কিভাবে ইস্‌কনের যুবকরাও সমাজসেবা করে?

প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২০ | ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ৬ জুলাই ২০২০ | ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 512 বার দেখা হয়েছে

কিভাবে ইস্‌কনের যুবকরাও সমাজসেবা করে?
লেখক: সুযোগ তালুদার 
দুই বন্ধু পিয়াস ও পলাশ। দুইজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। পিয়াস সামাজিক দায়িত্ব জ্ঞান সম্পন্ন একজন যুবক। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সে যুক্ত। আর পলাশ সামাজিক সংগঠনগুলোর সাথে তেমন যুক্ত না। সে ইস্‌কন ভক্ত। একদিন পিয়াস কোনো এক রোগীকে রক্ত দান করে বাসায় আসল:
পিয়াস: পলাশ আজ একজন রোগীকে রক্ত দিয়ে। খুবই ভালো লাগছে। আসলে কাউকে সাহায্য করতে পারলে অনেক ভালো লাগে।
পলাশ: হুম! তা তো অবশ্যই।
পিয়াস: কিন্তু তোকে তো আজ পর্যন্ত কোনো সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত হতে দেখলাম না? তুই তো শুধু ইস্‌কন মন্দিরে যাস্ আর কৃষ্ণ, কৃষ্ণ করিস্।
পলাশ: হুম! ইস্‌কন মন্দিরও তো অনেক সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকে।
পিয়াস: কি বলিস? ইস্‌কন তো একটা ধর্মীয় সংগঠন। তারা আবার সমাজসেবা কিভাবে করে?
পলাশ: ইস্‌কন ভক্তরা যে চারটি নিয়ম পালন করে তার মাধ্যমেই অনেক বৃহৎ আকারের সমাজসেবা করা হচ্ছে।
পিয়াস: তুই কি বলতে চাচ্ছিস্্ আমি আসলে কিছুই বুঝলাম না। তুই কি আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবি?
পলাশ: হ্যাঁ, হ্যাঁ! অবশ্যই! বলছি শোন…
ইস্‌কন ভক্তরা চারটি নিয়ম খুব কঠোরভাবে পালন করে। উক্ত নিয়মগুলো শ্রীমদ্ভাগবতের (১/১৭/৩৮) নং শ্লোকে বর্ণিত হয়েছে-
“অভ্যর্থিতস্তদা তস্মৈ স্থানানি কলয়ে দদৌ।
দ্যূতং পানং স্ত্রিয়ঃ সূনা যত্রাধর্মশ্চতুর্বিধঃ॥
“সূত গোস্বামী বললেন- কলির এই আবেদন শ্রবণ করে মহারাজ পরীক্ষিৎ তাকে যেখানে দ্যূত ক্রীড়া, আসব পান, অবৈধ স্ত্রীসঙ্গ বেং পশু হত্যা হয়, সেই সেই স্থানে থাকবার অনুমতি দিলেন।”
সেগুলো হলো:
১) আমিষাহার বর্জন করা;
২) দ্যুতক্রীড়া বর্জন করা;
৩) মাদকজাতীয় দ্রব্য বর্জন করা এবং
৪) অবৈধ যৌনসঙ্গ বর্জন করা।
পিয়াস: এগুলোর মধ্যে একটাও তো সমাজের জন্য না বা সমাজসেবামূলক কাজের মধ্যে পড়ে না। এগুলো তো তারা নিজেদের জন্য করে। এর মাধ্যমে সমাজের কি উপকার করছে তারা?
পলাশ: হাহা! তুই বুঝতে পারিসনি  বোকা। এগুলোর মাধ্যমেও সমাজের উপকার হচ্ছে।
পিয়াস: কিন্তু কিভাবে?
১) মানব ভ্রণের বেবি স্যুপ এখন জনপ্রিয় খাবার!!!
পলাশ: তোকে একটা একটা করে আমি ব্যাখ্যা করে বুঝাচ্ছি।
তুই জানিস্ নিশ্চয়ই? সারা বিশ্বে প্রাণীহত্যা এখন এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিশ্বে খাদ্য হিসেবে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, শুকরের চাহিদা ব্যাপক। ভয়াবহ খবরটি হচ্ছে কিছু কিছু দেশে অপরিপক্ক মানব ভ্রণের বেবি স্যুপ এখন জনপ্রিয় খাবার। চীনে বিশেষ ধরনের ওষুধ তৈরীর জন্য গাধার চামড়া ব্যবহার করা হয়। এজন্য লাখ লাখ গাধাকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। সমাজে এর চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা আর কি হতে পারে? সেজন্য সারা বিশ্বে  অসংখ্য সংগঠন প্রাণীদের রক্ষা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যেমন হিউম্যান সোসাইটি ফর ইন্টারন্যাশনাল, নেপালের অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশে সরকারিভাবে নিবন্ধিত অভয়ারণ্য, ফেয়ার ফর পজ, অ্যানিম্যাল লাভার্স অব বাংলাদেশ, পিপল ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনসহ ফেসবুক, সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক অসংখ্য সংগঠন কাজ করছে।
কিন্ত তুই খেয়াল করে দেখ!  ইস্‌কনের একটা নিয়ম হচ্ছে, আমিষাহার বর্জন করা। তো আমিষ জাতীয় খাদ্যগুলো কী কী? যেমন- মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি। ইস্‌কন ভক্তরা এগুলো খায় না। ফলে তারা কোনো প্রকার প্রাণী হত্যা করছে না। আর সমাজের সকলকে প্রাণী হত্যা না করতে উদ্বুদ্ধ করছে।
তাছাড়া ইস্‌কনের ইকোভিলেজ নামে এক ধরনের প্রকল্প রয়েছে। যেমন-ভারতের মুম্বাইয়ের গোবর্ধন ইকো ভিলেজ। যেখানে গৃহপালিত পশুর খামার থেকে শুরু করে কৃষির সব রয়েছে। যা প্রাণীবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
তার মানে কি বুঝা যাচ্ছে না এই নিয়মটি পালন করার মধ্য দিয়েও সমাজসেবা করা হচ্ছে?
পিয়াস: আর দ্বিতীয় নিয়মটা কি যেন? ওইটার মাধ্যমে কিভাবে সমাজসেবা করা হচ্ছে?

