ভিন গ্রহের প্রাণী: এলিয়েন

প্রকাশ: ৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 25 বার দেখা হয়েছে

ভিন গ্রহের প্রাণী: এলিয়েন

ইস্কন বিজ্ঞানী ড. রিচার্ড এল থম্পসন Aliend Identities অবলম্বনে : ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাস। একজন ৪৮ বছর বয়স্ক লোকের ওপেন হার্ট সার্জারী হচ্ছিল। প্রায় আধঘন্টা যাবৎ কার্ডিওপালমোনারী বাইপাস সার্জারী শেষে যখন তিনি চোখ খুললেন তখন তিনি এক নতুন কিছুর সম্মুখীন হলেন। তার নিজের ভাষায়, “আমি একটি কাঠের তৈরি সেতুর মধ্যে দিয়ে হাঁটছিলাম যেটির নীচে অপূর্ব সুন্দর স্বচ্ছ জল প্রবাহিত হচ্ছিল। সেতুর অপর পাশে সাদা ঢিলেঢালা পোশাক পরিহিত একজনকে দাড়ানো দেখলাম।

তার কালো চুল, অত্যধিক উজ্জ্বল দাঁত এবং নীল চোখ দর্শন করলাম • এবং মনে হল ইনি হচ্ছেন স্বয়ং যীশু খ্রীষ্ট। ঠিক এই সময়ে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত রহস্যের উৎস ও জ্ঞান আমার চোখের সামনে প্রদর্শিত হল। আমি চাইলাম সেগুলো সবগুলো আমার মনে ধার করে রাখতে, যাতে আমি আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে গেলে সে সমস্ত ব্যাপারগুলো অন্যদের জানাতে পারি। কিন্তু একমাত্র সমস্যা ছিল যে, আমি যা দেখেছি তার কিছুই আমি নিয়ে আসতে পারবে না।”

এটি আত্মার বহির্গমনের একটি সাধারণ অভিজ্ঞতা যাকে ইংরেজিতে Out of body experience বা সংক্ষেপে OBE বলে। অধিকাংশ, OBE এর অভিজ্ঞতাগুলো সাধারণ কোন স্বপ্নের অভিজ্ঞতা থেকে ভিন্নতর। এমন কিছু OBE এর ঘটনা রয়েছে যেখানে ভিকটিম ব্যক্তিটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে তার নিজের স্পন্দনহীন শরীরকে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এ প্রসঙ্গে একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ মাইকেল সেবমের একজন রোগীর ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা যাক।

হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া রোগীটির সম্পূর্ণ অবচেতন অবস্থায় ডা: সেবম তাকে বিশেষ চিকিৎসা দেন। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে চেতনা ফিরে পাওয়ার পর ব্যক্তিটি তার উপর প্রয়োগকৃত কার্ডিয়ক চিকিৎসা পদ্ধতির হুবহু বর্ণনা দেন যদিও ইতিপূর্বে তিনি কখনো এই চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতেন না, কোনদিন চোখেও দেখেননি। এখন প্রশ্ন হল যদি রোগীটির বর্ণনা স্বপ্ন হয়ে থাকে তবে তিনি কিভাবে তাঁর উপর প্রয়োগকৃত চিকিৎসা পদ্ধতির সঠিক বর্ণনা করতে পেরেছিলেন?

অধিকাংশ OBE ঘটনার সাথে কোন ভিনগ্রহের অজানা প্রাণী এলিয়েন এবং অদ্ভুত অজানা উড়ন্ত বিমান তথা UFO এর যোগসূত্র দেখা যায়। ১৯৮৬ সালে বেটি এন্ডারসন তার বাসার সোফায় বসে পবিত্র বাইবেল পাঠ করছিলেন। ঠিক সেই মুহুর্তে তিনি এক জোড়ালো শব্দ শুনলেন এবং তার সোফার সন্নিকটে এক অদ্ভুদ জীবকে দেখলেন যেটি দেখতে প্রায় মানুষের মত। এরপরই তিনি অনুভব করলেন যে, তিনি তার দেহের মধ্যে নেই। দূরবর্তী স্থান থেকে তিনি দেখলেন যে, তার দেহ সোফায় পড়ে রয়েছে। তারপর সেই অতি ধূসর বর্ণের এলিয়েনটি বেটিকে আকর্ষন করে কোথাও নিয়ে যেতে লাগল। বেটি এন্ডারসন সেখানে সেই অদ্ভুদ চক্রকার উড়ন্ত যানবাহনটি দেখলেন। আরেকটি অদ্ভুদ অভিজ্ঞতা ঘটল হইটি স্টিভার নামক ব্যক্তিটির ক্ষেত্রে। তিনি তার বারান্দায় ঘুমানো অবস্থায় একদিন ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে একটি লম্বা হাড় সদৃশ, চার হাতওয়ালা ধূসর জীব দেখেন। ধূসর এলিয়েনটি তাকে একটি ধূসর ২ ফুট বিশিষ্ট বাক্স দেখতে নির্দেশ করেন। এরপর তিনি নিজেকে তার দেহের বাইরে আবিস্কার করেন। তিনি সেই অবস্থায় হাঁটতে পারছিলেন। এমনকি তিনি সে সময় বন্ধ জানালার মধ্যে দিয়ে গমন করতে পেরেছিলেন। অন্যদিকে ইমিলি ক্রোনিন গাড়ীতে অবস্থান করা অবস্থায় একট UFO দেখলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজেকে একই সাথে গাড়ীর ভেতরে এবং বাইরে আবিস্কার করলেন। অধিকাংশ এলিয়েন অ্যাটাক এর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ব্যক্তিটি একজন ধূসর আলখেল্লা পরিহিত ব্যক্তিকে অবলোকন করেন এরপর অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।

