এই পোস্টটি 208 বার দেখা হয়েছে
হাঁড় কাঁপানো শীতের মধ্যে স্নান সেটি যদি হয় ক্রোয়েশিয়ার বিশাল বিশাল পর্বতশৃঙ্গে তবে যে কারো জন্যই ভয়ে আঁতকে উঠার কথা। শুধু স্থান নয় তাও আবার খুব ভোরে, যখন আশপাশের তাপমাত্রা ০° এর কাছাকাছি সে অবস্থায় স্নান করার কথা কল্পনাতে আনলেও যে কারো মনে হবে “তাড়াতাড়ি উষ্ণ মোটা কম্বলের নিচে ঢুকে পড়লেই বাঁচি।” বাংলাদেশের শীত থেকেই পালাবার জো নেই তার উপর ক্রোয়েশিয়ার মত দেশে বসবাস, তার উপর ভোরবেলায় স্নান এ তোর রীতিমত অসম্ভব। কিন্তু অসম্ভব হলেও সত্য যে, ইসকন ভক্তদের একট দল ভোরে স্নান তো রয়েছেই তার উপর সকালের কৃষ্ণভাবনার পুরো সেশন সহ দিন জুড়ে রয়েছে পর্বতে আরোহন করতে করতে জপ, কীর্তন, স্লেজিং, শীতের খেলাধুলা, প্রসাদ আস্বাদন, কৃষ্ণভাবনামৃতের বিভিন্ন গেইমসহ আরো কত কি। আর এ হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে ব্যতিক্রমি উপভোগ্য এ আয়োজনটি। করেছে কৈলাস মাউন্টেইনারিং অ্যাসোসিয়েশন, ক্রোয়েশিয়া সংক্ষেপে KMAC ২০০৯ ডিসেম্বরের ২৫ থেকে ২৭শে ডিসেম্বরের ইসকনের ভক্তদের নিয়ে গড়া এ অ্যাসোসিয়েশন এ রকম একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগের আয়োজন করেছে। সংস্থাটির স্থাপত্যকালও খুব বেশি নয় মাত্র ৬ মাস। আর এরই মধ্যে এ সংস্থাটির মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়ার বিভিন্ন জঙ্গলের অপরূপ প্রাকৃতিক শোভাময় স্থানে বিভিন্ন এরকম ব্যতিক্রমী কার্যক্রম উদযাপিত হয়েছে। মূলত এ কার্যক্রমটির নাম Extreme japa Walk । আর তাই এ কার্যক্রমটির গুরুত্ব নিহিত রয়েছে শুধুমাত্র হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপের উপরই। যারাই এ কার্যক্রমে যোগদান করবে তারা দিনের বেশির ভাগ সময়েই সুউচ্চ পর্বতের উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভগবানের পবিত্র নাম জপ করবে। তবে এ কার্যক্রমের আরেকটি উদ্দেশ্যও রয়েছে তা হল যারা পর্বতবাসী তাদের মধ্যে কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করে তাদের কৃষ্ণচেতনা ফিরিয়ে আনতে উদ্বুদ্ধ করা। যে প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তাতে ভক্তরা পর্বতবাসীদের পাঁচটি কক্ষে থাকবে। প্রতিদিন সকালে ৭টার মধ্যে ভক্তরা মঙ্গলআরতি, হরিনাম কীর্তন এবং কৃষ্ণভাবনামৃতের উপর বিভিন্ন ক্লাশ দেবে। এ কার্যক্রমে পর্বতবাসীরাও যোগ দেবে। তারপর দিনের পরের অংশটি জপ, শীতের খেলাধুলা, স্লেজিং (বরফের উপর দিয়ে গড়িয়ে যাওয়ার এক প্রকার গাড়িতে করে চড়া) প্রসাদ আস্বাদন ইত্যাদি আমোদ- প্রমোদের পর সবাই সন্ধ্যায় নিজ আবাসস্থলে ফিরে আসবে। গৃহে ফিরে তারা সবাই তাদের সারাদিনের অনুভূতি তুলে ধরবে, পারমার্থিক আলোচনাও হবে, আবারও হরিনাম কীর্তন এবং সবশেষে টাটকা গরম দুধ খেয়ে শুতে যাওয়া। এই হল সারাদিনের কর্মসূচী। এরই মধ্যে ভক্তরা পর্বতবাসীদের মধ্যে শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থও বিতরণ করবে। মূলত যারা স্বাভাবিকভাবেই প্রকৃতি প্রেমী এবং যারা হরিনাম জপ ও পর্বতকে ভালোবাসে তারা KMAC এর প্রোগ্রামে যোগদান করে। যারা যোগদান করতে চান তারা KMAC এর ফেইস বুক প্রোফাইলে Kailash Mountaineering লিখে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। ইতোমধ্যে ৬৫ জন ফেইসবুকে জড়ো হয়েছে তাদের মধ্যে সাইন আপ করেছে ২০ জনের মত। তাই আপনি চাইলে KMAC এর ক্যাম্প যোগ দিয়ে পেতে পারেন এক ব্যতিক্রমি আনন্দ । এ কর্মসূচীতে ভক্তরা এমনই আনন্দ পায় যে, যখন হরিনাম সংকীর্তন হয় তখন ক্যাম্পের সবাই যে যার মত গীটার, ভায়োলিন, কিমব্যাল, ডিজিমবে এমনকি রান্না করার থালা-বাসন নিয়ে নেমে পড়ে ছন্দ দিয়ে বাজাতে। আর সবার মুখে থাকে তখন উচ্চস্বরে সুমধুর হরিনাম সংকীর্তন । এ যেন এক ভিন্ন পরিবেশে অদ্ভুদ দিব্য আনন্দ । হাঁড় কাঁপানো শীতের প্রভাব তখন তুচ্ছ মনে হয় যখন হরিনামের উষ্ণ আনন্দে সবাই মেতে উঠে। ও হ্যাঁ KMAC এর একটি শর্ত হল যে, যারাই এই ক্যাম্পে যোগ দিবে তাদেরকে ক্যাম্পে থাকাকালীন সময়ে হরিনাম জপ অভ্যাসের সাথে সাথে অবশ্যই অ্যালকোহল বা নেশা জাতীয় দ্রব্য বর্জন করে শুধুমাত্র সুস্বাদু কৃষ্ণ প্রসাদ আস্বাদন করতে হবে। তাই যারা এগুলোতে অভ্যস্ত না হয়ে উঠার দরুন KMAC এর পোগ্রামে যেতে পুরোপুরিই অক্ষম তাদের জন্য কি আর করা। এক্ষেত্রে এরকম একটি উপভোগ্য কর্মসূচীর ভিন্ন স্বাদ উপভোগ না করার দুঃখটা দূর করার জন্য আপাতত খুব ভোরে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে উষ্ণ কম্বলের নিচে বসে বসে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপটাই অভ্যাস করুন তা না হলে KMAC এর পরবর্তী সুযোগটাও হাতছাড়া হতে পারে
চৈতন্য সন্দেশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন :https://play.google.com/store/apps/details?id=com.differentcoder.csbtg