প্রেম-কোন প্রেম? স্বীকৃত নাকি বিকৃত ?

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২২ | ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২ | ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 167 বার দেখা হয়েছে

প্রেম-কোন প্রেম? স্বীকৃত নাকি বিকৃত ?

প্রেম গীতিকারেরা তার গান গেয়েছে, কবিরা তার গুণকীর্তনে মুখর। সাহিত্যিকেরা তাকে ঘিরে কল্পনার জালবুনেছে, চলচিত্র নাটক, সিনেমা সবই তার উপর নির্ভর করে চলে। এক অভিজ্ঞতা হতে দেখা যায় এই জাগতিক প্রেম যদি সুচারু রূপে উপস্থাপিত না হয় তবে সুপার ফ্লপ হয় চলচিত্রটি। কিন্তু এই সব কি বাস্তব! নাকি জড় জগতের মতোই অনিত্য । সত্যিকার এক উন্নত প্রেম রয়েছে আর সেই প্রেমে রয়েছে সত্যিকারের এক আনন্দ, যা এই জড়-জাগতিক প্রেমিকরা কল্পনাও করতে পারে না। ১টি চিরচেনা ভালবাসার গল্প হতে আমরা দেখা হতো। ধীরে ধীরে পাপ্পু পিংকির এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারি। পাপ্পু প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। পিংকির প্রতি ও পিংকি একই কলেজে পড়ে। কলেজে প্রেমাসক্ত পাপ্পু একদা প্রেম নিবেদন করে যেতে প্রায়ই তাদের একে অপরের সাথে পিংকিকে। কিন্তু পিংকি দৃঢ়তার সাথে তা প্রত্যাখান করে এবং বলে আমরা শিক্ষাঙ্গণে এসেছি পড়ালেখা করতে, প্রেম-ভালোবাসা করতে নয়। পিংকির উক্তির বিরোধিতা করে পাপ্পু বলে প্রেম সত্য! প্রেম নিত্য! প্রেম এসেছে স্বর্গ হতে। প্রেম আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। আমাদের সময় এখন তারুণ্য এই বয়সেই ভালবাসা বিকশিত হয়। তাছাড়া তুমি বল আমার জন্য তোমার হৃদয়ে সামান্য আকুতিও কি নেই। এভাবে আমার হৃদয় ভেঙ্গে দিও না পিংকি, এস আমরা ভালবাসার সমুদ্রে অবগাহন করি। কথার কোন জবাব না দিয়ে পিংকি সেই স্থান ত্যাগ করে। বেদনাহত পাপ্পু অপেক্ষা করতে থাকে পিংকির প্রেমপ্রাপ্তির জন্য ঘটনাক্রমে একদল বখাটে যুবক আক্রমণ করে পিংকিকে। অতঃপর সমুহ বিপদ হতে উদ্ধার প্রাপ্তির প্রতিক্ষায় আর্তনাদ করে পিংকি। স্বাভাবিকভাবেই মহাপরিত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় পাপ্পু, মহাশৌযোর সাথে সেই যুবকদের উত্তম মধ্যম প্রহারের মাধ্যমে বিতাড়িত করে পাপ্পু। অতপর এক রোমাঞ্চকর কথোপকথনের মধ্য দিয়ে প্রেম হয়ে যায় পাপ্পু ও পিংকির। সেই প্রেম যখন প্রণয় এর দিকে ধাবিত, তখন প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায় পিংকির বেরসিক পিতা। তিনি বলে উঠেন না না না। ঐ ফকিরের ছেলের সাথে তোর প্রেম হতে পারে না, কি আছে ওর’ ‘ওর একটা সুন্দর মন আছে, আছে এক বুক ভালবাসা। তা দিয়েই সে আমাকে সুখী করতে পারবে। উত্তর দেয় পিংকি। জবাবে পিংকির পিতা বলে, আমি তা কখনো মেনে নেব না। নিজেদের স্ব স্ব অবস্থানে অনড় থাকেন পিংকি এবং পিংকির পিতা। একদা এক নিশীথ রাতে সামাজিক মান-মর্যাদার ভয় ত্যাগ করে ঘর থেকে পলায়ন করে পিংকি। দুই দিন দুইরাত পাপ্পুর সাথে বহুস্থান ঘুরে বেড়ানোর পর অনেকটা বাধ্যতামূলকভাবে পিংকির পিতা তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়। অতপর মহাসমারোহে বিয়ে হয়ে যায় পাপ্পু ও পিংকির। পাপ্পু পেল পিংকিকে আর পিংকি পেল পাপ্পুর এক বুক ভালবাসা অতএব তারা মহাসুখী? পাঠক ভাবছেন এটাতো এক সাধারন গল্প এখানে এত বৈচিত্র্য আনার দরকার কি? হ্যাঁ এটি একটি চিরচেনা ভালবাসার গল্প। জাগতিক প্রেমগুলো এরকমই। কারও কারও ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতাও থাকতে পারে, কিন্তু