এই পোস্টটি 437 বার দেখা হয়েছে
সখী রঙ্গদেবী দেবী দাসী: সম্প্রতি ইস্কন কর্তৃক শ্রীল প্রভুপাদের জন্মস্থান টলিগঞ্চ উদ্ধার হয়েছে, স্থানটি কলকাতায় অবস্থিত এবং সেখানে একটি নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কলকাতায় অবস্থিত শ্রীল প্রভুপাদের জন্মস্থানটি এখন ইস্কনের আওতাধীন। ইস্কন ভক্তদের অক্লান্ত প্রচেষ্টার পরে প্রাপ্ত এই স্থানটি শ্রীল প্রভুপাদের ১২৫তম জন্মদিনে উৎসর্গ করা হয়, যা ৩১ গত আগষ্ট ২০২১ উদ্যাপিত হয় এবং সরাসরি সম্প্রচারিতও হয়। গত ১১ আগষ্ট কলকাতা ইস্কনের ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্রীপাদ রাধারমণ দাস শ্রীল প্রভুপাদের জন্মস্থানটি প্রাপ্তির পুস্তক আকারে প্রকাশিত হয়েছে ঘোষণা করেছিলেন। ঐ স্থানটিতে ১৭টি ভাড়াটিয়া পরিবার বসবাস করছিল। ২০১১ সালে শ্রীশ্রীমৎ রাধানাথ স্বামী মহারাজের অবদানে কাঠাঁল গাছের নিচে ছোট ছোট চারটি কক্ষ নেয়া হয়েছিল। বস্তুত পক্ষে পুরো চার একর জায়গায় কিছু ঠিকা-ভাড়াটিয়ার কারণে ইস্কনের হাতের নাগালে আসতে অসুবিধা হচ্ছিল। ঠিকা-ভাড়াটিয়ার বিষয়টা হল জায়গায় মালিক সরকার এবং সকল ভাড়াটিয়া সরকারকে ভাড়া দিবে। যেখানে কিছু উপ-ভাড়াটিয়া (Sub-let) আছে যারা মূল ভাড়াটিয়াদের ভাড়া দেয়। পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে এই জায়গা ইস্কনকে হস্তান্তর করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। তিনি রাজি হয়েছিলেন এবং এই জায়গায় যে সমস্ত ভাড়াটিয়া থাকে তাদেরকে তাদের নায্য টাকা-পয়সা বুঝিয়ে নিয়ে ওখান থেকে অন্যত্র চলে যেতে বলেছিলেন। ইস্কন খুব সফলতার সহিত সেই কার্যটি সম্পন্ন করেছে।
এপর্যন্ত এজায়গায় ২৬০ ফুট পর্যন্ত সীমানা দেওয়া হয়েছে। প্রথম পরিকল্পনা হল কাঠাল গাছের সামনের অংশের জায়গাটিতে কাজ করা যেখানে শ্রীল প্রভুপাদ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। গত ৩১ আগস্ট চার কর্ণারে চার পাথর বসানো হয়। জয়পুরে শ্রীল প্রভুপাদের মার্বেলের পাদপদ্ম তৈরী হয়। এই মন্দিরটি ১৮০০ বর্গফুট জায়গায় পরিকল্পনা করা হয়েছে, ৩১ আগস্টের মধ্যে যা সম্পন্ন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং কর্মচারিরা নিরন্তর কাজ করে যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য পরবর্তীতে শ্রীল প্রভুপাদের সমান আকৃতি বিশিষ্ট মাহাত্মপূর্ণ বিগ্রহ, বৃন্দাবনে শ্রীল প্রভুপাদের সমাধি মন্দিরে স্থাপন করা হবে। এই মহৎ উদ্যোগের জন্য ২ একর তৎসংলগ্ন জায়গা ক্রয় করার পরিকল্পনা রয়েছে। ৩১ আগস্টের মধ্যে সমস্ত দলিল হাতে আসে। ১০ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অফিসিয়ালী ঘোষণা করেছেন, এই জায়গার স্বত্তাধিকারী এখন ইস্কন।
শ্রীল প্রভুপাদের প্রাণধন শ্রীশ্রী রাধা মদনমোহন জীউ এবং শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ জীউ মন্দির থেকে ১০০ মিটার দূরেই অবস্থিত তাঁর জন্মস্থানটি। জন্মস্থানের পাশ দিয়েই গঙ্গা প্রবাহিত। সেখানে একটি পুকুর খননের পরিকল্পনা হাতে রয়েছে। মাটি খনন করার সময় মাটি গুলো ব্রজ রজের মত হলুদ এবং ধূসর দেখাচ্ছিল। এই মাটিই শ্রীল প্রভুপাদের চরণ স্পর্শ করেছিল। সেখানের মাটি যমুনা এবং গঙ্গার মাটির সাথে মিশিয়ে তিনফুট উঁচু মাটির স্তুপ বানানো হবে। এই অসাধারণ কার্যটি সম্ভব হয়েছিল ভক্তবৃন্দের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং বিরতিহীন সেবার মাধ্যমে। জিবিসিবৃন্দ যাদের মধ্যে রয়েছে শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ, শ্রীমৎ শিবরাম স্বামী, শ্রীমৎ নিরঞ্জন স্বামী, এবং শ্রীপাদ গৌরাঙ্গ প্রভু, শ্রীপাদ ব্রজহরি প্রভু এই মহৎ সেবার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নিত্যধাম গত শ্রীনাথজী প্রভুর পরিবারের উদারতায় পুরো টাকার অঙ্ক দাঁড়ায় ১০৬.২৫ লক্ষ রুপি। ইস্কন পুনে ৭.৫৮ লক্ষ রুপি দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।