এই পোস্টটি 637 বার দেখা হয়েছে
![শ্রীপঞ্চতত্ত্বের মহিমা](https://csbtg.org/wp-content/uploads/2021/03/Screenshot_3-1-e1617353538651.jpg)
শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর ও শ্রীল কৃষ্ণদাস কবিরাজ গােস্বামী বিরচিত শ্রীচৈতন্য ভাগবত ও
শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত থেকে সংগৃহীত
শ্রীপঞ্চতত্ত্ব
“শ্রীকৃষ্ণের ভক্তরূপ, ভক্তস্বরূপ, ভক্তাবতার, ভক্ত, ভক্তশক্তি- এই পঞ্চতত্ত্বাত্মক শ্রীকৃষ্ণকে আমি প্রণতি নিবেদন করি।
-চৈ. চ. আদি ৭/৬
“পঞ্চতত্ত্বের এই পাঁচ জন যখন দেখলেন যে, ভগবৎ- প্রেমে সমস্ত জগৎ নিমজ্জিত হয়েছে এবং জীবের জড় ভােগবাসনার বীজ সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়েছে, তখন তাঁদের পরম উল্লাস হল।”
-চৈ. চ. আদি ৭/২৭
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু
“লীলাময় স্বরাট পুরুষ, শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু জয়যুক্ত হউন, জয়যুক্ত হউন, তাঁর চিরন্তন পবিত্র কীর্তী জয়যুক্ত হউন, জয়যুক্ত হউন, হে সর্বশ্বরেশ্বর পরমেশ্বর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভৃত্যগণ জয়যুক্ত হউন, জয়যুক্ত হউন এবং তাঁর বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রিয় ভক্তগণের নৃত্য জয়যুক্ত হউন, জয়যুক্ত হউন।” চৈতন্য ভাগবত, মধ্যখণ্ড, ষষ্ঠ অধ্যায় “শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর দুই সেনাপতি শ্রীরূপ গােস্বামী ও শ্রীসনাতন গােস্বামীকে ভগবদ্ভক্তি প্রচার করার জন্য বৃন্দাবনে পাঠালেন।” -চৈ. চ. আদি ৭/১৬৩
“এই পঞ্চতত্ত্ব রূপে শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু সমগ্র বিশ্বজুড়ে কৃষ্ণনামরূপ প্রেম বিতরণ করে সমস্ত বিশ্বকে ধন্য করলেন।” -চৈ. চ. আদি ৭/১৬৩
“জিনিয়া কন্দর্পকোটি লাবণ্য সুন্দর ।
জ্যোতির্ময় কনকসুন্দর কলেবর ॥
প্রশ্নবদন কোটিচন্দ্রের ঠাকুর।
অদ্বৈতের প্রতি যেন সদয় প্রচুর ॥
দুই বাহু দিব্য কনকের স্তম্ভ জিনি।
তহি দিব্য আভরণ রত্নের খিচনি ॥
শ্রীবৎস, কৌস্তুভ-মহামণি শােভে বক্ষে।
মকর কুণ্ডল বৈজয়ন্তী-মালা দেখে ॥
কোটি মহাসূর্য জিনি, তেজে নাহি অন্ত।
পাদপদ্মে রমা, ছত্র ধরয়ে অনন্ত ॥
কিবা নখ, কিবা মণি না পারে চিনিতে।
ত্রিভঙ্গে বাজায় বাঁশী হাসিতে হাসিতে ॥ “
