মানুষ কি সত্যিই চাঁদে গিয়েছিল? (পর্ব-২)

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০১৮ | ১২:৪৬ অপরাহ্ণ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ | ২:৪৯ অপরাহ্ণ

এই পোস্টটি 992 বার দেখা হয়েছে

মানুষ কি সত্যিই চাঁদে গিয়েছিল? (পর্ব-২)

অ্যাপেলো ডিভিডিতে এক মুভির অংশবিশেষ:
১৯৯৮ সালের দিক Capicorn one নামে কেটি মুভি মুক্তি পেয়েছিল। ঐ মুভিটিক মঙ্গলগ্রহে মানুষর অবতরনের একটি কাল্পনিক কাহিনির উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছিল। চন্দ পৃষ্ঠে অবতরণের অ্যাপোলো ভিডিওগুলের সঙ্গে গবেষকরা এই Capicorn one নামক মুভিটির বিস্তর মিল পরিলক্ষিত করেছে। তাদের দাবি নাসা যে সমস্ত ভিডিও ফুটেজগুলো সরবারাহ করেছে তা পৃথিবীতেই তৈরি করা হয়েছে।
১) ক্রসহেয়ার অদৃশ্য (চিত্র-১): সাধারণত ক্যামেরার মাধ্যমে কোন ছবি তোলার সময় এই ‘যোগ (+)’ চিহ্ন আকৃতির এই কৃসহেয়ার দেখা যায়। যাকে ‘ফিডুসিয়াল’ বলা হয়। কিন্তু অ্যাপোলো মিশনের অনেক ছবিতেই এই ক্রসহেয়ারের এক অংশ অদৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। চিত্রে আনপরা দেখতে পাচ্ছেন একটি বস্তুর সামনে অবস্থিত ক্রসহেয়ারের কিছু অংশ অদৃশ্য এবং পেছন দিকে এর কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। এর মাধ্যমে গবেষকদের মন্তব্য এ্যাপোলো মিশনে যে ছবিগুলি জনসমক্ষে প্রচার করা হয়েছিল তা সম্পূর্ণ প্রতারণাপূর্ণ ছিল। তাদের দাবী বাস্তবিক পক্ষে কোন বস্তুর সামনে অবস্থিত ক্রসহেয়ার আবার পেছনদিক থেকে প্রকাশ নিতান্তই হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়।
২) অদ্ভুদ ‘C’: অ্যাপোলো ১৬ এর যেসব আলোকচিত্রগুলো নভোচারীরা এনেছিল সেগুলোর মধ্যে থেকে একটি পাথরের গায়ে পরিস্কারভাবে ‘C’ আকারের একটি চিহ্ন ফুটে উঠেছে। এই অদ্ভুদ ‘C’ চিহ্ন আসলে কি কারণে ফুটে উঠেছে। অথচ অ্যাপোলো ১৬ এর মূল নেগেটিভে এ ধরনের ‘C’ চিহ্নের হদিস পাওয়া যায় না। এর মাধ্যমে অখ্যাত ‘C’ অক্ষরটি গবেষকদের জন্য এখনও গবেষনার রহস্য হয়ে দাড়িয়েছে।
৩) বিল ক্যাসিংকে হত্যা: মানুষের চাঁদে যাওয়ার পুরো ব্যাপারটি নিয়ে গবেষণার সময় বির ক্যাসিং নামক একজন গবেষকই প্রথম এর পুরো বিষয়টি যে একটি প্রতারণা ছিল তা তুলে ধরেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, কথিত হয় নাসাই এই দুঃসাহসিক ও সত্যবাদী বিজ্ঞানীকে খুন করেছিল। নাসা চেয়েছিল যাতে তাদের এ প্রতারণার বিষয়টি যেন বিশ্ববাসীর কাছে জানাজানি না হোক।
৪) ৮০% লোক বিশ্বাস করে না: এক জরিপে দেখা গেছে খোদ আমেরিকানদের মধ্যেই প্রায় ৮০% লোক বিশ্বাস করে না যে, তাদের দেশ চাঁদে যেতে পেরেছে। যেখানে আমিরিকানবাসীদের মধ্যেই এ সন্দেহ তবে বিশ্ববাসীর তো কথাই নেই। অবশ্য এই প্রতারণার বিষয়টি Fox TV সহ বিভিন্ন গবেষকদের প্রতিবেদনই আমেরিকান সাধারণ জনগণদের মধ্যে আজকের এই সন্দেহ সৃষ্টির কারণ।
