এই পোস্টটি 213 বার দেখা হয়েছে
এক প্রৌঢ় হিন্দু ব্রিটেনে তার শ্মশান প্রজ্জ্বলিত অগ্নিতে দাহ হবার অধিকার প্রাপ্ত হলেন। যেটি ব্রিটেনের আদালতের আপিল বিভাগ কর্তৃক নির্দেশিত হল। এর ফলে ব্রিটেনে বসবাসকারী সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী সকল অধিবাসীর উন্মুক্তভাবে শ্মশানে দাহ্য হবার অধিকার প্রাপ্ত হলেন। যার নিরলস প্রচেষ্টায় এই অসামান্য কার্যটি সাধন করা সম্ভবপর হল তিনি হলেন শ্রী দেবেন্দর গাই। যিনি ১৯৫৮ সালে কেনিয়া হতে ব্রিটেনে স্থানান্তরপূর্বক বসবাস করে আসছেন সাথে সাথে তিনি ব্রিটেনের এশিয়ান ফ্রেডশিপ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা। উক্ত কার্যের প্রথম পর্যায়ে অর্থাৎ গত মে মাসে তার আবেদন উচ্চ আদালত খারিজ করে দেয়। কিন্তু উচ্চতর আদালত এক বিশেষ আদেশ বলে তার আকাঙ্খিত শ্মশান প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করেন। উল্লেখ্য, পূর্বে ব্রিটেনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উন্মুক্ত শ্মশানে দাহ করা যেত না। উচ্চতর আদালতে এই রায়ের ফলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের সেই অধিকার প্রাপ্ত হলেন। এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে সত্তরোর্ধ্ব দেবেন্দর উচ্চসিত হয়ে বলেন যদিও আমি আদালতের কর্মকর্তা কর্মচারিদের দ্বারা শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে বিপর্যস্থ হয়েছি তথাপিও আমি সন্তুষ্ট। যদি আমি আজ মারাও যায় তবে শান্তিতে মরতে পারব। কেননা আমি আশ্বস্থ হতে পারছি যে, অন্তত আমার ধর্মীয় ক্রিয়া বিধিগুলি সুষ্ঠুরূপে সম্পন্ন হবে। তিনি আরো বলেন, সকল লোকের তার ধর্মীয় রীতি অনুসারে বেঁচে থাকারও অধিকার রয়েছে। ১৯০২ সালে ব্রিটেনে দাহ্য আইনের অধ্যাদেশ দ্বারা ব্রিটেনে হিন্দুদের দাহ করার অধিকার রহিত হয়। তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তিকে পোড়ানো এবং শ্মশানে ধর্মীয় রীতি পালনপূর্বক দাহ সমান তাৎপর্য বহন করে না। সরকারের ১টি পক্ষ এই আবেদনের বিরোধিতা করেছিল এই অজুহাতে যে, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা এই রীতির ভিন্ন মত পোষণ করছে এবং এই রায় তাদের হতাশ ও বিদ্রোহী করে তুলবে এবং মৃত মানুষ পোড়ানোর এই রীতি সর্বতোভাবে তারা ঘৃণা করে। কিন্তু দেবেন্দর এর আইনজীবি তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, উন্মুক্ত দাহ করার অধিকার রহিত করার মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ডেবিট লিওবারগার যিনি তিন সদস্যের বিচারক প্যানেলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি দেবেন্দর এর আইনজীবিকে জিজ্ঞাসা করেন আপনার মক্কেল কি চায় এবং শশ্মশানটি কেন উন্মুক্ত এবং কাঠের তৈরি হওয়া আবশ্যক? কিন্তু ইহা দেয়াল দ্বারা আবদ্ধ হতে হবে। ইহার দ্বারা মনে হয় দেবেন্দর এর ধর্মীয় লোকজন এবং ব্যক্তিদের বিশ্বাস যে, এই রায়ের ভিত্তিতে তাদের সঠিক দাহক্রিয়া সম্পন্ন হতে হবে। সে হিসাবে ১৯০২ সালে দাহ অধ্যাদেশটি কিছু শর্তসাপেক্ষে সংশোধন করতে হবে। এমনভাবে দাহক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে যাতে তার চারিদিকে দেয়াল থাকে এবং এই প্রক্রিয়া যাতে পরিবেশ এবং মানুষের ক্ষতিসাধন করতে না পারে। এক বক্তব্যে দেবেন্দর জনগণের সমর্থনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন এই বিচারটি ছিল আমার জীবন-মরণ সমস্যা এবং আজ এক প্রৌঢ় বৃদ্ধের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি এই দেশের জনগণের সহমর্মিতায় কৃতজ্ঞ এবং সেই জমির মালিকের প্রতিও যিনি এই দাহপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য জমি দান করছেন। তাদের এই অম্লান প্রতিদানের ফলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বৈদিক রীতির শেষ অধিকারটুকু প্রাপ্ত হবে। তিনি আরো অনুরোধ করেন যেন তাকে দাহ করার পর প্রাপ্ত হাড় গঙ্গা নদীতে উৎসর্গ করা হয়।
হরে কৃষ্ণ ।
চৈতন্য সন্দেশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন :https://play.google.com/store/apps/details?id=com.differentcoder.csbtg
Hare Krishna Thanks For Reading