এই পোস্টটি 285 বার দেখা হয়েছে
শাস্ত্রে অনেক নির্দেশাবলী রয়েছে, সেই নির্দেশনাগুলো যদি গৃহস্থ আশ্রমে ব্যবহার করতে চাই
তাহলে গৃহস্থ আশ্রম হচ্ছে ঠিক সেই ল্যাবের মতো।
ভগবানকে জানার অনেক মার্গ। যেমন-জ্ঞান মার্গ, ধ্যান মার্গ ও ভক্তি মার্গ। এখন আমরা যে পরিস্থিতিতে আছি এটি ঠিক অনেকটা বিশাল সমুদ্রের বড় বড় ঢেউয়ের মধ্যে একটি নৌকার মধ্যে সুরক্ষিত আছি। যদি আমরা বৈষ্ণব অপরাধ করি তাহলে আমরা নৌকা থেকে বাইরে পড়ে যাবো।
এই প্রবন্ধে আমরা যে বিষয়টি আলোচনা করব সেটা ভক্তদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে অন্য ভক্তদের সাথে ব্যবহার করব? তার জন্য আমি একটি ফর্মুলা প্রস্তুত করেছি GRIHASTHA- গৃহস্থ।
G-Grateful (কৃতজ্ঞ)
R-Respectful (শ্রদ্ধাশীল)
I- Introspection (আত্মসমীক্ষা)
H- Humble (বিনয় থাকা)
A-Adjust (মানিয়ে নেওয়া)
S- Service (সেবা করা)
T-Tolerant (সহিষ্ণু বা সহ্য করা)
H- Hopeful (ইতিবাচক দেখা)
A-Accept (গ্রহণ করা)
G-Grateful (কৃতজ্ঞ)
মহাপ্রভুর তৃতীয় শ্লোকটা যদি ব্যবহার করি, তখন সহ্য করার ক্ষমতা পরীক্ষা করতে পারব। কিন্তু অন্য আশ্রমে সেরকম সুযোগ থাকে না (ব্রহ্মচারী, বানপ্রস্থ, সন্ন্যাসী আশ্রম)। গৃহস্থ আশ্রমে এই সুবিধা আছে আপনার সঙ্গী আপনাকে বলবে, আপনার এই ভুল আছে। যেমন-আপনার স্ত্রীকে বলবেন, তোমার এই ভুল আছে, তখন আপনার স্ত্রী একশত ভুল দেখাবে আপনাকে। তখন সহ্য করার ক্ষমতা পরীক্ষা করতে পারবেন। এই হচ্ছে গৃহস্থ আশ্রমের সুবিধা।
আমরা যারা ভক্তি জীবনে আছি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। যেমন-আমরা ভগবানের প্রতি কৃতজ্ঞ। যেহেতু তিনি আমাকে দুর্লভ মানব দেহ দান করেছেন, যেটা দিয়ে আমরা ভক্তি করতে পারছি। শ্রীগুরুদেবের প্রতি কৃতজ্ঞ। যেহেতু তিনি আমাদের সঠিক মার্গ দিয়েছেন। স্ত্রী বা স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞ। ভগবদ্ধামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছি। গৃহস্থ আশ্রমে আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনে সহায়ক হতে পারে, এইজন্য একজন সঙ্গী দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য আশ্রমে দেখা যায় সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী ওনারা একা একা ভক্তি জীবনে এগিয়ে যায়। কিন্তু গৃহস্থ আশ্রমে একজন সঙ্গী দেওয়া হয়েছে, যাতে করে একজন আরেকজনের হাত ধরে ভক্তিমার্গে এগিয়ে যেতে পারে। শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু যে আদেশগুলো দিয়েছেন, তা আমাদের জীবনে আচরণ করার জন্য।
