শিশুরা জন্মগতভাবে ধর্মবিশ্বাসী!

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪ | ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২ জুন ২০২৪ | ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 49 বার দেখা হয়েছে

শিশুরা জন্মগতভাবে ধর্মবিশ্বাসী!

এক বছর বয়সী শিশু রমন। সৌভাগ্যক্রমেই ভগবান শ্রীশ্রী রাধামাধবের মন্দিরের নিকটেই তাদের বাসস্থান। প্রায়সময়ই মা-বাবার হাত ধরে সে মন্দিরে আসে। প্রতিবারই রাধামাধবের শ্রীবিগ্রহ দর্শনমাত্রই তার চোখেমুখে অন্যরকম প্রফুল্লতা ফুটে ওঠে। সে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভগবানকে প্রণাম করে এবং ভগবানের প্রসাদ পাওয়ার জন্য আগ্রহ ভরে মন্দিরের পূজারীর নিকট ছুটে যায়।  শুধু রমনই নয়, আমাদের আশেপাশে প্রায় প্রতিটি শিশুর মাঝেই এই স্বাভাবিক ধর্মীয় ভাবের বিকাশ পরিলক্ষিত হয়। লন্ডনের বিখ্যাত ‘দি টেলিগ্রাফ’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায়ও উপরোক্ত বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ববিখ্যাত ‘অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ‘সেন্টার ফর এনথ্রোপোলোজি এন্ড মাইন্ড’ বিভাগের সিনিয়র গবেষক ডাঃ জাস্টিন ব্যারেড শিশুদের মনের উপর পরীক্ষা- নিরীক্ষা চালিয়ে এই বিষয়টির সত্যতা নিরুপনে সফল হয়েছেন। এই গবেষণার শেষে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, শিশুরা জন্মগতভাবেই ধর্ম বিশ্বাসী। বিবিসি রেডিও-৪ চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘শিশুদের মনের উপর বিগত ১০ বছরের গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং মনুষ্য সৃষ্ট কৃত্রিম পরিবেশের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে কেননা আশ্চর্যজনকভাবে সে এটি বুঝতে সক্ষম যে, এই বিশ্বের প্রতিটি কাজেই কোন না কোন নিয়ন্তার অধীনে হয়ে থাকে। ঠিক যেমন প্রত্যেক শিশুই তার দুধের চাহিদা মেটাতে কেবলমাত্র তার মায়ের শরণাগত হয়। গবেষণা সম্পাদনের উদ্দেশ্যে তিনি ক্যামব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যারাডে ইনস্টিটিউটে একশ শিশুর সমাগম ঘটান যাদের বয়স ছিল ২-৬ বছরের মধ্যে। ডঃ ব্যারেড ৫ বছর বয়সী শিশুদের প্রশ্ন করেন পৃথিবীতে পাখিরা কেন রয়েছে। উত্তরে তাদের অধিকাংশই বলে, সুন্দর শব্দ সৃষ্টির জন্য এটি পৃথিবীতে সুন্দর করে। অন্য এক পর্যায়ে তাদের সামনে একটি ফুটবল এবং একটি খাঁচায় আবদ্ধ জীবন্ত পাখি রাখা হয়। ফুটবল ও জীবন্ত পাখি সম্পর্কে তাদেরকে বলতে বলা হলে তাদের প্রত্যেকেই প্রাকৃতিক জীব পাখি ও কৃত্রিম বস্তু ফুটবল সম্পর্কে পার্থক্য তুলে ধরে। বেশির ভাগ শিশুই কোন কিছু নিজেনিজেই সৃষ্টি হওয়াকে (Evolution) মেনে নেয়নি বরং তার সৃষ্টি ও সৃষ্টিকর্তাকে মেনে নেয়। গবেষক ডাঃ ব্যারেড আরো বলেন যে, “শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই ঈশ্বর এবং ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্মে বিশ্বাসী কিন্তু পিতামাতার মানসিক অবস্থা ও দৃষ্টিভঙ্গি ভেদে পরবর্তীতে শিশুদের ঈশ্বরবিশ্বাসেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে।” সুতরাং শিশুদের পরবর্তী জীবনে ধর্মীয় ও নৈতিক চেতনার বিকাশে পিতামাতা ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অধিকাংশ পিতামাতাই বর্তমানে আধুনিকতার জোয়ারে নিজ সন্তানদের সম্পূর্ণ জড় পরিবেশে এমনভাবে আবদ্ধ করে রাখেন যে তাদের পক্ষে ভগবানের সান্নিধ্য লাভ করা এ দুস্কর হয়ে উঠে। ফলশ্রুতিতে পারমার্থিক প্র শিক্ষাবিহীন সেই সকল সন্তানেরা পরিণত  বয়সে পিতামাতার দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।  তাই সকল মাতাপিতাদের উচিত সন্তানদের  আধুনিক মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি  কৃষ্ণভাবনায় পারমার্থিক শিক্ষা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করা। কেননা যথার্থ পারমার্থিক শিক্ষায় শিক্ষিত সন্তান শুধুমাত্র তার পিতামাতাই নয় সমগ্র দেশের কল্যাণে কাজ করে থাকেন। শিশুর সুপ্ত ধর্মীয় চেতনাকে বাধাগ্রস্ত না করে প্রত্যেক মা-বাবারই উচিত সন্তানের ধর্মীয় হল চেতনা বিকাশে উৎসাহ প্রদান করা। হরে কৃষ্ণ

সূত্র ২০১০ জুলাই চৈতন্য সন্দেশ।

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।