এই পোস্টটি 235 বার দেখা হয়েছে
১. ক্ষুদ্র স্বাধীনতা
সন্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব এড়িয়ে চলতে চাইলে তাকে বুঝতে চেষ্টা করুন। সন্তানকে ক্ষুদ্র স্বাধীনতা দিন, তবে অবাধ স্বাধীনতা নয়। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানকে বড় করে তোলার সময় বাবা-মায়ের সব দিকে লক্ষ্য রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. জাগতিক ও পারমার্থিক শিক্ষা
এজন্য সন্তানকে জাগতিকভাবে সুশিক্ষিত করার পাশাপাশি অবশ্যই পারমার্থিকভাবেও যোগ্য করে তুলতে হবে। মনে রাখবেন, পারমার্থিকভাবে যদি আপনি সন্তানকে সুশিক্ষিত করতে পারেন, তাহলেই সে একজন নৈতিকতাসম্পন্ন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সক্ষম হবে।
শ্রীঈশোপনিষদে ১১নং শ্লোকে বলা হয়েছে, “যিনি জাগতিক ও পারমার্থিক উভয় বিদ্যাই যুগপৎ শিক্ষা করেন, তিনিই একমাত্র জন্মমৃত্যুর বন্ধন অতিক্রম করে অমৃতত্ব উপভোগ করেন।” তাৎপর্যে শ্রীল প্রভুপাদ বলেন, ‘জীবন সংগ্রামে জয় লাভের জন্য একমুখী প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাই শ্রীঈশোপনিষদ আমাদের দিচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য প্রত্যেকেই কঠোর সংগ্রাম করছে, কিন্তু জড়া প্রকৃতির নিয়ম এমন কঠোর কেউই তাকে অতিক্রম করতে পারে না। চিরস্থায়ী জীবন লাভ করতে হলে আমাদের ভগবৎ-ধামে প্রত্যাবর্তনের জন্য অবশ্যই প্রস্তুত হতে হবে। যে পদ্ধতি দ্বারা ভগবৎ-ধামে প্রত্যাবর্তন করা যায়, তা উপনিষদ্, বেদান্ত-সূত্র, ভগবদ্্গীতা, শ্রীমদ্ভাগবত ইত্যাদি বৈদিক শাস্ত্র থেকেই কেবল এই জ্ঞান শিক্ষা লাভ করতে হবে। সাধারণত বুদ্ধিমান জীবেরা সমস্ত অনুস্মারকদের বিবরণ সংগ্রহ করেন এবং বিদ্যা বা অপ্রাকৃত জ্ঞান অনুশীলনে নিজেদের নিয়োজিত করেন। এই পরা বিদ্যা বা অপ্রাকৃত জ্ঞান অনুশীলনের জন্য মানব জীবনই সর্বশ্রেষ্ঠ সুযোগ এবং যেই মানুষ এই দুর্লভ সুযোগের সদ্ব্যবহার করে না সে নরাধম।’ কিন্তু বর্তমানে আমরা সন্তানকে শুধুমাত্র জাগতিকভাবে সুশিক্ষিত করে তুলতে চায়, পারমার্থিকভাবে নয়। ফলে সন্তান নৈতিকতাসম্পন্ন আদর্শ মানুষ না হয়ে বিভিন্ন অসামাজিক কুকর্ম করতেও দ্বিধাবোধ করেন না।
৩. নির্ভরশীল নয় বরং স্বাধীন করে গড়ে তুলুন
একজন অভিভাবক হিসেবে বাবা-মায়ের দায়িত্ব সন্তানকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলা। এখানে সন্তানকে স্বাধীন ব্যক্তি হিসেবে তৈরি করার দায়িত্ব আপনারই। কিন্তু যে মুহূর্তে আপনি বুঝতে পারছেন সন্তানের আপনাকে আর অতোটা প্রয়োজন হচ্ছে না, তা মেনে নেওয়া মুশকিল। ক্লাস ফাইভের শিশু বাড়ি ফিরে স্কুলের সব ঘটনা মাকে যেভাবে বলে, একজন কিশোর বা কিশোরী কিন্তু তা বলে না। মায়েদের বুঝতে হবে সন্তানকে নির্ভরশীল নয় বরং স্বাধীন করে গড়ে তোলা উচিত।
৪. বলুন কম শুনুন বেশি
ছোটবেলায় বাবা- মা সন্তানকে দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে সবই শেখান। কিন্তু টিনএজে সন্তানদের ক্ষেত্রে ‘কথা কম শোনা বেশি’ জরুরি। কারণ এসময় তার নিজস্ব একটি সত্ত্বা তৈরি হয়ে গিয়েছে। ফলে ওদের বলতে দিন, আপনি শুনুন বেশি। তবে যদি ভুল করে তাহলে দৃষ্টান্ত দিয়ে তাকে বুঝিয়ে দিন।
প্রত্যেককে বলার সুযোগ দেওয়া উচিত। অনেক অভিভাবকই শোনেন কম, দ্রুত সিদ্ধান্তে চলে আসেন।
৫. আলাদা ঘুমাতে দিন
প্রত্যেক সম্পকের্রই একটা গণ্ডি আছে। বয়ঃসন্ধির সন্তানের সঙ্গে নিজের বাউন্ডারি সেট করে নিন। এখনও অনেক সন্তান বাবা-মায়ের সঙ্গে শোয়। এটা কিন্তু মোটেও কাম্য নয়। পাঁচ-ছয় বছর বয়সের পর আলাদা ঘুমাতে দিলেই ভাল।
৬. নিজেই দৃষ্টান্ত স্থানীয় হোন
মা-বাবা সন্তানের কাছে রোল মডেল। তারা যা করছেন সেটির ব্যাপারে বললে বা সন্তানকে সেই কাজটি করতে বললে দ্বন্দ্ব অনেক কমে। ধরুন, আপনি চান যে সন্তান বই পড়ুক। অথচ আপনি নিজে বই পড়েন না। এমনটা করলে কিন্তু সন্তান আপনার কাছ থেকে শিখবে না। চলমান…