৪টি নিয়ম পালন এবং ১৬ মালা জপ

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 68 বার দেখা হয়েছে

৪টি নিয়ম পালন এবং ১৬ মালা জপ

শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী: ভালোভাবে জপ করতে সে-ই পারবে, যে ৪টি নিয়ম ঠিকমতো পালন করবে। কারণ ৪টি নিয়ম পালন এবং ভালো ১৬ মালা জপ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কেউ যখন ইস্‌কনে যোগদান করে, প্রথম দিন থেকেই তাকে চারটি নিয়ম সম্পর্কে অবগত করানো হয়। যখন ইস্‌কনে কেউ দীক্ষা প্রাপ্ত হয়, ভগবানের সামনে, অগ্নিকে সাক্ষী রেখে গুরুদেবের যাওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শিষ্যের কর্তব্য গুরুদেবের আদেশ আন্তরিকতার সহিত পালন করা, বিশেষভাবে দীক্ষার সময় শ্রীবিগ্রহ, শ্রীগুরুদেব, বৈষ্ণব এবং অগ্নিকে সাক্ষী রেখে যেসকল প্রতিজ্ঞা আমরা গ্রহণ করি-যা মূলত ৪টি নিয়ম পালন করা এবং কমপক্ষে ১৬ মালা জপ করা।

শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতে শ্রীল প্রভুপাদ বর্ণনা করেছেন যে, হরিদাস ঠাকুর প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যাপূর্বক নাম জপ করতেন। এটি বিভিন্ন লোকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। হরিদাস ঠাকুর প্রতিদিন ৩লক্ষ কৃষ্ণনাম জপ করতেন। অন্যদের ক্ষেত্রে সেটা এক লক্ষ বা ৬৪ মালা ছিল। শ্রীল প্রভুপাদ দীক্ষিত শিষ্যদের জন্য কমপক্ষে ষোল মালা নির্ধারণ করেছেন যাতে প্রায় ২৫,০০০ কৃষ্ণনাম জপ করা হয়। আমরা শুনেছি যে, এটিই তাঁর বিধান ছিল। শ্রীল প্রভুপাদ আমাদের সকলকেই কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচারের সঙ্গে যুক্ত করেছেন।” কমপক্ষে ষোল মালা জপ করো এবং প্রচার করো।” সুতরাং, শ্রীল প্রভুপাদ আমাদেরকে কমপক্ষে ১৬ মালা বা ২৫০০০ কৃষ্ণনাম করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং যদি আমরা কমপক্ষে ১৬ মালা জপ করি তবেই শ্রীল প্রভুপাদের নির্দেশ পালন করা হবে। নীতিটি হচ্ছে যাতে আমরা প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যাপূর্বক নাম জপ করি। তাই শ্রীল প্রভুপাদ আমাদের কমপক্ষে ১৬ মালা জপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। শিষ্য যখন ১৬ মালা জপ করে না, তা আমাকে প্রভাবিত করে। কিন্তু নিয়মিত জপ না করলে শিষ্যের দ্বারা চারটি নিয়ম ভঙ্গ হতে পারে, যা আমাকে আরো বেশি প্রভাবিত করবে। সুতরাং, চারটি নিয়ম পালন করার জন্য সক্ষম হতে চাইলে শিষ্যদের নিয়মিত জপ করতে হবে।

একজন ভক্ত প্রতিদিন সংখ্যাপূর্বক নাম জপ করবে এটিই হচ্ছে ভগবদ্ভক্তিময় জীবনের আদর্শ। হরিদাস ঠাকুর প্রতিদিন তিন লক্ষ নাম জপ করতেন। বিভিন্ন ভক্তদের বিভিন্ন সংখ্যা রয়েছে। শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর প্রভুপাদের শিষ্যবৃন্দ প্রতিদিন ৬৪ মালা জপ করতেন। ওনার শিষ্যদের মধ্যে যারা গ্রন্থ প্রচার করতেন, তারা ওনার নির্দেশ অনুসারে ১৬ মালা জপ করতেন। এভাবেই শ্রীগুরুদেব তার শিষ্যদের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রদান করেন যা তার শিষ্যদের পূর্ণ করতে হয়। এটি শ্রীল প্রভুপাদের করুণা যে তিনি আমাদের ১৬ মালা জপ করার বিধান দিয়েছেন। তিনি ২৫ মালা প্রদান করার বিষয়ে ভেবেছিলেন কিন্তু পরিশেষে কমপক্ষে ১৬ মালাই স্থির করেছিলেন। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন আমরা প্রচারকার্যে নিযুক্ত হই। এক সময়, আমি কোলকাতা মন্দিরে ৩২ মালা জপ করতাম। শ্রীল প্রভুপাদ সকাল ১০টায় আমাকে জপ করতে দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তুমি কি করছো? আমি খুব গর্ববোধ করছিলাম। আমি বলেছিলাম, “ওহ! আমি ৩২ মালা জপ করছি।’ শ্রীল প্রভুপাদ তখন বলেছিলেন, ‘যদি তুমি ৩২ মালা জপ কর তবে কে প্রচার করবে? তুমি ১৬ মালা জপ কর এবং প্রচার কর।’ সংখ্যা নয়, তিনি দেখেছিলেন আমাদের নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য কি প্রয়োজন? জপের সাথে মহাপ্রভুর বাণী প্রচারেও আমাদেরকে যুক্ত থাকতে হবে। শ্রীগুরুদেবকে অমান্য করা তৃতীয় নামাপরাধ এবং যেহেতু শিষ্যরা প্রতিদিন ষোল মালা জপ করার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করেছে, সুতরাং তারা যদি তা না করে তবে নামের প্রতিও তাদের অপরাধ হবে। আমার সকল শিষ্যদের জপ করতে হবে, এটি আমার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


মাসিক চৈতন্য সন্দেশ জুন ২০২২ হতে প্রকাশিত

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।