২) জুয়া, ক্যাসিনো, ফিক্সিং এদের মধ্যে সম্পর্ক আছে?

পলাশ: এটা তোর না জানার কথা না সারা বিশে^ জুয়া খেলাটা এখন একটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ এটির আধুনিক নাম দিয়েছে ক্যাসিনো। খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে এটিকে বলা হয় ফিক্সিং। বিশ্বের বড় বড় তারকা, খেলোয়াড়, ধর্নাঢ্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জের কৃষক-দিনমজুররাও আজ জুয়ার নেশায় অর্থ-বিত্ত, মান-সম্মান সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এই জুয়া হাজারো মানুষের আত্মহননের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুয়ার অর্থ যোগাড় করার জন্য চুরি, ছিনতাই, পকেটকাটা, ডাকাতি থেকে শুরু করে খুন পর্যন্ত করছে জুয়াড়িরা। ফলে সমাজে এধরনের অপরাধ ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।
ইস্‌কন ভক্তরা চারটি নিয়ম খুব
কঠোরভাবে পালন করে। সেগুলো হলো:

বিভিন্ন সংগঠন এই ধরনের সমাজ বিধ্বংসী কাজগুলো থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার তো জুয়া খেলার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে যারা অসৎভাবে টাকা উপার্জন করে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন’ (দুদক) তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।
কিন্তু তুই ইস্‌কনের ভক্তদের দেখ? যারা ইস্‌কনের ভক্ত তারা আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত যেকোন ধরনের খেলা থেকে মুক্ত। কারণ ইস্‌কনের চার নিয়মের অন্যতম হচ্ছে দ্যুতক্রীড়া বর্জন করা এবং তারা অন্যদেরও এই ধরণের কাজ থেকে মুক্ত থাকার জন্য উৎসাহিত করছে। যাতে তারা এর্ধনর অনৈতিক কাজে না জড়ায় এবং অশান্তি সৃষ্টি না করে।
এছাড়া ইস্‌কনে রয়েছে জাগ্রত ছাত্রসমাজ, ইস্‌কন ইয়ুথ ফোরাম, নামহট্ট, ভক্তিবেদান্ত গীতা একাডেমী, ভক্তিবৃক্ষ ইত্যাদি প্রচার শাখা। এসমস্ত শাখাগুলোতে ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত সকলকে সংগীত, শিল্পকলাসহ নানা নান্দনিক কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং নিয়োজিত রাখা হয়। ফলে তাদের উন্নত চরিত্র গঠিত হয় এবং তারা সকল অপকর্ম থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখে। এভাবে তারা সমাজ ও দেশের সম্পদে পরিণত হচ্ছে।
এছাড়া ইস্‌কনে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক ইয়োগা ট্রেনিং ও বৈদিক খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। যার ফলে ভক্তরা বিনোদনের জন্য অনৈতিক খেলাগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে না। ফলে তারা নিজেরা যেমন এর থেকে মুক্ত থাকতে পারছে। পাশাপাশি সমাজেও তাদের দ্বারা ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
তাহলে এটা কি সমাজসেবা করা হলো না?
পিয়াস: হ্যাঁ, তাই তো! বাকিগুলোও আমাকে একটু বুঝিয়ে বল তো বন্ধু।

৩) আধুনিককালের সামাজিক ব্যাধিটি কী?