– চৈতন্যভাগবত, মধ্যখণ্ড, ষষ্ঠ অধ্যায়
শ্রীনিত্যানন্দ
“শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু হলেন মহাপ্রভুর পূর্ণ প্রেমের বিষয়, এবং আমার হৃদয়ের বাসনা এই যে, শ্রী নিত্যানন্দ প্রভু যেন সর্বোত্তম প্রিয় প্রভু ও প্রতিপালক হিসেবে আমার হৃদয়ে অবস্থান করেন।”
– চৈতন্য ভাগবত, মধ্যখণ্ড, অধ্যায়-৪
“নিত্যানন্দপ্রসাদে সে হয় বিষ্ণু-ভক্তি।
জানহি-কৃষ্ণের নিত্যানন্দ পূর্ণ-শক্তি ॥
কৃষ্ণের দ্বিতীয়-নিত্যানন্দ বই নাই।
সঙ্গী, সখা, শয়ন, ভূষণ, বন্ধু, ভাই ॥
বেদের অগম্য নিত্যানন্দের চরিত্র।
সর্বজীব-জনক, রক্ষক, সর্বমিত্র ॥
প্রভু বলে,-“শুনহ সকল ভক্তগণ।
নিত্যানন্দ-পাদোদক করহ গ্রহণ ॥
করিলেই মাত্র এই পাদোদক পান।
কৃষ্ণে দৃঢ় ভক্তি হয়, ইথ নাহি আন ॥”
– চৈতন্য ভাগবত, মধ্যখণ্ড, দ্বাদশ অধ্যায়
শ্রী অদ্বৈত
পরম-সদয়-মতি প্রভু বিশ্বম্ভর।
চাহিয়া অদ্বৈ-প্রতি করিলা উত্তর ॥
“তােমার সংকল্প লাগি’ অবতীর্ণ আমি ।
বিস্তর আমার আরাধনা কৈলে তুমি ॥
শুতিয়া আছিলুঁ ক্ষীরসাগর-ভিতরে।
নিদ্রাভঙ্গ হইল মাের তােমার হুঙ্কারে ॥
দেখিয়া জীবের দুঃখ না পারি সহিতে।
আমারে আনিলে সব জীব উদ্ধারিতে ॥
মতেক দেখিলে চতুর্দিকে মাের গণ।
সবার হইল জন্ম তােমার কারণ ॥
যে বৈষ্ণব দেখিতে ব্রহ্মাদি ভাবে মনে।
তােমা হৈতে তাহা দেখিবেক সর্বজনে ॥”
অদ্বৈতের বলে প্রেম পাইল জগতে।
এ সকল কথা কহি মধ্যখণ্ড হৈতে ॥”
– চৈতন্য ভাগবত, মধ্যখণ্ড, ষষ্ঠ অধ্যায়
শ্রীগদাধর
“গদাধর-নৃত্য দেখি’ আছে কোন্ জন?
বিহ্বল হইয়া নাহি করেন ক্রন্দন ॥
প্রেমনদী বহে গদাধরের নয়নে।
পৃথিবী হইলা সিক্ত, ধন্য করি’ মানে ॥
গদাধর হৈলা যেন গঙ্গা মূত্তিমতী।
সত্য সত্য গদাধর কৃষ্ণের প্রকৃতি ॥’’
-চৈতন্য ভাগবত, মধ্যখণ্ড, অষ্টাদশ অধ্যায়
শ্রী শ্রীবাস
“কি বলিব শ্রীবাসের উদার চরিত্র।
যাহাঁর চরণ-ধূলে সংসার পবিত্র ॥
গজ্জিতে আছয়দ যেন মত্তসিংহ সার।
বাম-কক্ষে তালি দিয়া করয়ে হুঙ্কার ॥
দেখিয়া হইল কম্প শ্রীবাস-শরীরে।
স্তব্ধ হৈলা শ্রীনিবাস, কিছুই না স্ফুলে ।
ডাকিয়া বলয়ে প্রভু,-“আরে শ্রীনিবাস।
এতদিন না জানিস্ আমার প্রকাশ?
তাের উচ্চ সংকীর্তনে, নাড়ার হুঙ্কারে।
ছাড়িয়া বৈকুণ্ঠ, আইনু সর্ব পরিবারে ॥”
– চৈতন্য ভাগবত, মধ্যখণ্ড, ২য় অধ্যায়
ত্রৈমাসিক ব্যাক টু গডহেড, এপ্রিল-জুন ২০১৩