এই পোস্টটি 1077 বার দেখা হয়েছে
রাসবিহারী কৃষ্ণচন্দ্র দাস: বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের জ্ঞান পিপাসু শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ও মোট ২২,০০০ শিক্ষার্থী সম্বলিত বৃহত্তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ৪,৯২৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০-১৫% শিক্ষার্থী সনাতনী হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ন্যায় কোন আবাসিক সনাতনী শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতি চর্চা ও আবাসিক থাকা, খাওয়ার কোন ব্যবস্থা নাই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সনাতনী শিক্ষার্থীদের বহুল প্রতীক্ষিত ছাত্রাবাসের স্বপ্ন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন) শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির ও শ্রীশ্রী গৌর নিতাই আশ্রম, নন্দনকানন, চট্টগ্রাম এর মাধ্যমে পূরণ হতে চলেছে। গত ২০১৮ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাস নিকটস্থ ১২শতক ভূমি ক্রয় করা হয় এবং ১১ শতক ভূমি বায়নানামা করা হয়। সম্প্রতি ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি ইস্কন নন্দনকানন এর পরিচালনা পার্ষদ এবং সকল ব্রহ্মচারী উক্ত ভূমিতে ভগবান নৃসিংহদেবের স্তব-স্তুতিসহ বৈদিক মন্ত্রপাঠ করেন এবং ভূমি উন্নয়ন উদ্বোধন করেন।
এই ছাত্রাবাস বিষয়ে সাক্ষাৎকারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র বর্তমানে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা শ্রীমান পিপলু চন্দ্র নাথ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীদের আহার, আবাসন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন, সংস্কৃতি চর্চায় এবং ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এটি অন্যতম মাইলফলক। এই ছাত্রাবাসের উদ্যোক্তা হিসেবে ধন্যবাদ জানাই অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র পরিকল্পনা কমিশনের সহকারী সচিব শ্রীমান সেবানন্দ গৌরাঙ্গ দাস এবং ইস্কন পরিবারকে।”
এই ছাত্রাবাস সম্পর্কে চৈতন্য সন্দেশের সম্পাদককে শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির ও শ্রীশ্রী গৌর-নিতাই আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ পণ্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী বলেন “সনাতন ধর্ম পরিষদ্, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দ্যোগে ২০০৪ সালে “বিদায় সংবর্ধনা এবং নবীন বরণ” অনুষ্ঠানে শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে গুরুমহারাজ হরিনাম মহামন্ত্র কীর্তনের মাধ্যমে বৈদিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রচারের ভিত্তি স্থাপন করেন। যাহার ফলস্বরূপ এই ছাত্রাবাস। নেশা, ধর্মান্তর, জুয়া ইত্যাদি হতে যুবকদের রক্ষা করা এবং যুবকদের সনাতন ধর্মের সুযোগ্য প্রতিনিধি হিসেবে গড়ে তোলা; যাতে তারা অন্ধকারে আলোর দিশারী হিসেবে কাজ করে সমাজ ও জাতিকে নেতৃত্ব দিতে পারে।
২০১০ সাল হতে অস্থায়ী ছাত্রাবাস অদ্বৈত ভয়েস থেকে উত্তীর্ণ অনেক শিক্ষার্থী বর্তমানে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে ও ব্যাংকে কর্মরত আছে। তাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবাস উন্নয়ন প্রকল্পের দিব্য ভগবদ্ সেবায় যুক্ত হওয়ার জন্য সকল ধর্মপ্রাণ ও সমাজসেবী সুহৃদজনের নিকট আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।”
শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর, শ্রীল প্রভুপাদকে ছাত্রাবাস করার নির্দেশ দেন, যা শ্রীল প্রভুপাদ বৈশিষ্ট্যাষ্টকম ২/৯ উল্লেখ করেন
“লন্ডনেতে ছাত্রাবাস করিবারে চাও
পরিপাটি যাতে হয় সে কথা বুঝাও
ম্লেচ্ছদেশে ছাত্রাবাস হরিকথা তরে
এসব মর্মের কথা কে বুঝিতে পারে।।