এই পোস্টটি 10 বার দেখা হয়েছে
দাদুর পাগলামি
একজন বুড়ো দাদু ছিলেন। তাঁর ছিল খিটখিটে স্বভাব। তিনি বাড়ির সকলকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘এই! মঙ্গলবার কবে? মঙ্গলবার কবে?’ তাঁর নাতি প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। সে বলতেই পারে না মঙ্গলবারটা কবে হতে পারে। পাড়ার ছেলেরা খেলছিল। তারা কেউ বলে আজ মঙ্গলবার, কেউ বলে কাল মঙ্গলবার। বুড়ো দাদু খুব রেগে গেলেন। বললেন, ‘তোদের পড়াশুনার কোনও দাম নেই। তোরা মঙ্গলবার কবে বলতেই পারছিস না। তোদের দিয়ে কি যে কাজ হবে? মঙ্গলবার কবে বলতে এত চিন্তা করতে হয়? একজন ছেলে বলে, ‘ও দাদু! আপনি তো বুড়ো। আপনি কেন মঙ্গলবার কবে বুঝতে পারছেন না?’ তারপর আর একজন বয়স্ক লোক সেখানে এলেন। তাঁকে দাদু জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কবে মঙ্গলবার?’ সেই বয়স্ক লোকটি বলতে লাগলেন, হে মশাই! আপনার বগলে ওঠা কি বই? দাদু বললেন, ‘ওটা পঞ্জিকা।’ বয়স্ক লোকটি বলেন, আরে মশাই, আপনার কাছেই পঞ্জিকা রেখেছেন। অথচ মঙ্গলবার কবে সেটা না দেখে দুনিয়ার লোককে জিজ্ঞেস করছেন। আপনি মনে হয় হৈ-হুল্লোড়টাই বেশি পছন্দ করেন। সেইজন্য মঙ্গলবার কবে বলে চেচাঁচ্ছেন? এইরকম লোক তো কোথাও দেখি না।’ তখন দাদু বললেন, হ্যাঁ ভাই! তুমি ঠিকই বলেছ। সব কটা পাগলদের কাছে জিজ্ঞেস করে আমি পাগল বনে গেলাম।’ তারপর দাদু চশমা চোখে আঁটিয়ে পঞ্জিকা দেখলেন মঙ্গলবার কবে।
হিতোপদেশ
মানুষ এত অমনোযোগী হয় যে, সাধু গুরু বৈষ্ণবের কাছে ভগবান সম্পর্কে প্রশ্ন না করে বা শাস্ত্র সম্বন্ধে তেমন অবগত নয় তাদের সঙ্গে ভগবান সম্পর্কে তর্ক করে। গীতা ভাগবত কাছে আছে, কিংবা সংগ্রহ করাও সম্ভব। তবুও তারা বৈদিক গ্রন্থ অধ্যয়ন না করেই হুজুগেই যুক্তি তর্ক করতে পটু। নিজের মঙ্গল কিসে হবে সেই কথা শুদ্ধ ভক্তসঙ্গ, বৈদিক শাস্ত্রগ্রন্থ- যা কিছু পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে সেখানে থেকেই জেনে নিতে হয়। তাদের প্রতি মনোযোগী না হয়ে আর সবর্ত্র যদি চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করা হয় মঙ্গলবার কিসে হবে, তা হলে লোকে তাকে পাগল বলে উপহাস করবে।
হরে কৃষ্ণ।
মাসিক চৈতন্য সন্দেশ, জানুয়ারী – ২০১১ ইং