এই পোস্টটি 35 বার দেখা হয়েছে
গত সংখ্যার পর
বৈদিক শাস্ত্র মতে এই পৃথিবীতে ৮৪ লক্ষ প্রজাতির জীবকূল বসবাস করছে। তাদের মধ্যে এখনো অনেক প্রজাতির খোঁজও বিজ্ঞানিরা এখনো পাননি। আর গভীর সমুদ্রের মাত্র কয়েক অংশে হয়তোবা আমরা বিচরণ করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু এখনো জল, স্থল ও আকাশপথের অনেক অংশই আমাদের বিচরণ সম্ভব হয়নি। তাই এখনো অনেক প্রজাতির জীব আবিষ্কৃত হয়নি, যদিও তারা এই পৃথিবীতে বিচরণ করছে। তাই ডাইনোসর তথা বিরাট আকৃতির প্রাণীর পৃথিবীতে অস্তিত্ব থাকাটা আশ্চর্যজনক ব্যাপার হবে না। ২০০০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ভূতত্ত্ববিদ ডাঃ ডন প্যাট্রন ও তার দল টেক্সাসে গ্লেন রোস নামক স্থানে একটি বড় প্রাণীর ১৫৭ টি পায়ের ছাপ আবিস্কার করেন। পায়ের ছাপগুলোর গভীরতাও ছিল অনেক বেশি। তারা ধারণা করেন যে, পায়ের ছাপগুলো নিশ্চয়ই ডাইনোসরের। এরপরের যুগান্তকারী আবিস্কারটি করেন স্টান টেলর। তিনি প্যালক্সি নদীর সন্নিকটে টেইলর ট্রেইল নামক লোকায় মানুষ ও ডাইনোসরের যুগপৎ পায়ের ছাপ আবিস্কার করেন। এই আবিস্কার ডারউইনের বিবর্তনবাদ সূত্রকে মিথ্যা প্রমাণিত করেছে। বৈদিক শাস্ত্রমতে বিবর্তনবাদের মাধ্যমে মানব প্রজাতির সৃষ্টি হয়নি। সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষ ও অন্যান্য জীবের যুগপৎ অবস্থান বর্তমান ছিল।
সর্বপ্রথম ডাইনোসর সম্পর্কিত তথ্য আবিষ্কৃত হয় ১৮৪২ সালে। যখন স্যার রিচার্ড ডরেন উত্তর আমেরিকায় ডাইনোসরের ফসিল আবিস্কার করেন। এখনো অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন যে, ডাইনোসর পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। কাকাতুয়া, এমু ও হামিং বার্ড হচ্ছে ছোট আকৃতির ডাইনোসরের নমুনা। (সূত্র ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া মিউজিয়াম অব প্যালেনটোলজি)
বাইবেলে ডাইনোসরের মতো দেখতে জীবের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। বাইবেলে উল্লেখিত সেই দানবাকৃতির প্রাণীগুলোর নাম হচ্ছে ‘বেহমোথ’, ‘তানিন’। (উৎসঃ জেনেসিস বুক অব জব) এছাড়া শ্রীমদ্ভাগবতমে সম্ভাব্য বর্ণনা রয়েছে (৮১০/১০-১২) নং শ্লোকে।
আমেরিকার উথা স্টেটে জনসন ফার্ম নামক এলাকাটি বর্তমানে ডাইনোসর আবিস্কারক স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। কেননা এখানে ডাইনোসরের তথা দানবীয় প্রাণীর অনেক পায়ের ছাপ আবিষ্কৃত হয়েছে।
ডাইনোসরের হাড় পায়ের ছাপ আবিষ্কারের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা এই প্রাণী সম্পর্কে সন্দেহ দূর করলেও যেহেতু তারা স্বচক্ষে এখনো বৃহদাকার এই প্রাণীর অস্তিত্ব আবিস্কার করেনি তাই তারা ভুল কোন বিবৃতি প্রদান করছে না যে, প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা বড় কোন ভূমিকম্প বা উল্কাপাতের কারণে ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটেছে। ইস্কন প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ বলেছেন যে, বৈদিক শাস্ত্র মতে, ৮৪ লক্ষ জীব একই সময়ে পৃথিবীতে বর্তমান থাকবে। যদিও আংশিক প্রলয়ের কারণে কোন প্রজাতির বিলুপ্তি হলেও সৃষ্টির প্রারম্ভে পুনরায় সেই সকল প্রজাতির উদ্ভব হবে। প্রভুপাদ বলেন, “বৃহৎ প্রানীর অস্তিত্ব রয়েছে। তোমরা সেটিকে ডাইনোসর কিংবা ফাইনোসর বলতে পার। যেমন আমি তিমিঙ্গলের নাম বলছি যার অস্তিত্ব রয়েছে। কোন কিছুই বিলুপ্ত হয় না।”
এই আশ্চর্যময় পৃথিবীতে ডাইনোসর, ইয়েতি সমুদ্রদানবের মত প্রাণীরা আমাদের অলক্ষে বিচরণ করে যাচ্ছে। সমস্ত জীবকুলের অস্তিত্বের মধ্যকার রহস্য উদঘাটন করার জন্য আমাদের বৈদিক শাস্ত্রের শরণাপন্ন হতে হবে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রে যে আশ্চর্যময় জীব সৃষ্টি করেছেন তা দেখে আমরা তাঁর অনন্ত ঐশ্বর্যের সামান্যমাত্র অনুধাবন করতে পারি। বৈদিক বিজ্ঞানের নানা অজানা ও আশ্চর্যময় জগৎ সম্পর্কিত এই কলাম সর্ম্পকে আপনাদের মতামত আমাদের জানাতে পারেন চিঠিতে কিংবা ইমেইলে। ইমেইল ঠিকানা : vedicscience.cs@gmail.com
হরেকৃষ্ণ।
মাসিক চৈতন্য সন্দেশ , অক্টোবর – ২০১০ ইং
পর্ব – ০১ এর লিংকঃ