গৃহস্থ জীবন হচ্ছে একটা ল্যাবের মতো। যারা বিজ্ঞানের ছাত্র আছে, তারা কিছু তত্ত্ব অধ্যয়ন করেন জানার জন্য। কিন্তু ল্যাবে বিজ্ঞানের ছাত্ররা ফিজিক্স, কেমিস্ট্রির ওপর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে তত্ত্বটি সঠিক কি না? সেভাবে শাস্ত্রে অনেক নির্দেশাবলী রয়েছে, সেই নির্দেশনাগুলো যদি গৃহস্থ আশ্রমে ব্যবহার করতে চাই তাহলে গৃহস্থ আশ্রম হচ্ছে ঠিক সেই ল্যাবের মতো। কেননা সেখানে, মহাপ্রভুর তৃতীয় শ্লোকটা যদি ব্যবহার করি, তখন সহ্য করার ক্ষমতা পরীক্ষা করতে পারব। কিন্তু অন্য আশ্রমে সেরকম সুযোগ থাকে না (ব্রহ্মচারী, বানপ্রস্থ, সন্ন্যাসী আশ্রম)। গৃহস্থ আশ্রমে এই সুবিধা আছে আপনার সঙ্গী আপনাকে বলবে, আপনার এই ভুল আছে। যেমন-আপনার স্ত্রীকে বলবেন, তোমার এই ভুল আছে, তখন আপনার স্ত্রী একশত ভুল দেখাবে আপনাকে। তখন সহ্য করার ক্ষমতা পরীক্ষা করতে পারবেন। এই হচ্ছে গৃহস্থ আশ্রমের সুবিধা।
কিন্তু দাম্পত্য জীবনে কিছু নীতি আছে, সেগুলো যদি অনুসরণ না করি তাহলে কিছু সমস্যা হতে পারে। এজন্য আমাদেরকে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে হবে। আর আমরা যার সাথে থাকছি তাকে মূল্যায়ন করতে পারি না, যখন মূল্যায়ন করি তখন অনেক দেরী হয়ে যায়। ঠিক সেরকম একটি ঘটনা বলব, যা হায়দ্রাবাদে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঘটেছিল। তারা ছিল সদ্য বিবাহিত এবং তাদের মধ্যে সবসময় ঝগড়া লেগে থাকতো। একদিন ফোন দিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই আমাকে অভিযোগ করল। প্রথমে স্ত্রী আমাকে অভিযোগ করল, আমার প্রভু সবসময় ভেজা গামছা, ধুতি বিছানার ওপর রেখে চলে যায়। তারপর স্বামী অভিযোগ করল, মাতাজীদের একটি স্বভাব আছে, কপালের বিন্দীটা নিয়ে আয়নাতে লাগিয়ে রাখা। ঠিক আমার স্ত্রীও তাই করে, যার জন্য আয়নাটা পুরো দাগ দাগ হয়ে যায়। কিছুদিন পর তার স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তারপর প্রভুটা একদিন বিশাখাপত্তনমে আমার অফিসে এসেছিল এবং আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এখন কিভাবে সময় অতিবাহিত করছেন? তিনি বললেন, আমি প্রতিদিন মার্কেটে গিয়ে বিন্দীর পেকেট কিনে নিয়ে এসে আয়নাতে লাগাই। কারণ আমার স্ত্রীকে খুব মনে পড়ে, আমি তার সাথে ঝগড়া করতাম আয়নাতে বিন্দী লাগানোর জন্য। তখন সেই কথা শুনে আমার খুব দুঃখ হয়েছিল। এজন্য আমরা যার সাথে থাকবো তাকে মূল্যায়ন করতে হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। এই কলিযুগে সঙ্গ শক্তি বা ভক্তসঙ্গ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর বললেন- “একাকী আমার, নাহি পাই বল, হরিনাম সংকীর্তনে।” কিন্তু আমরা এই ভক্ত সঙ্গকে খুব সস্তাভাবে নিই কেননা ইস্কনের দৌলতে সেটা সহজে পেয়েছি। ভক্তসঙ্গ না হলে মায়ার ফাঁদে পড়ে যাব। হরিণ যখন সংঘবদ্ধভাবে থাকে তখন বাঘ আক্রমণ করতে পারে না কিন্তু যখন একা থাকে তখন তাকে বাঘ আক্রমণ করে। ঠিক তেমনিভাবে, আমরা যখন ভক্তসঙ্গে থেকে সাধন-ভজন করি তখন মায়া আমাদের কিছু করতে পারবে না। যদি আমরা একা একা সাধন-ভজন করার চেষ্টা করি তাহলে মায়া আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়বে। তখন আমরা ভক্তদের সঙ্গ থেকে দূরে চলে যাবো। অনেক সময় আমরা ভক্তদের চলাফেরাতে কিছু দোষত্রুটি দেখে নিন্দা মন্দ করি, যার ফলে আমরা বৈষ্ণব অপরাধ করি। সেই সম্বন্ধে শ্রীমৎ নিরঞ্জন স্বামী মহারাজ এক ভক্তকে বললেন-মনে কর, গদাভবনে আমরা সবাই প্রসাদ পেলাম। তারপর লাইন ধরে হাত ধুয়ে নিলাম, তারপর অন্যদের দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাদের হাত কত নোংরা। তাই আমি মনে করতে পারি, আমি ভক্ত হয়ে গেছি, অন্যরা ভক্ত হতে পারবে না। কিন্তু তারাও লাইনে দাড়িয়ে আছে, ধীরে ধীরে তারা বেসিনের দিকে এগিয়ে যাবে। তারপর তারা হাত ধৌত করবে আর হাতে নোংরা থাকবে না অর্থাৎ ভক্তিজীবনে তারাও গুরুদেব ও ভগবানের চরণে আশ্রয়ে আছে, অর্থাৎ তাদের দোষত্রুটিগুলো বা অনর্থগুলো গুরুদেব ও ভগবানের সেবা করার ফলে ধীরে ধীরে নিবৃত্ত হয়ে যাবে।
তাই ভক্তদের চলাফেরাতে কিছু দোষত্রুটি দেখে নিন্দামন্দ করা উচিত নয়। কারণ তার ফলে বৈষ্ণব অপরাধ হবে, আর আমরা বৈষ্ণব অপরাধের ফলে ভক্তিজীবন থেকে অনেক দূরে চলে যাব। এমনকি ভক্তদেরও বাবা-মার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। কারণ বাবা-মার কারণে আমরা এই মনুষ্য শরীর প্রাপ্ত হয়েছি। শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে, এই মনুষ্য শরীর পাওয়াটা দুর্লভ। তারচেয়ে দুর্লভ জিনিস হচ্ছে মনুষ্য জন্ম পেয়ে ভক্তসঙ্গ করা।
R-Respectful (শ্রদ্ধাশীল)
একজন অন্যজনকে সম্মান দিতে হবে। কারণ আমরা যাদের সাথে চলাফেরা করি তারা কোনো সাধারণ মানুষ নয়, সবাই হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করে, তাই সবাই বৈষ্ণব। মহাপ্রভু যখন জগন্নাথপুরীতে ছিলেন, তখন ভক্তরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, বৈষ্ণব কে? মহাপ্রভু উত্তর দিয়েছেন, যার মুখে একবার কৃষ্ণ নাম শোনা যায়, সে তো বৈষ্ণব। তার মানে আমাদের বাড়িতে যারা আছে তারাও তো সবাই বৈষ্ণব তাহলে আমাদেরকে কত সতর্ক থাকতে। হবে, তাদের সাথে ব্যবহারে। আমি চাই আমার স্ত্রী যেন আমার মত করে চলে কিন্তু সে নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য কিছু সময় লাগবে। যেমন- যখন কেউ নতুন বিয়ে করে বাড়ীতে বউ নিয়ে আসে, তখন স্বামীর আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সমন্বয় করতে কিছু সময় লাগবে। কারণ তার স্ত্রী বাবার বাড়ীতে ২০-২৫ বছর তার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ছিল, তাই তার ব্যবহারের সাথে আত্মীয়-স্বজনদের ব্যবহার মিল থাকতে পারে।
কিন্তু স্বামীর বাড়িতে সবাই নতুন সদস্য তাই তাদের সমন্বয় করতে কিছু সময় লাগবে। যেমন: পুরাতন মোবাইল থেকে নতুন মোবাইলে নাম্বার স্থানান্তর করার জন্য কিছু সময় লাগবে। স্থানান্তর করার সময় যদি মোবাইলের বাটন নিয়ে চাপাচাপি করো তাহলে মোবাইল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ঠিক তেমনিভাবে আরো কিছু সময় লাগে, নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য, তা না হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তির সৃষ্টি হবে।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য, স্ত্রীকে ভালোবাসতে হবে এবং কিছু সময় দিতে হবে নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য। তখন সে তার স্বামীর আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সমন্বয় করতে শিখবে এবং সবাইকে সম্মান করবে। যেমন ইংরেজীতে একটি কথা আছে- If you love me, then you love my dog. একজন স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে তার স্বামীর সাথে সম্পর্কিত সবাইকে সম্মান করা, বিশেষ করে শাশুড়ী মাকে সম্মান করতে হবে। কারণ বিশেষ করে বাড়িতে যে ঝগড়া হয় তা বেশিরভাগ শাশুড়ীদের সাথে হয়। আমাদেরকে আচরণে সতর্ক থাকতে হবে। তারা বেশী কিছু চাই না শুধু একটু সম্মান চায় বা কিছু করার আগে তাকে জিজ্ঞেস করা। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, যেমন আপনি রন্ধন করবেন। কিন্তু তার আগে যদি আপনি আপনার শাশুড়ী মাকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে তিনি অনেক আনন্দ পাবেন। যদি রন্ধন করতে সমস্যা হয়, যেমন-(আলু সিদ্ধ কম হয়েছে, সবজিটা খুব ঝাল হয়েছে ইত্যাদি) তখন তিনি একমত পোষণ করবেন, এটা হচ্ছে রহস্য বা সাইকোলজি থ্রীংক যখন জিজ্ঞাসা করে আমরা সেবা করি।
এজন্য স্বামীর উচিত স্ত্রীকে সম্মান করা এবং স্ত্রীর উচিত স্বামী, শাশুড়ী, আত্মীয়-স্বজনকে সম্মান করা। তাহলে আমরা যেভাবে ব্যবহার করব বাচ্চারা তাই শিখবে। গুরুকে সম্মান করা মানে তার জন্য রন্ধন করা, কাপড় ধোয়া ইত্যাদি কিন্তু নয়। গুরুকে সম্মান করা মানে তার সময় নষ্ট না করা। যেমন পারিবারিক সমস্যার কথা, ছেলের চাকুরী হয়ে যাক ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলা উচিত নয়। কিন্তু আমাদের উচিত গুরুদেবের কাছ থেকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা। কারণ আমরা যদি আধ্যাত্মিকভাবে এগিয়ে যাই তাহলে গুরুদেব খুব খুশি হবেন।
আশ্রমকে সম্মান দিতে হবে কারণ-আমাদের ইস্্কনে সন্ন্যাস, ব্রহ্মচারী ও গৃহস্থ আশ্রম রয়েছে, সেই আশ্রমের আলাদা আলাদা মর্যাদা রয়েছে। তাই আশ্রমকে সম্মান করা উচিত। আশ্রমকে সম্মান দেওয়া মানে বেশি বেশি কথা না বলা অন্য আশ্রমের ভক্তদের সাথে। কারণ ঐ আশ্রমের ভক্তদের কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে, কিন্তু কখনো কখনো প্রচারের স্বার্থে আমরা আমাদের সীমানা অতিক্রম করে ফেলি। শাস্ত্রে বলা আছে, কার সাথে আমাদের কতক্ষণ কথা বলতে হবে। তা না হলে আমাদের বৈষ্ণব অপরাধ হয়ে যাবে।