৫) অদৃশ্য আলো (চিত্র-৩): অ্যাপোলোর একটি মিশন থেকে প্রকাশিত আলোকচিত্রসমূহের ছায়াময় স্থানে কিছু অদ্ভূদ আলো স্টুডিওর স্পটলাইটের মতই দেখতে। চন্দ্রপৃষ্ঠে এ ধরনের অদ্ভূদ আলোর হদির পাওয়া চন্দ্র বিজয়ের পুরো কাহিনীকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।
৬) Area 51: অ্যাপোলো মিশনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রতারণা ছিল ‘গহ্বর’। অ্যাপোলোর অনেক ছবিতে যেসব গহ্বরের ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল সে একই প্রকার গহ্বর ও পুরো চন্দ্র পৃষ্ঠের এলাকার সঙ্গে Area 51 নামক একটি স্থানের বিরাট মিল রয়েছে যেটি আমেরিকায় অবস্থিত। সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এ স্থানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। ধারণা করা হয় Apolo এর প্রথম মিশনের মূল অভিনয়টি এ স্থানেই ঘটেছিল।
৭) এত স্পষ্ট কিভাবে?: প্রত্যেক অ্যাপোলো আলোকচিত্রগুলো খুব স্বচ্ছ এবং স্থিরভাবে প্রদর্শিত হয়েছিল। কিন্তু নভোচারীরা যেসব ক্যামেরা চন্দ্রপৃষ্টে ব্যবহার করেছিল সেখানে তারা কোন ভিউফাইন্ডার এবং লাইটমিটার ব্যবহার করে নি কিন্তু তা সত্ত্বেও কিভাবে তাদের তোলা ঐ ছবিগুলো এত স্বচ্ছ এবং স্থির দেখাচ্ছিল। তাছাড়া প্রতিটি ক্যামেরা তাদের বুকে অবস্থান করছিল্ সুতরাং ঐ অবস্থায় আদৌ এরকম স্বচ্ছ ছবি তোলা সম্ভব কিনা তা পৃথিবীতেই বিজ্ঞানীরা গবেষণা করতে গিয়ে বিস্তর তফাৎ উপলব্ধি করেন।
৮) কৃত্রিম ব্যাকগ্রাউন্ড (চিত্র-৪): এখানে চন্দ্র পৃষ্ঠের যে দুটি আলোকচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে তা যদিও একই স্থান থেকে তোলা হয়েছিল কিন্তু দুটো ছবিতেই কিছু সূক্ষ্ম বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান। চিত্র যে দুটি পর্বত দেখানো হয়েছে তাতে ঐ পর্বতসমূহের রঙের অমিল খুঁজে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানী রলফ রেনে দুটি পর্বতের ডানদিকের অংশটিতে কিছু গড়মিল খুঁজে পান যা থেকে তিনি সিদ্ধান্ত দেন যে নিশ্চয়ই এখানে কৃত্রিম কোন ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করা হয়েছে। গত দু’সংখ্যায় যেসব যুক্তি ও প্রমানদি মানুষের চন্দ্র বিজয়ের বিপক্ষে পাঠকদের সামনে দাঁড় করানো হল তা ছিল বিভিন্ন বিজ্ঞানী, ফটোগ্রাফার ও মিডিয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের একাংশ। এর বাইরেও অৎস্ন রোমাঞ্চকর প্রমাণ রয়েছে যা এ স্বল্প পরিসরে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। গবেষণায় তারা এটাও তুলে ধরেছেন যে কিভাবে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন অর্থাৎ আজকের রাশিয়ার চন্দ্র গবেষণার অগ্রগতিকে এক ঘা দেখানোর জন্য আমোরিকান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি সহ আমেরিকান বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গরা বিশ্ববাসীকে চন্দ্র বিজয় নামক প্রতারণা করার মাধ্যমে নিজেদের সুনাম ও সম্মান কুড়িয়ে নিয়েছিল। মূলত চন্দ্র বিজয়ের পুরো কাহিনীটিকেই এরা দাবী করছে, প্রতিযোগিতাময় বিশ্বরাজনীতির একটি প্রতারণাপূণ কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে শ্রী ভগবান কর্তৃক প্রেরিত শাস্ত্রে থেকেও আমরা দেখতে পায় প্রকৃতপক্ষে এটি সম্ভব নয়।
শ্রীমদ্ভাগবতের ৫ম স্কন্ধ, ২২ অধ্যায়ের ৮নং শ্লোকে ভগবান বলেছেন,  “এবং চন্দ্রমা অর্কগভস্তিভ্য উপরিস্টাল্লক্ষযোজনত উপলভ্যমানোহর্কস্য সংবৎসরভুক্তিং পক্ষাভ্যাং সপাদর্ক্ষাভ্যাং দিননৈব পক্ষভুক্তিমগ্রচারী দ্রুততরগমনো ভুঙক্তে॥
অনুবাদ: “সূর্য কিরণের ১,০০,০০০ যোজন ঊর্ধ্বে রয়েছেন চন্দ্র, যিনি সূর্যের থেকেও দ্রুততর গতিতে ভ্রমণ করেন। চন্দ্র দুই পক্ষে সূর্যের সংবৎসরের সমান দূরত্ব অতিক্রম করেন, সোয়া দুই দিনে সূর্যের এক মাসের পথ অতিক্রম করেন, এবং এক দিনে সূর্যের এক পক্ষের সমান দূরত্ব অতিক্রম করেন।”
শ্রীল প্রভুপাদ এ শ্লোকের তাৎপর্যে লিখেছেন- “আমরা যখন বিচার করি যে, চন্দ্র সূর্যকিরণ থেকে ৮,০০,০০০ মাইল দূরে, তখন চন্দ্র অভিযানের কথা ভেবে আমরা অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হই। চন্দ্র যেহেতু এত দূরে অবস্থিত, তা হলে অন্তরীক্ষ যান যে কিভাবে সেখানে গেছে তা আমাদের কাছে একটি সন্দেহজনক রহস্য। আধুনিক বৈজ্ঞানিকদের গণনায় একের পর এক পরিবর্তন হয়, এবং তাই তারা এত অনিশ্চিত। বৈদিক শাস্ত্রের গণনা কিন্তু নির্ভূল, এবং তাই আমাদের তা গ্রহণ করা কর্তব্য। বৈদিক জ্যোতিষ গণনা বহুকাল পূর্বে করা হয়েছিল, এবং তা বৈদিক শাস্ত্রে লিপিবদ্ধ হয়েছে এবং তা আজও নির্ভূল। বৈদিক গণনা এবং আধুনিক যুগের গণনার মধ্যে কোন্ই শ্রেষ্ঠ সে সম্বন্ধে অন্যদের মনে সন্দেহ থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের মনে বৈদিক গণনার অভ্রান্ততা সম্বন্ধ্যে কোন সন্দেহ নেই।
শ্রীল প্রভুপাদ আরও ব্যক্ত করেন, এক গ্রহ থেকে অন্য থেকে অন্য গ্রহে যাওয়ার জন্য আমাদের উপযুক্ত দেহের প্রয়োজন। যেমন জলে যদি কেউ থাকতে চাই তবে তাকে মাছের দেহ প্রাপ্ত হতে হবে। তাই চন্দ্র পৃষ্ঠে অবতরণ করতে হলেও আমাদেরকে সে রকম একটি দেহ প্রকৃতি দিলেই আমরা সেখানে বসবাসের যোগ্য হতে পারি। অন্যথা আমাদের পক্ষে এটি সম্ভব নয়। হরে কৃষ্ণ॥

(মাসিক চৈতন্য সন্দেশ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে প্রকাশিত)

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।