বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের উৎস হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ

প্রকাশ: ৮ জানুয়ারি ২০২৫ | ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৮ জানুয়ারি ২০২৫ | ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 13 বার দেখা হয়েছে

বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের উৎস হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ

ড. সিং কৃষ্ণ কান্তি দাস অধিকারী এবং শ্রীল প্রভুপাদ সহ আরও কয়েকজন শিষ্যের সঙ্গে এই আলোচনাটি হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ১৭ই মে লস্ এঞ্জেলেসের সন্নিকটে প্রশান্ত মহাসাগরে উপকূলে

কৃষ্ণকান্তি: মানুষের মস্তিষ্কের জটিলতা দেখে ডাক্তারেরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায়।

শ্রীল প্রভুপাদ : হ্যাঁ। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মস্তিষ্ক শরীরটিকে পরিচালনা করছে না, পরিচালনা করছে আত্মা। একটা কম্পিউটার কি নিজে নিজেই কার্যকরী হতে পারে? না, একটা মানুষ তাকে চালায়। সে বোতাম টেপে, তার ফলে কম্পিউটারটি কার্যকরী হয়। তা না হলে সেই মেশিনের কি মূল্য আছে? তুমি হাজার হাজার বছর ধরে মেশিনটা রেখে দিতে পার, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না একটা মানুষ এসে সেই বোতামগুলি টিপছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তা কাজ করবে না। সুতরাং, আসলে কাজটা কে করছে, মেশিন না মানুষ? তেমনই মানুষের মস্তিষ্ক হচ্ছে একটা মেশিনের মতো, এবং সকলের হৃদয়ে বিরাজমান পরমেশ্বর ভগবানের প্রকাশ পরমাত্মার নির্দেশ অনুসারে তা কাজ করছে।

বৈজ্ঞানিকদের উচিত ভগবানকে এবং ভগবানের অচিন্ত্য শক্তিকে মেনে নেওয়া। তা যদি তারা না করে তা হলে সেটা তাদের মূর্খতারই পরিচায়ক হবে। পারমার্থিক জ্ঞানের ভিত্তিতে আমরা অনেক বড় বড় বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিকদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। সেদিন তুমি একজন রসায়নবিদকে নিয়ে এসেছিলে, এবং আমি তাকে বলেছিলাম, “আপনারা হচ্ছেন মহামূর্খ।” কিন্তু তিনি রেগে যাননি। তিনি তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। আমি তার সবকটি যুক্তি খণ্ডন করেছিলাম। সেই কথা হয়ত তোমার মনে আছে।

ড. সিংঃ হ্যাঁ। তিনি স্বীকার করেছিলেন যে, কৃষ্ণ হয়ত তাঁর গবেষণা করার সব কটি স্তর তার কাছে উন্মুক্ত করেননি।

শ্রীল প্রভুপাদ: সে শ্রীকৃষ্ণ- বিরোধী সুতরাং কৃষ্ণ কেন তাকে সুযোগ- সুবিধা দেবেন? তুমি যদি কৃষ্ণ বিরোধী হও এবং কৃষ্ণকে বাদ দিয়ে নিজে নিজে কৃতিত্ব অর্জন করার চেষ্টা করো, তা হলে তুমি অবশ্যই অকৃতকার্য হবে। আমরা যে-কোনও বৈজ্ঞানিক অথবা দার্শনিকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষমতা রাখি। কিভাবে? কৃষ্ণের ভরসায়। আমি জানি যখন আমি তাদের সঙ্গে কথা বলি, তাদের পরাস্ত করবার জন্য যথেষ্ট বুদ্ধি কৃষ্ণ আমাকে দেবেন। তা না হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে তারা আমাদের থেকে অনেক বেশি উন্নত। তাদের তুলনায় আমরা কিছুই নয়। কিন্তু আমরা কৃষ্ণকে জানি এবং কৃষ্ণ সব কিছু জানেন। তাই আমরা যে কোনও বৈজ্ঞানিককে চ্যালেঞ্জ করতে পারি। ঠিক যেমন একটি শিশু যখন তার বাবার হাত ধরে থাকে, তখন সে কোন বয়স্ক মানুষকে চ্যালেঞ্জ করতে ভয় পায় না। সে কেবল তার বাবার হাত ধরে থাকে এবং তার বাবা তাকে রক্ষা করেন।

ড. সিং: যে সমস্ত মানুষ কৃষ্ণকে জানবার চেষ্টা করে না, তাদের মানব জন্ম কি ব্যর্থ হয়?

শ্রীল প্রভুপাদ: হ্যাঁ। যে সমস্ত মানুষ কৃষ্ণের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের কথা জানবার চেষ্টা করে না, কতকগুলি পশুর মতোই তাদের মৃত্যু হয়-ঠিক কুকুর-বিড়ালের মত। তারা জন্মায়, খায়, ঘুমায়, সন্তান উৎপাদন করে এবং অবশেষে মরে যায়। সেটি হচ্ছে তাদের জীবনের পরিণতি। এই সমস্ত মুর্খগুলি মনে করে, “আমি হচ্ছি আমার এই দেহটি।” আত্মা শ্রীমদ্ভাগবত এবং ভগবদ্গীতা সম্বন্ধে তাদের কোন ধারণা নেই। আমাদের আত্মা সম্বন্ধে জ্ঞান দান করেন, কিন্তু এই মহান গ্রন্থগুলি সম্বন্ধে মানুষের কোন ধারণাই নেই। বৈদিক শাস্ত্রে মানব সমাজের জন্য যে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আজকের মানুষ সেই সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন। যেমন- বেদ গ্রন্থে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে গোময় হচ্ছে পবিত্র। কিন্তু এখন, বিশেষ করে আমেরিকায় মানুষ তাদের কুকুরদের মলত্যাগ করানোর জন্য রাস্তায় নিয়ে আসে। কুকুরের বিষ্ঠা অত্যন্ত দূষিত। তা হচ্ছে নানারকম  জীবাণুর বৃদ্ধি পাওয়ার স্থান। কিন্তু মানুষগুলি এতই নির্বোধ যে, সেই কথা তারা বিচার করে না। পক্ষান্তরে, তারা সর্বত্রই কুকুরের বিষ্ঠা বিতরণ করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু কোথাও গোময় দেখা যায় না, যদিও বলা হয়েছে যে, গোময় হচ্ছে বিশুদ্ধ এবং পবিত্র।

এখানে দেখা যায় যে, অনেক তথাকথিত উন্নত স্থানে মানুষকে সতর্ক করে দিয়ে লেখা রয়েছে, “কাগজের টুকরো ফেলা দণ্ডনীয় অপরাধ।” কিন্তু কুকুরের বিষ্ঠা ছড়ানোতে নিষেধ নেই! বিচার করে দেখ, কত মূর্খ এই লোকগুলি। ঘাসের উপর এক টুকরো কাগজ ফেলা বে-আইনী, কিন্তু কুকুরগুলির মলত্যাগ করতে নিষেধ নেই। এ দেশের সরকার অন্য দেশ থেকে একটা আম পর্যন্ত আনতে দেয় না; কিন্তু তারাই কুকুরগুলিকে সর্বত্র বিষ্ঠা বিতরণ করতে অনুমতি দিচ্ছে, যদিও কুকুরের বিষ্ঠা হচ্ছে নানা রকম সংক্রামক রোগের জীবাণুতে পূর্ণ।

হরে কৃষ্ণ।


মাসিক চৈতন্য সন্দেশ, জানুয়ারী – ২০১১ ইং

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।