বিশেষ করে মাতাজীদের জন্য শাস্ত্রে অনেকগুলো নিয়ম দেওয়া আছে। তার মধ্যে ছোট ছোট নিয়মগুলো হল: জোরে না হাসা, হাসার সময় দাঁত যাতে দেখা না যায়, অন্য পুরুষের সাথে কথা বলার সময় পাশে যেন কেউ থাকে, একান্তে কারো সাথে কথা বলতে নেই। যেমন- রামায়ণে, যখন সীতামাতা ভগবান রামচন্দ্রের সাথে বনবাসে যাচ্ছিলেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর।
ছোট্ট মেয়ে, তেমন কোন সেবা ছিল না তাই তিনি বিরক্তি অনুভব করত। তখন রামচন্দ্র মাতা সীতাকে বললেন, সীতা তুমি রোজ সকালে অনুসূয়া মাতার কাছে যাও আর ওনাকে আশ্রমের সেবায় সাহায্য কর। বনবাসের সময় রামচন্দ্র যেখানে থাকত তার পাশে অনুসূয়া মাতার আশ্রম ছিল। আর রোজ সকালে সীতামাতা তাকে আশ্রমের সেবায় সাহায্য করার জন্য যেত। সেবাতে সন্তুষ্ট হয়ে একদিন অনুসূয়া মাতা বলল, সীতা আমি তোঁমাকে কিছু দিতে চাই, তখন সীতামাতা বলল, আমি কিছু চাই না।
আপনি আমাকে কিছু ভালো কথা বলুন, যেন উপকার হয়। আমি কিভাবে ভালো পত্মী হতে পারি, আমার স্বামীকে আনন্দ দিতে পারি। সেই সম্পর্কে আমাকে জ্ঞান দান করুন। তখন অনুসূয়ামাতা বলল, তোমার পতি না থাকলে একান্তে কারো সাথে কথা বলবে না। আর মানসিকভাবে অন্য পুরুষের কথা চিন্তা করবে না। যদি তোমার পতি তোমাকে গোপনীয় কথা বলে সেটা তোমার কাছে রাখবে, অন্যের কাছে বলতে নেই।
পত্নীরা হচ্ছে সুতার মত। তাই স্ত্রীরা পরিবারের সদস্যদেরকে সুতার মতো ধরে রাখবে যেমন-(বাপের বাড়ী ও শশুর বাড়ীকে একসাথে ধরে রাখতে হবে)। স্ত্রীদেরকে ধৈর্য ধরে সহ্য করতে হবে। স্ত্রীরা অনেক শক্তিশালী, একটা পরিবারকে ভালো করতে পারে আবার খারাপও করতে পারে। এভাবে আমাদেরকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। এমনকি যারা ভক্ত নয় তাদের সাথে কথা বলার সময় সতর্ক থাকতে হবে। যারা আমাদের চেয়ে ভালো ভক্ত তাদের সঙ্গ করতে হবে। আর যারা ভালো ভক্ত নয় তাদের সঙ্গ দিতে হবে। চলমান…
লেখক পরিচিতি: ড.নিতাই সেবিনী দেবী দাসী মুম্বাইয়ে একটি গুজরাটি ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অনেক সিনিয়র ভক্তদের দর্শন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি পরে ১৯৯৭ সালে পূর্ণকালীন ভক্ত হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯৮ সালে শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় দীক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ব্যবস্থাপনায় একটি পিজি ডিপ্লোমা সহ বাণিজ্যে স্নাতক, শিক্ষায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি ইস্কনের ডিভাইন টাচ স্কুলের অধ্যক্ষ, সংগ্রহে সক্রিয়ভাবে জড়িত, উৎসব সমন্বয়, গৃহস্থ প্রচার, কলেজ প্রচার এবং তার স্বামী শ্রীমান সাম্বা দাস, সভাপতি ইস্কন বিশাখাপত্তনমের সাথে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।