ওয়ার্ল্ড ভাদ্র পূর্ণিমা ক্যাম্পেইন

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ | ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮ | ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 888 বার দেখা হয়েছে

ওয়ার্ল্ড ভাদ্র পূর্ণিমা ক্যাম্পেইন

মাধব স্মুলেন: শ্রীমদ্ভাগবতে (১২/১৩/১৩) বর্ণনা করা হয়েছে, “কোনও মানুষ যদি ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীমদ্ভাগবতকে স্বর্ণ সিংহাসনে স্থাপণ করে দান, তিনি পরম গতি লাভ করবেন।” শ্রীল প্রভুপাদ ১৯৭৭ সালের তাঁর একটি পত্রের মাধ্যমে প্রত্যেকটি ভক্তদের একটি বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করেন। তিনি তার পত্রে ব্যক্ত করেন, “আমি চাই প্রত্যেকটি দায়িত্বসম্পন্ন ব্যক্তির গৃহে সর্ম্পূণ এক সেট ভাগবত এবং চৈতন্যচরিতামৃত থাকুক।

সেই হিসেবে এই নির্দেশ পূরণার্থে, বিগত বছর উত্তর আমেরিকা এবং ভারতে ভাদ্র পূর্ণিমা ক্যাম্পেইন প্রচলন করা হয়। কিন্তু এই বছর, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বব্যাপী শ্রীমদ্ভাগবতের পূর্ণ আনন্দস্বরূপ এই আর্শিবাদ বিরাজ করছে। ভারত, মার্কিন যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ ৩৬টিরও অধিক মন্দির এতে অংশগ্রহণ করেন।যা সংকল্প গ্রহণ করা হয় কিন্তু তা পরবর্তীতে অবিশ্বাস্যভাবে অতিক্রম করে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যে ভক্তগণ শ্রীমদ্ভাগবত বিতরণের জন্য ৮০টি সেট নির্ধারণ করেন, কিন্তু বর্ধিত হয়ে ১৮৩টিতে এসে দাড়াঁয়। দক্ষিণ আমেরিকারও নির্ধারিত লক্ষ্য ৪৫০টি সেট হতে ১২৮৬টিতে পরিবর্তিত হয়।

তুলনামূলকভাবে ভারত এক্ষেত্রে এক অন্যতম ভূমিকা পালন করে, তারা ৫,১৫১ টি সেট বিতরণ করে। পরিশেষে আর্কষণীয়ভাবে ৭,০০৭টি শ্রীমদ্ভাগবতমের সেট সারা বিশ্বে বিতরণ করা হয়। ইস্‌কন জুহু মন্দিরের শ্রীমান বৈসেসিকা দাস, ভীম দাস এবং অন্যান্য আর্ন্তজাতিক সংর্কীতন নেতৃবৃন্দদের যৌথ উদ্যোগ এবং দলবদ্ধ কাজের দ্বারাই আর্কষণীয় এই ক্যাম্পেইনটি সাফলতার সাথে সম্পাদিত হয়। মূলত, এটির ব্যবস্থাপনা দায়িত্বে ছিলেন বৈসেসিকা দাস, যিনি মায়াপুরে জিবিসি সাক্ষাৎকারের এটি তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে উত্তর আমেরিকার মন্দির অধ্যক্ষদের অবগত করেন। ইসকন চৌপাট্টি এর শ্রীমৎ গোপাল কৃষ্ণ গোস্বামী, শ্রীমৎ লোকনাথ স্বামী, শ্রীমৎ ভক্তি রসামৃত স্বামী, শ্রীপাদ গৌরাঙ্গ দাস এবং ইসকন পুনে এর শ্রীপাদ রাধেশ্যাম দাস প্রমুখ প্রখর নেতৃস্থানীয় বর্গবৃন্দ এ বিষয়ে উৎসাহমূলক ভিডিও তৈরি করেন এবং “bhadracampaign.com” ওয়েবসাইটটিতে তা উপস্থাপন করেন।  নেতৃবর্গগণ এবং গ্রন্থবিতরণকারীগণ লোকেদের কাছে শ্রীমদ্ভাগবতম ক্রয় এবং উপহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অভিনব পন্থা অবলম্বন করেন।

এক্ষেত্রে, ওয়াশিংটন এবং বাল্টিমোরের ভক্তগণ বিভিন্ন নাটকাদি উপস্থাপন করেন। ভারতে, শ্রী রাম দাস এবং শ্রী পুরুষোত্তম দাস বিভিন্ন শহর যেমন: বেঙ্গালুর, তিরুপতি এবং মুম্বাই এ ভাদ্র ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানটি পরিবেশন করেন। ইসকন জুহুতে শ্রীমদ্ভাগবতমের উপর ভক্তি রসামৃত স্বামী দুই ঘন্টা ব্যাপী “ভাগবত সপ্তাহ” প্রদান করেন। এই অনুষ্টানটির পরপরই ভক্তগণ ভাদ্র পূর্ণিমার উপহারস্বরূপ শ্রীমদ্ভাগবতম সেট নিয়ে আসেন। বিভিন্ন পন্থার মাধ্যমে সারা বিশ্বে শ্রীমদ্ভাগবত প্রচার করা হচ্ছে। শুধু যুক্তরাজ্যই নয় ইস্‌কন জুহু এর মুম্বাইতে যুবপ্রচারক এবং নেতৃবর্গগণ সমগ্র শহরে এটি বিতরণ করছেন। এক্ষেত্রে, নরোত্তম প্রিয় দাস তার একটি বিবৃতিতে জানান, “ প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম আমরা নির্দিষ্ট সংখ্যক লক্ষ্য পূরণ করতে পারব না কিন্তু পরবর্তীতে শ্রীমৎ গোপাল কৃষ্ণ গোস্বামী মহারাজ এবং আমাদের বিবিটি তত্ত্বাবধায়ক ভীম প্রভু অবিরত আমাদের উৎসাহ প্রদান করেন, এর ফলেই আমরা প্রচারের এক নতুন পন্থা খুজেঁ পায়। এছাড়াও, ইসকন সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন স্কুল,কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রমুখ ভাষায় শ্রীমদ্ভাগবত প্রচার করেন।

পরিশেষে, এই সকল সাফল্যই শ্রীমদ্ভাগবতমের প্রতি পরিলক্ষিত হয়। মূলত, শ্রীমদ্ভাগবতমের মাধ্যমেই আমরা উচ্চস্তরের অপ্রাকৃত আস্বাদন করতে পারি। ইসকন জুহু হতে নরোত্তম দাস জানান, এই ভাদ্র পূর্ণিমা প্রত্যেকের জীবনে আর্শীবাদপূর্ণ হিসেবে থাকবে। শ্রীল প্রভুপাদের আদর্শে প্রত্যেক ভক্তেরই এরকম অপ্রাকৃত সেবার মাধ্যমে ভগবদধামের প্রত্যাশা করা উচিত এবং এর চেয়ে হয়ত কোন শ্রেষ্ঠ উপহার আর নেই।


(মাসিক চৈতন্য সন্দেশ পত্রিকা নভেম্বর ২০১৮ প্রকিাশিত)

এরকম চমৎকার ও শিক্ষণীয় প্রবন্ধ পড়তে চোখ রাখুন ‘চৈতন্য সন্দেশ’‘ব্যাক টু গডহেড’

যোগাযোগ: ০১৮৩৮-১৪৪৬৯৯

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।