দুটি ভিন্নতর পদ্ধতিতে এলিয়েনের সাথে মানুষের যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে। একটি হচ্ছে সম্পূর্ণ OBE অভিজ্ঞতা অর্থাৎ শারীরিক দেহের সাথে যার কোন সম্পর্ক নেই, অন্যটি হচ্ছে মন এবং আত্মার সাথে সাথে দেহের মধ্যেও ভিন্নতর অভিজ্ঞতা। ২য় অভিজ্ঞতাটি যাদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল তারা হলেন ট্রেভিস ওয়ালটন, উইলিয়াম হারমেন এবং লিলিবার্টো কাডিনাসে। UFO এনকাউন্টারের মাধ্যমে তাদের দেহকে ঘটনার সূত্রপাতের স্থান থেকে মাইলব্যাপী দূরে ফেলে আসা হয়েছিল। এই সমস্ত অভিজ্ঞতাকে সম্বল করে বিজ্ঞানীগণ বহু গবেষণা করে চলেছেন। তাদের মধ্যে একজন ফিলাডেলফিয়ার টেম্পল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এবং UFO নিয়ে গবেষক ডেভিড জেকব বলেছেন যে, UFO আক্রান্ত যে সমস্ত ঘটবাবলী হচ্ছে তা সত্য হতে পারে, কিন্তু OBE অভিজ্ঞতাগুলো মনের কোন অস্বাভাবিক কার্যকলাপ হতে পারে। যেমন অধিকাংশ UFO ভিকটিম ব্যক্তিগণ তাদের বক্তব্য পরবর্তীতে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না অর্থাৎ তারা কোন মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভোগেন। এখন প্রশ্ন হল মানসিক স্তর ছাড়াও এই ঘটনাগুলোর পরবর্তীতে তাদের যে শারীরবৃত্তিয় পরিবর্তন দেখা যায় তার উৎস কি? এ প্রসঙ্গে বলা যায় যে, মানসিক দৃঢ়তা থেকে যেকোন শারীরবৃত্তির পরিবর্তন করা সম্ভব। যেমন পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা ধর্মীয় আবেগ তাড়নের মাধ্যমে শরীরের যে কোন অংশ থেকে রক্ত নিঃসরণ করতে পারেন। দৃঢ় মানসিক ক্ষমতার সাহায্যে একজন নিজেকে ক্রুশ বিদ্ধও করতে পারেন। অধিকাংশ OBE ঘটনাগুলো ঘটে থাকে তখনই, যখন রোগীগণ প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যান যাকে Near Death Experience বা NDE বলা হয়। NDE অবস্থা চলাকালীন যখন আত্মা দেহ ছেড়ে চলে যায় তখন সেই সূক্ষ্ম দেহে যে সকল পরিবর্তন ঘটে তা তার স্থুল শারীরিক দেহে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যেমন ১৯৭৭ সালে ভারতে এ ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় মঙ্গল সিং সেরকম একজন ব্যক্তি বলেন “আমি একসময় খাটে শুয়েছিলাম, হঠাৎ দুজন লোক এসে আমাকে তুলে নিয়ে গেলেন। আমি হিসহিস শব্দ শুনলাম কিন্তু তেমন কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। সেখানে একজন ভয়ানক ব্যক্তি ছিলেন যিনি তাদেরকে তিরস্কার করলেন যারা আমাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। সেই ব্যক্তিটি তাদেরকে বললেন কেন তারা একজন ভুল ব্যক্তিকে নিয়ে এসেছে। এরপর ঐ দুজন সেখানে থেকে পালালে, তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি ফিরে যাও’। হঠাৎ আমি সেখানে দেখলাম দুটি বড় পাত্র যেখানে জল গরম হচ্ছিল। যদিও সেখানে কোন কাঠ বা আগুন জ্বালানো ছিল না। তারপর, তিনি আমার হাত স্পর্শ করলেন ধাক্কা দিলেন এবং বললেন ‘তাড়াতাড়ি ফিরে যাও’। যখন তিনি আমাকে স্পর্শ করলেন তখন তার হাত এত গরম ছিল যে, আমি উপলব্ধি করতে পারলাম যে, ঐ পাত্রের জল শুধুমাত্র এই ব্যক্তির হাতের ছোঁয়ায় গরম হচ্ছিল”। এরপর মঙ্গল পুনরায় তার দেহে ফিরে আসলেন। যখন তার চেতনা ফিরে এল তখন তিনি উপলব্ধি করলেন যে, তার বাম হাতের কয়েক জায়গা পুড়ে গেছে। (চলবে…)

হরে কৃষ্ণ ।


মাসিক চৈতন্য সন্দেশ, জানুয়ারী – ২০১১ ইং 

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।