভু শিবের পত্নী পার্বতী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ শিবের চরণে পতিত হলেন এবং সুমিষ্ট বচনের মাধ্যমে শিবকে সন্তুষ্ট করে তাকে ভৃগু মুনিকে বধ করা থেকে বিরত রাখলেন । শিবের ক্রোধ থেকে রক্ষা পাওয়ার পর ভৃগু মুনি সরাসরি চলে যান শ্বেতদ্বীপে যেখানে ভগবান বিষ্ণু তাঁর পত্নীর সঙ্গে পুষ্প শয্যায় শায়িত ছিলেন। তাঁর পত্নী ছিলেন সৌভাগ্য দেবী লক্ষ্মী যিনি তাঁর পাদপদ্মের সেবা করছিলেন। সেখানে ভৃগু মুনি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভগবান বিষ্ণুকে অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে বিরক্ত করেছিলেন। ভৃগু মুনির তৃতীয় অপরাধটি ছিল অঙ্গভঙ্গির দ্বারা। এই অপরাধসমূহ তুলনামূলকভাবে গুরুতর এবং যখন তা দৈহিকভাবে সংঘটিত হয় তা অপরাধের তীব্রতম স্তর। ভগবান বিষ্ণুর বক্ষস্থলে পদাঘাত করে মহামুনি ভৃগু অমার্জনীয় মহা অপরাধ করেছিলেন। ভগবান বিষ্ণু পরম দয়ালু। তাই তিনি ভৃগু মুনির কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট হলেন না । কারণ ভৃগু মুনি ছিলেন মহা ব্রাহ্মণ। এভাবেই ভগবান বিষ্ণু দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন যে, ব্রাহ্মণ যদি কখনো লঘু অপরাধ করেন তবে তা ক্ষমাযোগ্য। তবুও শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, ঐ ঘটনার পর থেকে ভাগ্যদেবী ব্রাহ্মণদের খুব বেশি অনুকূল নন। যেহেতু লক্ষ্মীদেবী তাদের ওপর থেকে আশীর্বাদ তুলে নেন। সেজন্য ব্রাহ্মণরা সাধারণত দরিদ্র হয়ে থাকে ।
ভগবান বিষ্ণুর বক্ষস্থলে ভৃগু মুনির পদাঘাত মহা অপরাধ। কিন্তু ভগবান বিষ্ণু এতই কৃপালু যে, তিনি এই ভৃগু মুনিকে ক্ষমা করে দিলেন। ভৃগু মুনির ওপর ক্রোধান্বিত হওয়া কিংবা অভিশাপ প্রদানের পরিবর্তে তৎক্ষণাৎ শয্যা থেকে উঠে মুনিকে অভিবাদন জানিয়ে বললেন, “হে প্রিয় ব্রাহ্মণ, আপনি এখানে এসেছেন এটা আমার পরম সৌভাগ্য। অনুগ্রহপূর্বক এই কুশাসনে কিছু সময়ের জন্য উপবেশন করুন। প্রিয় ব্রাহ্মণ আমি দুঃখিত যে আপনি আমার গৃহে প্রবেশ করেছেন, তখন আমি আপনাকে যথাযথ অভ্যর্থনা জানাতে পারিনি, এটা আমার গর্হিত অপরাধ এবং এজন্য আপনার নিকট ক্ষমা চাইছি। আপনি এত পবিত্র এবং মহান যে, আপনার চরণ ধৌত জল তীর্থ সমূহকেও পবিত্র করে। আমি আমার পার্ষদদের নিয়ে যে বৈকুণ্ঠে থাকি সে লোক পবিত্র করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি। হে মহামুনি, আমি জানি আপনার পাদদ্বয় পদ্মফুলের পাপড়ির ন্যায় কোমল এবং আমার বক্ষ বজ্রের ন্যায় কঠিন। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, আমার কঠিন বক্ষে আপনার কোমল চরণ দ্বারা আঘাত করে আপনি হয়তো ব্যাথা পেয়েছেন। দয়া করে আপনার পাদ সেবা করে আপনার ব্যাথা কমানোর কিছু সুযোগ প্রদান করুন। অতঃপর ভগবান বিষ্ণু ভৃগু মুনির পাদসেবা করা শুরু করলেন।


