এই পোস্টটি 1200 বার দেখা হয়েছে
অভয়চরণ ভয়েস উদ্ধোধন করছেন হর্ষবর্ধ শ্রিংলা (বামে) ও নবদ্বীপ দ্বিজ গৌরাঙ্গ দাস (ডানে)
সিদ্ধ মাধব দাস: শ্রীশ্রী রাধামাধব জিউ, ইস্কন সিলেটে হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে বরণ করতে ও স্বাগত জানালেন শত শত ভক্তবৃন্দ রাস্তার দু’পাশে সাড়িবদ্ধ হয়ে হাতে বাংলাদেশ ও ভারতে পতাকা হাতে নিয়ে। তাকে ফুলের মালা পড়িয়ে বরণ করে নেন সিলেট মন্দিরের অধ্যক্ষ নবদ্বীপ দ্বিজ গৌরাঙ্গ দাস। তিনি প্রথমে মন্দিরে প্রবেশ করেন ভগবানকে দর্শন, প্রদীপ ও প্রণাম নিবেদন করার পর স্টেইজে যান।
অনুষ্ঠানের সূচনা করেন দেবর্ষি শ্রীবাস দাস শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার শ্লোক আবৃত্তির মাধ্যমে। তারপর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নবদ্বীপ দ্বিজ গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ যখন এই মন্দির লাভ করেন তখন তিনি ঘোষনা করেন এই সিলেট মন্দির মিনি মায়াপুর হবে যেখানে স্কুল, ছাত্রাবাস প্রভৃতি থাকবে।’ আচার্যদের কথা কখনো বিফল হয় না পক্ষান্তরে আজ তা বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা মহোদয়।”
চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, “যেখান থেকে বঙ্গীয় সংস্কৃতির বিকাশ ঐতিহাসিক কাল থেকে শুরু হয়েছে। যে পবিত্র স্থানে ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পিতৃভূমি বিদ্যমান। আমাদের মধ্যে সত্যিই আনন্দ বিরাজ করছে তার কারণ ‘হর্ষ’ মানে ‘আনন্দ’ আর ‘বর্ধন’ মানে ‘বর্ধিত করা’ অর্থাৎ যিনি সকলের আনন্দ বর্ধিত করার জন্যই এখানে এসেছেন। সর্বোপরি উনার জন্ম হয় পার্বত্য অঞ্চলে। পাহাড় হচ্ছে অনিন্দ সুন্দর, জ্ঞান আর মহানুভবতার প্রতীক। এখানে উপস্থিত হয়েছেন হর্ষবর্ধন যিনি আমাদের আনন্দ বর্ধন করে জ্ঞান ও বিজ্ঞানের প্রকাশ সৃজন করার জন্য এখানে এসেছেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, সুসময় ও দুঃসময়ে সব সময় ভারত বাংলাদেশের পাশে আছে, পাশে থাকবে। ভারত ও বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নের দেশ হিসাবে নিজেদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক আরো মর্যাদায় পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ অর্থসামাজিক উন্নয়নে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
বিশেষ করে চরমপন্থি ধারনাকে বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখান করেছে। এটি একটি দেশের জন্য বিরাট সফলতা। এতে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারত খুবই গর্বিত। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দিন দিন আরও গভীর হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধী অতীতে দু’দেশের সম্পর্কের যে বীজ বপন করেছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তা এক অনন্যউচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘আমি আজ এ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কথা ধরে বলতে চাই-আগে আমরা একে অপরের পাশাপাশি ছিলাম। এখন আমরা একে অপরের আরও কাছাকাছি এসেছি।’ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন) মন্দিরে ভারতীয় হাই কমিশনের অর্থায়নে অভয়চরন ভয়েস (২৫০ কক্ষবিশিষ্ট, ৫ তলা ভবন) ছাত্রাবাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথাগুলো বলেন। বক্তব্যটি শুনতে ক্লিক করুন https://www.youtube.com/watch?v=J_pNZWaPeEk
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইস্কন বাংলাদেশের সভাপতি সাবেক ডিআইজি এসআর বারৈ সভাপতিত্বে দেবামৃত নিতাই দাস ও ডা. সত্য সুন্দরী দেবী দাসীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শাবির ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মৎস্য ও প্রানিসম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অরুন কুমার মালাকার, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পুরকায়স্থ, ইসকন বাংলাদেশের সাধারন সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, ভারত ইস্কন মায়াপুর ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক আনন্দ বর্ধন দাস ব্রম্মচারী, ইস্কন বাংলাদেশের প্রথম সন্যাসী ভক্তিপ্রিয়ম গদাধর স্বামী মহারাজ, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ, নগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, যুগ্ম সম্পাদক বিজিত চৌধুরী, শাবির প্রক্টর হিমাদ্রী শেখর রায়, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস জার্নালিষ্ট কমিশন সিলেট’র সভাপতি ফয়সল আহমদ বাবলু প্রমূখ।হরেকৃষ্ণ!
(মাসিক চৈতন্য সন্দেশ পত্রিকা নভেম্বর ২০১৮ প্রকিাশিত)