জপে রুচি কীভাবে পুনরুদ্ধার করবো?

প্রকাশ: ৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ | ৮:০১ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 37 বার দেখা হয়েছে

জপে রুচি কীভাবে পুনরুদ্ধার করবো?

শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী: শুরুর দিকে অনেক সময় আমাদের প্রবল উৎসাহ থাকে, আর আমাদের অপরাধও থাকে না। কারণ আমরা খুব নবীন হওয়ায় অপরাধ করি না। এক সময় আমরা ভক্ত হই, তখন অন্য ভক্তদের খুব কাছাকাছি থাকি। এখানে আমরা কিছু অপরাধ করা শুরু করি, “এই মাতাজির শাড়িটা আমারটার চেয়ে ভালো কেন? এই প্রভু কেন এই প্রসাদ গ্রহণ করছে? আমি কখনও এত পাই না। সম্ভবত সে চুরি করেছে ইত্যাদি। “অপরাধ করার ফলে হরিনামে রুচি হারাই। দশবিধ নাম অপরাধ যেন আমাদের না হয়, সেদিকে সচেতন থাকতে হবে।

পঞ্চতত্ত্ব মন্ত্র জপ করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় আমরা হয়তো হরিনাম জপে রুচি হারাতে পারি, কিন্তু যদি প্রবল উৎসাহ ও শ্রদ্ধা সহকারে পঞ্চতত্ত্ব মন্ত্র জপ করি তাহলে আমাদের রুচি ফিরে আসবে:

শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ।

শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ॥

আমি যখন নবীন ভক্ত ছিলাম, তখন আমাদের ইস্‌কনে খুব বেশি গ্রন্থ ছিল না। তাই প্রভুপাদের একজন গুরুভ্রাতার রচিত “শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী ও শিক্ষা” গ্রন্থটি আমাদের পড়ার অনুমতি দেওয়া হতো। সেখানে আমি পড়েছিলাম, যখনই হরিদাস ঠাকুর জপের সময় মনে উৎসাহ হারাতেন তখন তিনি উচ্চৈঃস্বরে জপ করতেন। তখন আমি খুবই নবীন, আমার মন সর্বদা চঞ্চল হচ্ছে। তাই আমি শুধু উচ্চৈঃস্বরে জপ করতাম:

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে॥

এবং তখনও যদি মন চঞ্চল হতো, আমি আরও উচ্চৈঃস্বরে জপ করতাম। কিন্তু তারপর আবারো আমার মন বিচলিত হলে আমি আরও উচ্চৈঃস্বরে জপ করতাম। এরপর আমার মন স্থির হতো। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ভক্তরা সবাই চলে যেত এবং প্রভুপাদের কাছে নালিশ করত, “আমাদের এক ভক্ত, জয় সে এত জোড়ে চিৎকার করে যে, আমরা তা ভাবতেও পারি না এবং ওর চিৎকারে আমরা যথাযথভাবে জপ করতে পারি না।” এর জন্য প্রভুপাদ পরে আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন, “আচ্ছা, তুমি এ কী করছ? তুমি চিৎকার করে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করছ আর অন্যরা কেউ জপ করতে পারছে না।” তাই আমি ব্যাখ্যা করি, “আমার মনকে জপে ফিরিয়ে আনার জন্য আমি এত উচ্চৈঃস্বরে জপ করি।” তখন প্রভুপাদ বলেন, “ঠিক আছে, তুমি যদি খুব উচ্চৈঃস্বরে জপ করতে চাও, তাহলে তোমাকে বাইরে যেতে হবে। তুমি পার্কে গিয়ে জপ করো” সেই থেকে আমি পার্কে নির্বাসিত হলাম।

পার্কে আমি খুব উচ্চৈঃস্বরে জপ করতাম এবং তখন শুধু কাঠবিড়ালি ও পাখিগুলো আমার জপের শব্দ শুনত। সময়টা ছিল জগিংয়ের পূর্ব মুহূর্ত। কিন্তু মনোযোগের জন্য এই উচ্চৈঃস্বরে জপ করা খুবই কার্যকরী ছিল। পরেও আমার মন যখন বিচলিত হতো, তখন খুব উচ্চৈঃস্বরে জপ করতাম, আবার মন স্থির হলে স্বর নামিয়ে স্বাভাবিকভাবেই জপ করতাম। শ্রীল রূপগোস্বামীপাদ রচিত “কৃষ্ণনামাষ্টকম্” নামক একটি প্রার্থনা রয়েছে। নাম অপরাধ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যে কেউ জপ করতে পারেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।