লক্ষ্মীদেবীর অপর নাম ‘চঞ্চলা’ কারণ তিনি একই স্থানে দীর্ঘদিন থাকেন না। এজন্যই আমরা দেখি যে, কখনো একটি বিত্তশালী পরিবার কয়েক প্রজন্ম পর দরিদ্র হয়ে যায়, আবার কখনো একটি দরিদ্র লোকের পরিবার খুব ধনীতে পরিণত হয়। ভাগ্যদেবী লক্ষ্মী এই জড় জগতে চঞ্চল কিন্তু বৈকুণ্ঠলোকে তিনি নিত্য শাশ্বত রূপে ভগবানের শ্রীপাদপদ্মে বিরাজ করেন।

ভগবান বিষ্ণু পুনরায় মহামুনি ভৃগুকে বললেন, “হে প্রভু আপনার পাদপদ্মের স্পর্শে আমার বক্ষস্থল পবিত্র হয়েছে। আমি এখন নিশ্চিত যে ভাগ্যদেবী লক্ষ্মী সেখানে নিত্যকাল সুখে বসবাস করতে পারবে।”
লক্ষ্মীদেবীর অপর নাম ‘চঞ্চলা’ কারণ তিনি একই স্থানে দীর্ঘদিন থাকেন না। এজন্যই আমরা দেখি যে, কখনো একটি বিত্তশালী পরিবার হঠাৎ দরিদ্র হয়ে যায়, আবার কখনো একটি দরিদ্র পরিবার ধনী হয়ে যায়। ভাগ্যদেবী লক্ষ্মী এই জড় জগতে চঞ্চলা কিন্তু বৈকুণ্ঠলোকে তিনি নিত্য শাশ্বত রূপে ভগবানের শ্রীপাদপদ্মে বিরাজ করেন। লক্ষ্মীদেবী চঞ্চল নামে খ্যাত হওয়ার কারণে তিনি নিত্য কাল তাঁর বক্ষস্থলে বিরাজ করছেন না। কিন্তু এখন ভৃগু মুনির চরণ স্পর্শ লাভ করে তার বক্ষ শুদ্ধ হয়েছে। যা হোক, বিষ্ণুর আচরণে মহামুনি ভৃগু বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে ভগবানের মর্যাদা ও তার মর্যাদা পার্থক্য অনুধাবন করলেন।
কৃতজ্ঞতায় মহামুনি ভৃগুর কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে গেল এবং তিনি ভগবানের কথাগুলোর উত্তর দিতে পারলেন না। তার চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগল। তিনি ভগবানের সম্মুখে নিঃশব্দে দাড়িয়ে রইলেন।
সবকিছুই ছিল চিন্ময় কিন্তু লক্ষ্মীদেবী খুবই হতাশ এবং রাগান্বিত হলেন। পতির পতি এরকম অশোভনীয় আচরণের কারণে পত্নী সহ্য করতে পারেন নি। তিনি ভগবান নারায়ণকে বললেন, “আপনি উদার হৃদয়চিত্তে এই ব্যক্তিকে ক্ষমা করলেও যেহেতু আমি স্বচক্ষে দর্শন করলাম যে, এই ব্রাহ্মণ আপনার বক্ষে পদাঘাত করেছে। এই জঘন্য কার্যটি দর্শন করে আমারও অপরাধ হয়েছে। আপনার প্রতি অপরাধ দর্শনে আমার যে পাপ হয়েছে তা থেকে মুক্ত হতে আমাকে কঠোর তপস্যা করতে হবে।

এই লীলা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা

বৈষ্ণব আচার্যরা ব্যাখ্যা করেছেন যদি আমরা ভগবান সম্পর্কে অপরাধমূলক কথা বলি তাহলে আমাদের মহাপাপ হয়। এমনকি যদি আমরা কোন ভক্তের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড শ্রবণ করি কিংবা দর্শন করি তাতেও পাপ হয়। তাই আমাদের অনেক সতর্ক হওয়া জরুরি।

ভৃগুমুনি কি বিষ্ণুর চরণে অপরাধী?

আসলে ভৃগুমুনি কোন অপরাধ করেননি। শ্রীচৈতন্য ভাগবত মতে শ্রীভগবান ভূগুমুনির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সেই কার্য করেছিলেন। কেননা ভগবান চেয়েছিলেন তাঁর পরমেশ্বরত্ব যাতে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয় । আমরা যদি ভৃগুমুনির এই আচরণের কারণে তাকে অপরাধী ভাবি তবে আমাদের অপরাধ হবে দুটি কারণে। প্রথমত তিনি একজন বৈষ্ণব, দ্বিতীয়ত তিনি একটি সেবা সম্পাদন করেছিলেন যার ফলে ভগবানের শ্রেষ্ঠত্ব পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয়।
বৈষ্ণব শাস্ত্রে উল্লেখ আছে যে, ব্রহ্মা এবং শিব
ভৃগুমুনির প্রতি রাগান্বিত হননি বরং তারা রাগান্বিত
হওয়ার অভিনয় করেছেন মাত্র। কেন? কারণ তারা
চেয়েছিলেন তাদের ভক্তগণ এবং জগদ্বাসী যেন
বিষ্ণুকে পরমেশ্বর বলে স্বীকার করে। এভাবে তারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গুণমহিমা সর্বত্র প্রচার করেন ।

