‘পাশ্চাত্য দেশ তারিণের’ শতবর্ষ

প্রকাশ: ৩ মার্চ ২০২২ | ১:০২ অপরাহ্ণ আপডেট: ৩ মার্চ ২০২২ | ১:০৪ অপরাহ্ণ

এই পোস্টটি 260 বার দেখা হয়েছে

‘পাশ্চাত্য দেশ তারিণের’ শতবর্ষ

মায়াপুর, ভারত প্রতিনিধি: অনেক ভক্তই হয়তো জানেন না যে, এই বছরই শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের সাথে ইস্‌কন প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল প্রভুপাদের সাক্ষাৎ হয়েছিল। আর প্রথম সাক্ষাতেই শ্রীল প্রভুপাদকে তাঁর গুরুদেব ‘পাশ্চাত্য দেশ তারিণে’-এর আদেশ প্রদান করেছিলেন। তাই টিওভিপি শ্রীমৎ এসি ভক্তিবেদান্ত স্বামী শ্রীল প্রভুপাদের পাশ্চাত্য দেশ তারিণ-এর শতবর্ষ ১৯২২-২০২২ উদ্‌যাপন করছেন। টিওভিপি শ্রীল প্রভুপাদের পাশ্চাত্য দেশ তারিণের তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন।

নমো ওঁ বিষ্ণু পাদায় কৃষ্ণ প্রেষ্ঠায় ভূতলে
শ্রীমতে ভক্তিবেদান্ত স্বামী নিতি নামিনে।
নমস্তে সারস্বতে দেবে গৌরবাণী প্রচারিণে
নির্বেশেষ-শূণ্যবাদী পাশ্চাত্যদেশ তারিণে॥

অনুবাদ: শ্রীকৃষ্ণের চরণাশ্রিত ও একান্ত প্রিয়ভক্ত কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদকে আমি আমার সশ্রদ্দ প্রণতি নিবেদন করি। হে প্রভুপাদ, হে সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুরের প্রিয় শিষ্য, কৃপাপূর্বক শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী প্রচারের দ্বারা নির্বিশেষে ও শুন্যবাদপূর্ণ পাশ্চাত্যদেশ উদ্ধারকারী, আপনাকে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
শ্রীল প্রভুপাদ কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করতে না আসলে এখন আমরা কোথায় থাকতাম এবং এজগৎ কেমন হতো? সত্তর বছর বয়সে যখন অধিকাংশ বৈষ্ণব তাদের ভজন করার জন্য অবসর গ্রহণ করেন, তখন তিনি শ্রীবৃন্দাবনের ঐশ্বরিক আবাসস্থল ত্যাগ করে, সম্পূর্ণ অর্থহীনভাবে রিক্ত হস্তে, স্বজনহীনভাবে সাত সমুদ্র তের নদী পাড় হয়ে আমেরিকার গমণ করেন। যেখানে যেতে তিনি মালবাহী জাহাজে উঠেছিলেন। আর সমুদ্রের মাঝ পথে তাঁর তিনবার স্টোকও হয়েছিল। তথাপি তিনি পরমেশ^র ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অপার কৃপায় পাশ্চাত্য ভূমিতে পদার্পণ করেছিলেন।
সম্পূর্ণ সহায় সম্বলহীন হয়েও তিনি মাত্র ১২ বছরের মধ্যে ১৪ বার ৬টি মহাদেশের ২৪ দেশ পরিভ্রমণ করেন। বিশ্বব্যাপী ১০৮ টি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। হাজার হাজার মানুষকে কৃষ্ণভাবনামৃত প্রদান করে শিষ্য-শিষ্যা হিসেবে গ্রহণ করেন। এই রকম কঠোর কর্মসূচী থাকার সত্ত্বেও শ্রীল প্রভুপাদ প্রবলভাবে ইংরেজিতে তাৎপর্যসহ শ্রীমদ্ভাগবত, শ্রী চৈতন্য চরিতামৃতসহ অনেক গুলো দিব্য গ্রন্থ লিপিবদ্ধ করেন। এছাড়াও তিনি ৬৫৭৯ টির অধিক চিঠি বিশ্বব্যাপী শিষ্যদের প্রেরণ করেছিলেন। তিনি ৪৯০টি প্রাতঃভ্রমণ করেন, ১৯১৪টি প্রবচন প্রদান করেন, ৯০৭টি কথোপকথন ও ৬২টি সাক্ষাৎকার দেন। ৮০টিরও অধিক গ্রন্থ, ১৩০টি ব্যাক টু গডহেড এবং ৩৬টি প্রবন্ধ প্রদান করেন। আর তিনি এতো সব কর্ম সম্পাদন করেছিলেন মাত্র ১৯৬৬-১৯৭৭ সালে মধ্যে। জন্ম-মৃত্যুর চির স্থায়ী চক্র থেকে বাঁচিয়ে ভগবানের শ্রীপাদ পদ্মে নিয়ে আসার জন্য তাঁর প্রতি আমাদের ঋণ আমরা কখনো শোধ করতে পারবো না।
এই শতবর্ষ উদ্‌যাপনের জন্য টিওভিপি তৈরি করেছে পাশ্চত্য দেশ তারিণে ক্যাম্পেইন। শ্রীল প্রভুপাদ ভক্তির ৩টি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হরিনাম, জিবিসি (গীতা, ভাগবত ও চৈতন্য চরিতামৃত) ও অর্চা বিগ্রহ শুধুমাত্র পাশ্চাত্য দেশেই নয় সমগ্র মানব জাতিকে এনে দিয়েছেন। টিওভিপি কর্তৃপক্ষ ৩টি অনন্য ও ব্যতিক্রমী সুন্দর ৩ ফুট ৫ ইঞ্চি মেডেলের ডিজাইন করেন।
ভক্তির ৩টি অঙ্গের জন্য ৩টি মেডেল ভালোবাসা প্রদর্শন করতে এবং প্রতিষ্ঠাতা আর্চাযের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য স্পন্সর করা যাবে। স্পন্সর করতে ভিজিট করুন-Paschatya Desha Tarine page on the TOVP website. যা তাঁর দিব্য স্বপ্ন ‘বৈদিক প্ল্যানেটোরিয়াম’ (টিওভিপি) মন্দির নির্মাণের ইচ্ছা পূরণ করতে সহায়তা করবে। এই মেডেলগুলো ২০২১ সালের অলিম্পিক মেডেলের অনুকরণে নির্মিত হয়েছে।


 

চৈতন্য সন্দেশ ফেব্রুয়ারী ২০২২ প্রকাশিত
সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।