এই পোস্টটি 940 বার দেখা হয়েছে
রাইজিংসিলেট ডেস্ক : সিলেটে ভক্তদের ভালবাসায় সিক্ত হলেন শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ। সন্ন্যাস গ্রহণ করে গতকাল শনিবার সিলেট আসলে ভক্তরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়। ইসকন সিলেটের অধ্যক্ষ নবদ্বীপ দ্বিজ গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী গৌর পূর্ণিমা তিথিতে ভারতের ইসকন শ্রীধাম মায়াপুরে ইসকনের অন্যতম আচার্য্য শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী গুরু মহারাজের কাছ থেকে সর্বত্যাগী সন্ন্যাস দীক্ষা গ্রহণ করেন।
সিলেটের বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে ছিল ভক্তদের ভিড়। তাদের প্রিয় ধর্মীয় এই নেতাকে স্বাগত জানায় ভারতসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষ্ণভাবনাময় ভক্তরা। বিকালে ‘সম্প্রীতির এই সিলেটে সবার মধ্যে জেগে উঠুক নিখাদ ভালবাসা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে সংবর্ধিত করেন কৃষ্ণ ভক্তরা। সংবর্ধনায় উঠে আসে তার কর্মময় জীবনের কথা। উঠে আসে সকল প্রকার ধর্মীয় গোড়ামি থেকে নিজেদের রক্ষার কথা।
বক্তারা আরো বলেন, সব ধর্মই মানুষের কথা বলে। সবার আগে মানবতার ধর্ম। এই ধর্মে দিক্ষীত হয়ে সন্ন্যাস গ্রহন করে মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেবেন এই প্রত্যাশা করেন বক্তরা। বক্তারা বলেন, তার সন্ন্যাস গ্রহনের কারনে সিলেটে আরো বেশী বেশী কৃষ্ণভাবনার প্রচার প্রসার হবে।
ইসকন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ভাগবত করুণা দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে সংর্বধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কমিশনের সভাপতি ফয়ছল আহমদ বাবলু, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর, শ্রীহট্ট সং®কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ড. দিলীপ কুমার দাস চৌধুরী, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, সিলেট শ্রীচৈতন্য গবেষণা কেন্দ্রের সম্পাদক প্রকৌশলী মনোজ বিকাশ দেবরাজ, সিলেট চৌকিদেখি মহাপ্রভুর আখড়ার সভাপতি ননী গোপাল পাল, ইসকন সিলেট ইয়ূথ ফোরামের কো-অর্ডিনেটর দেবর্ষি শ্রীবাস দাস ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ সন্ন্যাস মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সংকীর্তন নিতাই দাস ব্রহ্মচারী, ইসকন সিলেটের মায়াপুর ইন্সটিটিউটের শিক্ষক পদ্মলোচন শ্যাম দাস ব্রহ্মচারী, ইসকন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ভাগবত করুণা দাস ব্রহ্মচারী, সিলেট বিয়ানীবাজার শ্রীবাস অঙ্গনের অধ্যক্ষ সিদ্ধ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, মৌলভীবাজার জজ কোর্টের সিনিয়র জজ নির্জন দাস অধিকারী প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে নগরীর প্রবেশদ্বার হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বরে শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজকে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
নবদ্বীপ দ্বিজ গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারীর জন্ম ১৯৬৪ সালের ১৮ই এপ্রিল টাঙ্গাইল নাগরপুরের ঢহর পাছুরিয়া গ্রামে। লেখাপড়া করেছেন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে পারমার্থিক জীবনের লক্ষ্যে অগ্রসর হয়। আশির দশকে ইসকন বাংলাদেশের প্রথম প্রচারের সময় তিনি ইসকনের সাথে সংযুক্ত হন এবং ইসকন ঢাকা ওয়ারী মন্দিরের ভগবানের সেবাকার্যের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজের কাছ থেকে ‘হরিনাম দীক্ষা’ প্রাপ্ত হন।
১৯৯১ সালে তিনি গায়ত্রী দীক্ষা প্রাপ্ত হন। তিনি বাংলাদেশের শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজের কাছ থেকে দীক্ষা প্রাপ্ত ৩ জন সন্নাসীর মধ্যে অন্যতম। পরবর্তীতে শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ তাকে ইসকন সিলেটের কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচারের জন্য সিলেটে প্রেরন করেন এবং সেখানে তিনি অধ্যক্ষের পদ গ্রহন করেন। তিনি ভক্তিজীবনে উন্নতি লাভ করে জগতজুড়ে খ্যাতি অর্জন করায় খুশি ইসকন ভক্তরা।