লক্ষ্মীদেবী এবং ভগবান বিষ্ণুর মর্ত্যলোকে আবির্ভাব ও লীলাবিলাস

লক্ষ্মীদেবী বৈকুণ্ঠ ত্যাগের পর কোলাপুর নামক এক পবিত্র স্থানে কঠোর তপস্যা শুরু করেন। সেসময় ভগবান বিষ্ণু লক্ষ্মীবিহীন অবস্থায় ভাবছিলেন, “লক্ষ্মীবিহীন এই সুন্দর বৈকুণ্ঠের কি প্রয়োজন, সকল কল্পবৃক্ষ, চিন্ময় জলাশয় ও নদীসমূহ, চতুর্বাহু ভক্তগণ আমাকে লক্ষ্মীদেবী বিহীন কোন আনন্দ প্রদান করতে পারবে না।” তা ভেবে ভগবান বৈকুণ্ঠ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি মর্ত্যলোকে এসে তপস্যা করবেন এবং লক্ষ্মীদেবীর ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করবেন। এরপর ভগবান মর্ত্যলোকে আবির্ভূত হয়ে হাঁটতে হাঁটতে পৃথিবীর অর্ধেক পথ অতিক্রম করে শেষাদ্রী পর্বতে এসে পৌঁছালেন, যেখানে অনন্তশেষ ভক্তি সহকারে ভগবানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
ভগবান সেখানে একটি পিপড়ের পর্বত খুঁজে পেলেন তিনি সেই পর্বতের শিখরের গর্ত দিয়ে প্রবেশ করে সেখানে ধ্যানস্থ হলেন। ভগবান বহুকাল নিরাহারে, কোনো জল পান না করে তপস্যা করলেন। দেবতারা তা দর্শন করে শোকাগ্রস্থ হলেন। ব্রহ্মাজী শিবকে গিয়ে বললেন, “ভগবান বহু কাল যাবৎ অন্ন-জল গ্রহণ করেননি। আমাদের উচিত ভূলোকে গিয়ে তাঁর সেবা করা।”
তারা একটা পরিকল্পনা করলেন। ভগবান ব্রহ্মা একটি গাভী এবং ভগবান শিব একজন ছোট বাছুরের রূপ ধারণ করে লক্ষ্মীদেবীর সমীপবর্তী হলেন। লক্ষ্মীদেবী ভগবানের সেবার জন্য অস্থায়ীভাবে একজন গোপীর ছদ্মবেশ ধারণে রাজী হলেন।
একসময় সেখানকার রাজা সেই রূপবতী গোপীর সম্মুখে গেলে গোপী জানালেন, “আমি এই গাভীটি বিক্রি করতে চাই, আপনি কি ক্রয় করতে ইচ্ছুক?” রাজা জানালেন, “এটির মূল্য কত?” তিনি জানালেন, “এক হাজার স্বর্ণ মুদ্রা” রাজা অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হলেন, “একটি গাভীর জন্য এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা!” পরে রাজা আবার ভাবলেন, “ও! এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা, এই গাভীটি নিশ্চয়ই খুবই মূল্যবান। আমি সেটি ক্রয় করব।” তারপর রাজা সেই গাভীটিকে নিয়ে তার গোপদের দিয়ে তার যত্ন নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন।
প্রতিদিন সেই গোপবালকগণ সকল গাভীদের নিয়ে শেষাদ্রী পর্বতে নিয়ে গিয়ে সবুজ ঘাস খেতে দেন, সেই সময় তিনি কোন বৃক্ষের ছায়ায় বিশ্রাম নেন। যখনই সেই গোপ বালক ঘুমিয়ে পড়েন তখন সেই গাভীরূপে ভগবান ব্রহ্মা দ্রুত সেই | পিপড়ের পাহাড়ে গিয়ে তার দুগ্ধ নিঃসরণ করতেন। ভগবান তার মস্তক ওপর করে সেই দুগ্ধ পান করতেন। প্রতিদিনই এই ব্যাপারটি ঘটত।
একদিন রাণী সিদ্ধান্ত নিলেন গাভী দুগ্ধের ব্যাপারে তত্ত্বাবধান করবেন। তিনি সকল দুগ্ধবতী গাভীর দিকে খেয়াল রাখলেন। তিনি দেখলেন যে সেই দামী গাভীটি দুগ্ধবতী হলেও সে কোন দুগ্ধ প্রদান করছে না।
রাণী তখন গোপকে জিজ্ঞেস করলেন, “কেন এই গাভীটি দুগ্ধ প্রদান করছে না। আপনি কি গোপনে এই গাভীর দুগ্ধ দোহন করে নিজে রেখে দেন?” সেই গোপ বললেন, “না।
রাণী বললেন, “আমি তোমাকে বিশ্বাস করি না। তার একটি বাছুর রয়েছে। এটি নিশ্চয় দুধ প্রদান করছে। আমি তোমার শিরচ্ছেদ করব।” রাখাল ভাবলেন গাভীটির সমস্যা আমি স্বয়ং খুঁজে বের করব। পরবর্তী দিন, তিনি সেই গাভীকে নজরে রাখলেন। তারপর সেই গাভী গোপনে পিপড়ে পর্বতে গিয়ে দুগ্ধ প্রদান করতে লাগলেন
তখন সেই গোপবালক রাগান্বিত হয়ে ভাবলেন, “এই গাভীটির কারণে আমার মৃত্যু হতে পারে।” তারপর সে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে গাভীটিকে হত্যা করার জন্য একটি কুঠার হাতে নিল। কিন্তু সেই মুহূর্তে পরমেশ্বর ভগবান সেই গুহাদেশ থেকে বেরিয়ে এসে তার মাথা পেতে দিলেন। কিন্তু সেই কুঠারের আঘাত তাঁর কপালের মধ্যভাগে লাগল ।

