হজম এবং নিরাময়ের কৌশল

প্রকাশ: ৩ অক্টোবর ২০২১ | ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৩ অক্টোবর ২০২১ | ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 424 বার দেখা হয়েছে

হজম এবং নিরাময়ের কৌশল

জুলাইয়ের সংখ্যায়, আমরা সঠিক হজমের গুরুত্বের দিকে দৃষ্টিপাত করেছিলাম। যদি খাবার সঠিকভাবে হজম হয়, তাহলে পুষ্টি উপাদানগুলি শরীরে যথাযথভাবে সরবরাহ হয়। কিন্তু যদি খাবার সঠিকভাবে হজম না হয়, তবে তা বিষে রূপান্তরিত হয় এবং এটি হলো রোগের কারণ। শরীর একটি নির্দিষ্ট সময়ে হজম কিংবা নিরাময় করতে পারে। শরীরের জন্য একই সময়ে উভয় কাজ করা কঠিন। অতএব যদি আমাদের অনেক দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকে, তাহলে আমাদের শরীরকে হজমে কম মনোযোগদিয়ে, নিরাময়ের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। হজম পদ্ধতি সহজ করার জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি , যাতে করে শরীর নিরাময়ের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে পারে। যেমন:
১. রাতে খাবার গ্রহণ করবেন না অথবা দেরিতে নৈশভোজ হতে বিরত থাকুন। সূর্যাস্তের পূর্বে খাবেন। কারণ সূর্যাস্তের পরে হজম দূর্বল হয়ে যায় এবং খাবার সঠিকভাবে হজম না হওয়ার দরুন তা বিষে রূপান্তরিত হবে। তাই আমাদের সন্ধ্যায় তাড়াতাড়ি খাওয়া উচিত। যাতে শরীর এটি দ্রুত হজম করে ফেলতে পারে এবং এরপর সে রাতে নিরাময় ও আমাদের শরীরকে বিষক্রিয়া হতে সুস্থ রাখার দিকে মনোনিবেশ করে।
২. রাত-জাগা হতে বিরত থাকুন। নিশ্চিত করুন যে আপনি পর্যাপ্ত ঘুমাচ্ছেন। গভীর রাতে জেগে থাকার ফলে আমাদের শরীরে একপ্রকার বিষ তৈরি হয় এবং এটি আমাদের নিরাময়ের গতি কমিয়ে দেয়।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান করুন কিংবা পানি সমৃদ্ধ খাবার (যেসব খাদ্যে মিনারেলের পরিমাণ বেশি) খান। আমাদের শরীর বেশিরভাগই হলো পানি (৬০% থেকে ৭৫%)। তাই আমাদের শরীরের মিনারেল তথা পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। জল হলো একপ্রকার উপযোগী বিষ অপসারণকারী এবং এটি আরোগ্য লাভে সাহায্য করে। পানির অভাব বিষাক্ত পদার্থ তৈরি হয় এবং তা আরোগ্য লাভের প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।
৪. ঘন ঘন (অতিরিক্ত) খাবার খাওয়া হতে বিরত থাকুন। আমাদের প্রতি বেলার খাওয়ার মাঝে পর্যাপ্ত সময়ের ব্যবধান রাখা উচিত (প্রায় ৫ ঘন্টা)। যাতে করে, পূর্বে গৃহীত খাবারগুলো সঠিকভাবে হজম হয়। ঘন ঘন (অতিরিক্ত) খাবার খাওয়া হজম ব্যবস্থাকে ব্যাহত করে এবং নিরাময় প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। যদি নিতান্তই খাওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে কিছু ফল বা সালাদ খাওয়া যেতে পারে।
৫. খাবার খাওয়ার পরপরই পানি পান করবেন না। খাবারের পরপরই পানি পান করা হজমে যথেষ্ট ব্যাঘাত ঘটায়। যাইহোক, খাবারের পরে গরম পানি পান করা খুব ভাল। কারণ সেই তাপটি হজমের আগুন বৃদ্ধি করবে এবং হজমের গতি বাড়াবে।
৬. খাবার গ্রহণের ৫০ মিনিট আগে অথবা খাবার খাওয়ার দেড় ঘণ্টা পর পানি পান করুন। আমরা খাবার গ্রহণের দেড় ঘণ্টা পরে, হজম হওয়া খাবারগুলো আধা তরলে (ঘন রস) রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়ার জন্য পানির প্রয়োজন হয়। তাই আমরা আসলে যখন পানি পান করি, তখন তা ব্যবহার করা হয় এই হজমের কাজেই।
৭. একাদশী হচ্ছে শরীরকে বিষক্রিয়া হতে মুক্ত রাখার খুব ভালো পদ্ধতি এবং এটি নিরাময়ের গতিকে বৃদ্ধি করে। এটি পরিপাকতন্ত্রকে বিশ্রাম দেয় যাতে শরীর নিরাময় এবং বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করার দিকে মনোনিবেশ করতে পারে। একাদশীর সময় প্রয়োজন হলে জল বা ফল খেতে পারেন। কারণ তা হজম করা সহজ এবং শক্তিবর্ধকও বটে।
৮. ঘাম নিঃসরণও শরীরকে বিষক্রিয়া হতে রক্ষা করে। অতএব আমরা ঘাম ঝড়াতে বা রোদে হাঁটতে হাঁটতে কিছু ব্যায়াম করতে পারি।
বিভিন্ন খাবার হজম হতে বিভিন্ন সময় নেয়। শস্যজাতীয় খাদ্যগুলো হজম হতে সাধারণত ৮ ঘন্টা সময় নেয়, সবজি নেয় ৪ ঘন্টা এবং ফল হজমে ২ ঘন্টা সময় নেয়।
অতএব, দীর্ঘস্থায়ী রোগ নিরাময়ের জন্য, কম শস্যজাতীয় খাবার এবং বেশি ফল/সবজি এবং তরল খাবার (জুস এবং স্যুপ) গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে শরীর নিরাময়ের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে পারে।


চৈতন্য সন্দেশ অক্টোবর-২০২১ প্রকাশিত

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।