ফল বেশি খাওয়া কি খারাপ?

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ৭:০১ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 14 বার দেখা হয়েছে

ফল বেশি খাওয়া কি খারাপ?

কোনো কিছুই বেশি ভালো নয়। ফলের ক্ষেত্রেও কথাটা খাটে। যদিও ফল স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে ধরা হয়। তবে ফল মানে প্রাকৃতিক চিনির উৎস। তাই ‘ন্যাচারাল ক্যান্ডি’ হিসেবে পরিচিত এই খাবার অতিরিক্ত খেলে স্বাস্থ্যের ওপর বাজে প্রভাব পড়তেও পারে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান থাকা দরকার।

কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা

প্রয়োজনের বেশি খেলে ভালো খাবার খেলেও শরীর খারাপ করে। ফলের ক্ষেত্রেও সেই কথাটা খাটে। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা নিবাসী পুষ্টিবিদ সারাহ গারন ‘ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, “যেমন- আপেল, বেরি, টক বা সিট্রাস-সহ অন্যান্য ফল প্রাকৃতিকভাবে শরীর আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি নানান পুষ্টি উপাদান দিতে পারে। তবে বেশি খেলে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে।”

ফিলাডেলফিয়া’র পুষ্টিবিদ ও ‘হেল্থফুল লেন নিউট্রিশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা অ্যামান্ডা লেন ব্যাখ্যা করেন, “বেশি ফল খেলে খিদা মরে যাবে। ফলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য খাবার যেমন- স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিন গ্রহণ করা হবে না।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্বাস করুন অতিরিক্ত ফল খাওয়ার কারণে ওজন কমানোর লক্ষ্যও ভ্রষ্ট হয়।” “তাছাড়া অতিরিক্ত ফল খাওয়ার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, যা কিনা আরও খাবার ইচ্ছে বাড়ায়” একই প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে অবস্থিত ‘ক্রেইভ নারিশমেন্ট’ এর পুষ্টিবিদ ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বনি নিউলাইন। নির্দিষ্ট কিছু রোগীর ক্ষেত্রে যে রকম প্রভাব ফেলে ‘প্রিডায়াবেটিস’ ও ‘ডায়াবেটিস’ এ আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেইট গ্রহণের দিকে খেয়াল রাখতে হয়। আর, ফলে প্রচুর পরিমাণে কার্ব থাকে। ‘টু-ডে ডায়াবেটিস ডায়েট’ বইয়ের মার্কিন লেখক পুষ্টিবিদ এরিন পালিনস্কি-ওয়েড এই বিষয়ে বলেন, “যাদের এই সমস্যা রয়েছে তাদের প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেও সাবধান থাকতে হবে। বেশিরভাগ ফলই কার্বোহাইড্রেইটে পরিপূর্ণ। তাই সামঞ্জস্যতা ও রক্ষাই হল প্রধান চাবিকাঠি।”

পরিমাণের পাশাপাশি কোন কোন ফল ও খাবার একসঙ্গে খাওয়া উচিত সেটা জানতে হবে। পালিনস্কি-ওয়েড পরামর্শ দেন, “যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা দিনে একবেলার খাবার হিসেবে বা নাস্তায় ফল খেতে পারেন। তবে অবশ্যই সঙ্গে থাকতে হবে প্রোটিন, আঁশ ও স্বাস্থ্যকর চর্বি বা তেল।” আবার যারা ‘গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনল’ বা পেট ও অন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন তারা সকালে, দুপুরে বা রাতের খাবারের সময় ফল খেলেও জটিলতায় পড়তে পারেন। হতে পারে সেটা গ্যাসের সমস্যা বা ফোলাভাব। পালিনস্কি-ওয়েড বলেন, “আইবিএস’ সমস্যা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়। তাই ফল খেয়ে জটিলতা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কোন ফলগুলো বাজে প্রভাব রাখবে না, সেগুলো বাছাই করতে হবে।”

ফলের মিষ্টতা কি ক্ষতিকর?

বিষয়টা হল ফলের মধ্যে আলাদাভাবে চিনি যোগ করা হয় না, প্রাকৃতিকভাবেই সেটা বেশি থাকে। স্বাস্থ্যের ওপরে তাই এর প্রভাব ভিন্ন। নিউলাইন বলেন, “কৃত্রিম চিনি ও প্রাকৃতিক চিনির ক্ষেত্রে দেহ আলাদা ভাবে সাড়া দেয়। ফলে থাকা প্রাকৃতিক মিষ্টি রক্তে ধীরে মেশে। এর কারণ হল ফলে থাকা আঁশ ও পলিফেনল্স, দেহে ধীরে ভাঙে। মানে শরীরে শোষিত হয় আস্তে ধীরে। যে কারণে ফলে থাকা চিনি দ্রুত রক্তে মিশে শর্করার মাত্রা তাড়াতাড়ি বাড়ায় না।”

তাই বলা যায় ফলের মিষ্টতা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং দৈনিক খাদ্যতালিকায় ফল যুক্ত করা শরীরের জন্য উপকার বয়ে আনবে বলে জানান পালিনস্কি-ওয়েড।

কতটা বেশি হলে অতিরিক্ত ফল খাওয়া বোঝায়?

নাস্তা হিসেবে ফল স্বাস্থ্যকর পছন্দ। তবে লেন পরামর্শ দেন, “খুব বেশি হলে দিনে চার থেকে পাঁচবার ফল খাওয়া যেতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “এই পরিমাণ ফল খাওয়া অতিরিক্ত না হলেও পরিমাণ এবং ভিন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ফলের সঙ্গে ‘শ্বেতসারহীন সবজি, মটরশুঁটি, পূর্ণ শস্য, উদ্ভিজ্জ ও প্রাণিজ প্রোটিনসহ খাওয়াই হবে সুষম খাদ্যাভ্যাসের লক্ষণ।”


মাসিক চৈতন্য সন্দেশ মার্চ ২০২৩ হতে প্রকাশিত

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।