এই পোস্টটি 1008 বার দেখা হয়েছে
একজন বুড়ো দাদু ছিলেন। তাঁর ছিল খিটখিটে স্বভাব। তিনি বাড়ির সকলকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘এই! মঙ্গলবার কবে? মঙ্গলবার কবে?’ তাঁর নাতি প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। সে বলতেই পারে না মঙ্গলবারটা কবে হতে পারে। পাড়ার ছেলেরা খেলছিল। বুড়ো দাদু খুব রেগে গেলেন। বললেন, “তোদের পড়াশুনার কোনও দাম নেই। তোরা মঙ্গলবার কবে বলতেই পারছিস্ না। তোদের দিয়ে কি যে কাজ হবে? মঙ্গলবার কবে বলতে এত চিন্তা করতে হয়? একজন ছেলে বলে ও দাদু ! আপনি তো বুড়ো। আপনি কেন মঙ্গলবার কবে বুঝতে পারছেন না?’ আপনি তারপর আর একজন বয়স্ক লোক সেখানে এলেন। তাঁকে দাদু জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কবে মঙ্গলবার? ‘সেই বয়স্ক লোকটি বলতে লাগলেন, হে মশাই ! আপনার বগলে ওঠা কি বই ? দাদু বললেন, ‘ওঠা পঞ্জিকা।’ বয়স্ক লোকটি বলেন, আরে মশাই, আপনার কাছেই পঞ্জিকা রেখেছেন। অথচ মঙ্গলবার কবে সেটা না দেখে দুনিয়ার লোককে জিজ্ঞেস করছেন। আপনি মনে হয় হৈ-হুল্লোড়টাই বেশি পছন্দ করেন। সেই জন্য মঙ্গলবার কবে বলে চেচাঁচ্ছেন? এইরকম লোক তো কোথাও দেখি না।’ তখন দাদু বললেন, হ্যাঁ ভাই! তুমি ঠিকই বলেছ। সব কটা পাগলদের কাছে জিজ্ঞেস করে আমি পাগল বনে গেলাম।” তারপর দাদু চশমা চোখে আঁটিয়ে পঞ্জিকা দেখলেন মঙ্গলবার কবে। মানুষ এত অমনোযোগী হয় যে, সাধু গুরু বৈষ্ণবের কাছে ভগবান সম্পর্কে প্রশ্ন না করে যারা শাস্ত্র সম্বন্ধে তেমন অবগত নয় তাদের সঙ্গে ভগবান সম্পর্কে তর্ক করে। গীতা ভাগবত কাছে আছে, কিংবা সংগ্রহ করাও সম্ভব। তবুও তারা বৈদিক শাস্ত্রগ্রন্থ- যা কিছু পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে সেখানে থেকেই জেনে নিতে হয়। তাদের প্রতি মনোযোগী না হয়ে আর সবত্র যদি চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করা হয় মঙ্গলবার কিসে হবে, তাহলে লোকে তাকে পাগল বলে উপহাস করবে। হরেকৃষ্ণ।
(মাসিক চৈতন্য সন্দেশ ২০১১ সালে জানুয়ারি প্রকাশিত)