এই পোস্টটি 228 বার দেখা হয়েছে

যখন কৃষ্ণস্পর্শে রাধারাণী তাঁর চোখ মেলে দর্শন করতে শুরু করেছিলেন, সেজন্য যশোদা ও কীর্তিদার সখ্যতা আরও বেশি বেড়ে গেল। উভয় পরিবার নিয়মিত পরস্পরের গৃহে দেখা-সাক্ষাৎ করতে যেতে লাগলেন। কখনো কখনো রাধারাণী তাঁর মায়ের সঙ্গে নন্দালয়ে বেড়াতে যেতেন। সেখানে তিনি তাঁর প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণের দর্শন লাভ করতেন। রাধা ও কৃষ্ণ দিনে দিনে বর্ধিত হতে লাগলেন। রাধারাণীর সমস্ত নিত্যসিদ্ধা সখীগণও ব্রজে আবির্ভূতা হলেন। বিশাখা রাধারাণীর সাথে সাথে একই সময়ে একই ক্ষণে জন্মগ্রহণ করলেন। রাধারাণীর আটজন অতি অন্তরঙ্গ প্রিয়সখী রয়েছেন, যাঁরা রাধারাণীর দেহেরই বিস্তার সদৃশ (কায়ব্যূহস্বরূপা)। তাঁরা হচ্ছেন ললিতা, বিশাখা, চিত্রা, ইন্দুলেখা, চম্পকলতা, তুঙ্গবিদ্যা, রঙ্গদেবী ও সুদেবী। যখন রাধারাণীর বয়স সাতমাস হল, তখন রাজা বৃষভানু তাঁর কন্যার অন্নপ্রাশন উৎসবের জন্য বিশদ আয়োজন করলেন। তিনি একটি বড় যজ্ঞের আয়োজন করলেন এবং সকল অধিবাসীগণ, ব্রাহ্মণগণ, স্বজনবর্গ এবং সেই সাথে নন্দ মহারাজ ও তাঁর সমগ্র পরিবারকে আমন্ত্রণ করলেন। দেবী পৌর্ণমাসী মাতা রোহিণী ও বলরাম এবং মাতা যশোদা ও সকলেই উৎসবে যোগদান করতে বৃষভানুর ভবনে গেলেন। যখন সকলেই নানাপদ ভোজনে ব্যস্ত ছিলেন, সেসময় রাধারাণী শ্রীকৃষ্ণের থালা হতে
নিয়ে তা গ্রহণ করলেন। যখন সমস্ত মহিলাগণ সেখানে তাঁদের পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলাপচারিতায় মগ্ন ছিলেন, কৃষ্ণ ও রাধারাণী শিশুসুলভ ভাব নিয়ে পরস্পরের রূপসুধা পান করতে লাগলেন, ঠিক যেমন চাতক পাখী স্নিগ্ধ চন্দ্রালোক পান করে থাকে। কৃষ্ণ সান্নিধ্যে রাধারাণী অপূর্ব সৌন্দর্য ও মাধুর্য অভিব্যক্ত করতে লাগলেন, ঠিক যেমন সরসিজ পদ্ম সূর্য কিরণস্পর্শে তার সৌন্দর্য বিকশিত করে।