সব গল্পের মর্মকথা একটায় তুমি আমার, আমি তোমার, আর একটু বিস্তৃত করলে হয় তুমি আমার ইন্দ্রিয়ভৃপ্তি কর, আমি তোমার ইন্দ্রিয় তৃপ্তি করব। কিন্তু যেই মুহুর্তে সেই ইন্দ্রিয় তৃপ্তি সাধন। বন্ধ হয়ে যায় তখন শুরু হয় ঝগড়া-বিবাদ, অশান্তি, মৃত্যু ঘটে তথাকথিত ভালবাসার একে অপরকে করতে থাকে ঘৃণা। উভয়ের মধ্যে সৃষ্টি হয় অবিশ্বাসের দেয়াল। প্রবাদ আছে ‘অভাব যখন দুয়ারে দাড়ায় ভালবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়। সৃষ্টি হয় ভয়, কিভাবে? আসুন দেখে আসি। কেমন আছে পাপ্পু-পিংকি দম্পতি। পাপ্পুর মামাত ভাই রাহুল দেখতে যায় পাপ্পু পিংকিকে। যথাযথ আথিতেয়তা গ্রহণের পর রাত ১০টায় খেতে বসে রাহুল। পিংকিকে খাওয়ার জন্য অনুরোধ করল সে, কিন্তু পতিব্রতা পিংকি উত্তর দিল তুমি খেয়ে নাও, আমি আবার ওকে ছাড়া কিছুই মুখে দিই না। পতিভক্তিতে মুগ্ধ রাহুল ভোজন পর্ব শেষ করল। অতপর পাপ্পু এল, যথাবিহিত কথোপকথনের পর রাত্রিযাপনের উদ্দেশ্যে তারা শয্যাগত হল। তারপর রাত ১২টায় হঠাৎ স্ট্রোক করল পাপ্পু। চিকিৎসার কোন সুযোগ না দিয়েই মৃত্যু বরণ করল সে। স্বামীর মৃত্যুতে শোকাহত পিংকি আর্তনাদ করতে থাকে। তুমি চলে গেলে আমায় নিয়ে গেলে না কেন? এখন আমার বেঁচে থেকে কি লাভ? এই পৃথিবীতে থাকার তিল মাত্র সাধ নেই আমার। রাহুল আমার জন্য একটা চিতা বানিও তার দাহ হবার পূর্বে আমার যেন দাহ হয়। পাপ্পুর মৃত্যুতে রাহুলও যথেষ্ট শোকাহত কিন্তু এই মুহুর্তে সে তার কর্তব্যের কথা চিন্তা করল। সে পিংকিকে সান্তনা দিতে লাগল। কিন্তু পিংকির আর্তনাদ বাড়তে লাগল অবশেষে রাহুল পিংকিকে বলল তুমি কান্না করোনা পিংকি শব বেশীক্ষণ রাখা ভাল নয়, তুমি শান্ত হও, আমার আবার লোকজনকে খবর দিতে হবে। অতপর পিংকির উক্তি আমি কিছুই ভাবতে পারছিনা তুমি এখানে বসো রাহুল। রাহুল বলল এখন বসে থাকার সময় নয় আমি যায় লোকজনকে খবর দিতে। এই বলে যেই রাহুল বেরুচ্ছিল অমনি পিংকি ঝাপ দিল রাহুলের গায়ে আর চিৎকার করে বলল ওরে বাপরে, আমি এখানে একা থাকতে পারব না, ভয়ে মরেই যাব। এই হল জাগতিক প্রেমের নমুনা। যখন পাপ্পু পিংকির ইন্দ্রিয়তৃপ্তি করতে পেরেছিল তখন পিংকি পিতার আদেশ কিংবা সামাজিক মান মর্যাদার ভয় সব ত্যাগ করে রাতের পর রাত নির্বিঘ্নে সঙ্গ দিয়েছিল পাপ্পুকে কিন্তু সেই পাপ্পু যখন নিথর, নিস্তদ্ধ তথা ইন্দ্রিয়তৃপ্তি দানে অক্ষম। তখন পিংকির কাছে ভালবাসার পাপ্পুই হয়ে যায় চরম ভয়ের কারণ। এখানে বিশেষভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করা হল সেই সকল পতিব্রতা রমনীদের যারা স্বামীকে দেব জ্ঞানে মান্য করেন। কিন্তু বর্তমান জগতে স্থুল জাগতিক প্রেম দ্বারা গঠিত সম্পর্ক পুরুষ-নারীর কাছে কিংবা নারী-পুরুষের কাছে মৈথুনাঘার হিসেবে বিবেচ্য কেননা তারা যাকে প্রেম বলে গ্রহণ করে তা প্রকৃতপক্ষে কামেরই নামান্তর। এই কথায় সংশয় জাগা স্বাভাবিক আসুন এই জাগতিক প্রেম যে কাম তার একটা ভিন্ন প্রমাণ দেই। পাঠক বলুনতো কাম এর ইংরেজী কি? নিশ্চয় বলবেন Sexual desiare এর কয়েকটি সমার্থক ইংরেজী শব্দ বলুনতো Lust Passion Love. Love অর্থ ভালবাসা Sexual desiare অর্থ কাম তাকে এক করে ফেলছি কেন? এটি আমার কাজ নয় এটি দেওয়া হয়েছে At dey এর Student   to English এখানে আরো দেওয়া আছে ঞযব মড়ফ ষড়াব অর্থ কাম এটি হচ্ছে আপনার শব্দো অভিধানের কথা। বৈদিক শাস্ত্রে এই ধরণের প্রেমকে কাম বলে অভিহিত করে।


চৈতন্য সন্দেশ আগস্ট -২০০৮ প্রকাশিত

 

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।