এই পোস্টটি 1306 বার দেখা হয়েছে
♥ শ্রী শ্রী অপরা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য ♥
মহারাজ যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণকে বললেন–হে কৃষ্ণ! জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম কি এবং তার মাহাত্ম্যই বা কি আমি শুনতে ইচ্ছা করি। আপনি অনুগ্রহ করে তা বর্ণনা করুন। শ্রীকৃষ্ণ বললেন-
হে মহারাজ! মানুষের মঙ্গলের জন্য আপনি খুব ভালো প্রশ্ন করেছেন। বহু পুণ্য প্রদানকারী মহাপাপ বিনাশকারী ও পুত্রদানকারী এই একাদশী ‘অপরা’ নামে খ্যাত। এই ব্রত পালনকারী ব্যক্তি জগতে প্রসিদ্ধি লাভ করে। ব্রহ্মহত্যা, গোহত্যা, ভ্রুণহত্যা, পরনিন্দা, পরস্ত্রীগমন, মিথ্যাভাষন প্রভৃতি গুরুতর পাপ এই ব্রত পালনে নষ্ট হয়ে যায়।
যারা মিথ্যা সাক্ষ্যদান করে, ওজন বিষয়ে ছলনা করে, শাস্ত্রের মিথ্যা ব্যাখ্যা প্রদান করে, জ্যোতিষের মিথ্যা গণনা ও মিথ্যা চিকিৎসায় রত থাকে, তারা সকলেই নরকযাতনা ভোগ করে। এই সমস্ত ব্যক্তিরাও যদি এই ব্রত পালন করে, তবে তারা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়। ক্ষত্রিয় যদি স্বধর্ম ত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়, তবে সে ঘোরতর নরকগামী হয়। কিন্তু সেও এই ব্রত পালনে মুক্ত হয়ে স্বর্গগতি লাভ করে।
মকররাশিতে সূর্য অবস্থানকালে মাঘ মাসে প্রয়াগ স্নানে যে ফল লাভ হয়, শিবরাত্রিতে কাশীধামে উপবাস করলে যে পুণ্য হয়, গয়াধামে বিষ্ণুপাদপদ্মে পিণ্ডদানে যে ফল পাওয়া যায়, সিংহরাশিতে বৃহস্পতির অবস্থানে গৌতমী নদীতে স্নানে, কুম্ভে কেদারনাথ দর্শনে, বদরিকাশ্রম যাত্রায় ও বদ্রীনারায়ণ সেবায়, সূর্যগ্রহণে কুরুক্ষেত্রে স্নানে, হাতি, ঘোড়া, স্বর্ণ দানে এবং দক্ষিণাসহ যজ্ঞ সম্পাদনে যে ফল লাভ হয়, এই ব্রত পালন করলে সেই সকল ফল লাভ হয়ে থাকে।
এই অপরা ব্রত পাপরূপ বৃক্ষের কুঠার স্বরূপ, পাপরূপ কাষ্ঠের দাবাগ্নির মতো, পাপরূপ অন্ধকারের সূর্যসদৃশ এবং পাপহস্তির সিংহস্বরূপ। এই ব্রত পালন না করে যে ব্যক্তি জীবন ধারন করে জলে বুদবুদের মতো তাদের জন্ম-মৃত্যুই কেবল সার হয়। অপরা একাদশীতে উপবাস করে বিষ্ণুপূজা করলে সর্বপাপ মুক্ত হয়ে বিষ্ণুলোকে গতি হয়। এই ব্রত কথা পাঠ ও শ্রবণ করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয়। ব্রহ্মাণ্ডপুরানে এই ব্রত মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে।
আপনারা নিজে একাদশী ব্রত পালন করুন ও অন্যকে পালনে উৎসাহিত করুন। শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন।