এই পোস্টটি 507 বার দেখা হয়েছে
নিদির্ষ্ট ফলাফল না আসায় অসন্তুষ্ঠ হয়ে ঔরঙ্গজেব ১৬৯১ সালে পুনরায় জগন্নাথ পুরী আক্রমণ করে রথযাত্রা পণ্ড করার আদেশ দেন। এবার তিনি তার সেনাপতি নওয়াব ইকরাম খানকে পাঠান, যিনি ছিলেন সম্রাট আকবরের ভাগ্নে।
মোঘল ইতিহাস গ্রন্থ “তসিরাত-ইল-নৈজিরিন” এবং উড়িষ্যার গ্রন্থ মদলপঞ্জী ও চৈকাঠপন্থি তে এই আক্রমণের কাহিনী উল্লেখিত আছে। “কঠক-রাজা-বংশাবলী” গ্রন্থে উল্লেখ আছে, মোঘল সৈন্যদের আক্রমণ আশংকার কথা জেনে খুরদার রাজা গজপতি দিব্যসিংহ দেব (১৬৮৮-১৭১৬) ইকরাম খানের সৈন্য সংখ্যা জানার উদ্দেশ্য একজন গুপ্তচর পাঠান। (খুরদা রাজাকে ভগবান শ্রীজগন্নাথদেবের সেবাপূজার দায়িত্ব প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে এই রাজ্য পুরীতে স্থানান্তর করা হয় এবং পুরী থেকে শাসন প্রচলিত হয়) গুপ্তচর সংবাদ নিয়ে এল: ইকরাম খানের ছিল ২৫ হাজার ঘোড়া, ১২০০ হাতি, ২০০০ উঠ এবং ১ লক্ষ পায়ে হাটা সৈনিক। মোঘলরা জগন্নাথ মন্দির আক্রমণ করে পূর্বদিকে সিংহ দরজা এবং দক্ষিণের ঘোটক দরজা ভেঙ্গে দেন। ভোগ মন্ডপ মন্দিরের চক্র ভেঙ্গে দেন। (উৎস: কঠক-রাজা-বংশাবলী, পৃষ্ঠা-৯৪) বাঙ্গালি ইতিহাসবিদ দীনেশচন্দ্র সেন বলেন, “ইকরাম খান মন্দির প্রধান দুইটি দরজা ধ্বংস করেন। ডায়মন্ডের তৈরি জগন্নাথের দুইটি চোখ ঔরঙ্গজেবের কাছে পাঠানো হয়। সেই সাথে সাথে ৪ টি কাঠের বিগ্রহ প্রদান করা হয় বলে উল্লেখ রয়েছে।”
ইকরাম খানের ভাই জামাল খান সর্বাপেক্ষা গুরুতর অপরাধ করেন। তিনি জগন্নাথের বেদীতে আরোহন করে জগন্নাথের সিংহাসনে বসেন। ইকরাম খানের বিশাল সৈন্যদলের কাছে আশু পরাজয় জেনে উড়িষ্যার মানুষকে নিহত হওয়ার হাত থেকে বাঁচানের জন্য মহারাজ দিব্যসিংহ ইকরাম খানকে রথযাত্রার রথগুলো প্রদান করেন। “কঠক-রাজা-বংশাবলী” (পৃষ্ঠ- ৯৪) এ উল্লেখ রয়েছে যে চারটি বিগ্রহ ইকরাম খানকে দেওয়া হয় সেগুলো কোন সেবিত বিগ্রহ ছিল না। ঔরঙ্গজেব যাতে বুঝতে পারেন যে জগন্নাথ মন্দির ও জগন্নাথ স্বয়ং ধ্বংস হয়েছেন এবং এই অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন তাই ছল করে অপ্রতিষ্ঠিত জগন্নাথ মূর্তি প্রদান করা হয়। ইতিমধ্যে মহারাজ দিব্যসিংহ প্রকৃত জগন্নাথ, বলদেব, সুভদ্রা ও সুদর্শন বিগ্রহকে বিমলা মন্দিরের পেছনে এক গোপন কক্ষে সরিয়ে নেন এবং গোপনে সেবাপূজা করতে থাকেন।
ঔরঙ্গজেব যখন ভাবলেন যে তাদের লুণ্ঠিত জগন্নাথ বিগ্রহ হল প্রকৃত বিগ্রহ, তখন তারা সেই মূর্তিসমূহকে মসজিদের নিচে ছুড়ে ফেললেন যেন মসজিদে আগত সকল মুসল্লিদের পায়ের তলায় এগুলো পেষিত হয় এবং এতে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবনায় যেন আঘাত লাগে।
মাসিক চৈতন্য সন্দেশ ও ব্যাক টু গডহেড এর ।। গ্রাহক ও এজেন্ট হতে পারেন
প্রয়োজনে : 01820-133161, 01758-878816, 01838-144699