লীলা থেকে শিক্ষা

এই ঘটনা থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে ভগবান কিভাবে তার ভক্তকে রক্ষা করেন । ভগবান সর্বদাই ব্রাহ্মণ ও গাভীদের হিতকারী।
কিন্তু কেন? প্রতিটি জীবের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আত্মজ্ঞান লাভ করা। গাভী সকল ধর্মীয় আদর্শের প্রতীক। কোন সমাজের ধর্মীয় মাপকাঠি নির্ভর করে তারা কিরকম গাভীদের যত্নগ্রহণ করে তার ওপর। গাভীগণ আমাদের মায়ের মত দুধ প্রদান করে। গাভীদের দুগ্ধ থেকে মূল্যবান ও সুস্বাদু ঘি তৈরি হয়। আর ব্রাহ্মণেরা আমাদের সঠিক দিক নিদের্শনা প্রদান করেন। তাই ভগবান সকলের প্রতি কৃপাপরায়ণ হলেও তিনি চান তাদের মধ্যে যারা সকলের হিতার্থে কাজ করে এবং সর্বাপেক্ষা দয়াশীল ও করুণাময়, তাদের রক্ষা করতে।
পরমেশ্বর ভগবানের অবতার শ্রীনিবাস আঘাত পাওয়া মাত্র অনেক ব্যাথা অনুভব করলেন, তিনি হাত দিয়ে তার কপাল ধরে বসে পড়লেন। সেই সময় বৃহস্পতি সেখানে আসলে ভগবান তাকে সবকিছু বললেন। তখন বৃহস্পতি ভগবানকে বনের বিশেষ ঔষধীর কথা জানালেন যা লাগালে ব্যাথা উপশম হবে। ভগবান ব্যাথা নিয়ে সেই ঔষধীর খোঁজ করতে করতে একটি কুণ্ডের সম্মুখে উপস্থিত হলেন। এটি স্বামী পুষ্করিণী তীর্থ নামে পরিচিত। এটিও বৈকুণ্ঠের একটি হ্রদ যেটি বরাহদেবের অভিলাষে গরুড়দেব বৈকুণ্ঠ থেকে বহন করে নিয়ে এসেছিলেন। ভগবান শ্রীনিবাস সেখানে ভগবান বরাহদেবের দর্শন লাভ করেন। সেটি ছিল অত্যন্ত আনন্দের উপলক্ষ্য। ভগবান বরাহদেব ভগবান শ্রীনিবাসকে মর্ত্যলোকে তার বিবিধ অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। (চলবে..)


 

জানুয়ারী-মার্চ  ২০১৮ ব্যাক টু গডহেড

লক্ষ্মীপতির ঐশ্বর্যধাম (পর্ব-২)

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।