পলাশ: এখন আমি তোকে সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা মাদক নিয়ে বলি। মাদককে বর্তমান সমাজের সামাজিক ব্যাধি বলা হচ্ছে। সিগারেট, গাঁজা, মদ, ফেনসিডিল থেকে শুরু করে হিরোইন, ইয়াবা আরো কতো ধরনের মাদক রয়েছে সমাজে। অপ্রাপ্তবয়স্ক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, সমাজের অসংখ্য মানুষ আজ মাদক ব্যাধিতে আক্রান্ত। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত মাদক সেবন করার দায়ে বহিস্কৃত হচ্ছে।
বিষয়টা শুধু এখানে থেমে নেই। মাদক সেবন করার ফলে অসংখ্য পরিবারে কলহ ও অশান্তি তৈরি হচ্ছে। অনেকে আত্মহত্যা করছে, খুন করছে। মাদকসেবী ঐশী ও তার বন্ধুদের দ্বারা তার মা-বাবা পুলিশ দম্পতি হত্যার ঘটনা তো সবারই জানা।
মাদকসেবীদের একটা বড় অংশ দিনমজুর, শ্রমিক, ফুটপাতের ছেলেরা। তারা মাদকের কেনার টাকা যোগাড় করতে না পেরে নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। যেমন- চুরি, পকেট কাটা, ছিনতাইসহ আরো নানা অপরাধমূলক কাজ।
গত ৪ অক্টোবর, ২০১৮ ইং সালে প্রথম আলোতে একটি রির্পোট প্রকাশিত হয়। যেখানে বলা হয় দেশে বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৩৬ লাখ। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাদক হচ্ছে গাঁজা। ১৮ বছর ও তার ঊর্ধ্বে মাদকাসক্ত ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩০০ জন। সবচেয়ে বেশি মাদক গ্রহণকারী হলো রাজধানী ঢাকায়। এই রিপোর্টে আরো বলা হয়, ব্যক্তির আয়ও মাদক গ্রহণে প্রভাব ফেলে।
গাড়িচালকদের বৃহৎ একটা অংশ মাদকাসক্ত হওয়ায় প্রতিনিয়তই কোনো না কোনো জায়গায় সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে। ২০ মার্চ ২০১৯ ইং সালে বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। ফলে বিশ্বের মানুষের মূল্যবান জীবন এবং জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ নানা দেশি বিদেশী এনজিও ও সংগঠন মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
এবার দেখ, ইস্‌কনের চার নিয়মের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হচ্ছে মাদকজাতীয় দ্রব্য সম্পূর্ণভাবে বর্জন করতে হবে। এর ফলে সারা বিশ্বের লাখ-লাখ ইস্‌কন ভক্ত-অনুসারী আজ মাদক থেকে মুক্ত। পাশাপাশি তারা সমাজের যুবক-বৃদ্ধসহ সমস্ত শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই মরণব্যাধি থেকে বেড়িয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে ইস্‌কনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সমাজের বড় একটা অংশ আজ মাদক থেকে মুক্ত।
এছাড়াও ইস্‌কনের প্রশিক্ষিত যুবকরা বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে “আর্ট অব মাইন্ড কন্ট্রোল” ও “পাওয়ার অব হ্যাবিট” ইত্যাদি সেমিনার দিয়ে থাকে ও অসংখ্য কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। যার ফলে যুবসমাজ তাদের বিভিন্ন বদ্ অভ্যাসগুলো পরিত্যাগ করে আলোকিত জীবনযাপন করছে।
এর চেয়ে ভালো সমাজসেবা আর কি হতে পারে?
পিয়াস: আসলে ঠিকই বলেছিস বন্ধু। আমি আসলে এই বিষয় সম্বন্ধে আগে বিস্তারিত জানতাম না এবং কখনো এতো গভীরভাবে চিন্তাও করে দেখিনি।
পলাশ: তাহলে এখন আমি তোকে সবচেয়ে গুরুত¦পূর্ণ বিষয়টির কথা বলছি।
পিয়াস: হ্যাঁ, হ্যাঁ! অবশ্যই। বল শুনি?

৪) নারীরা নিরাপদ কোথায়?

পলাশ: সারা বিশ্বে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে নারীদের নিরাপত্তা ও নারী স্বাধীনতা। প্রতিনিয়ত অসংখ্য নারী শারীরিক, মানসিক অত্যাচার, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং খুনের শিকার হচ্ছে। ০৭ জুলাই ২০১৯ এ বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারী সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, গত ছয় মাসে ৪০০ শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০১৮ সালে ২২৭ শিশু নিহত ও ৩৫৬ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
তাই মানুষ আজ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষ এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং একে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। এর উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে আমরা মি-টু আন্দোলনের কথা বলতে পারি। যেখানে সারা বিশ্বের নারীরা এক হয়ে অন্যায় ও অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছিল।
অধিকাংশ দেশের সরকার নারী নির্যাতন দমন করার জন্য কার্যকরী আইন প্রণয়ন করছে এবং নির্যাতিতকারীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকার এব্যাপারে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে। এই যখন অবস্থা তখন ইস্‌কন খুব নীরব ও শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন সফল করতে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।
ইস্‌কনের চারটি নিয়মের মধ্যে অন্যতম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হচ্ছে অবৈধ যৌনসঙ্গ বর্জন করা। অর্থাৎ ইস্‌কনের ভক্তরা বিবাহিত স্ত্রী ব্যতীত অন্যদের মাতৃরূপে দর্শন করেন। এমনকি ভক্তরা অন্য নারীদের সঙ্গে কোনো ধরনের অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে না। তাদের ভক্ত, অনুসারী ও শুভাকাক্সক্ষীসহ সমাজের সকলের মধ্যে সচেতনতা তৈরীসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করে থাকে ইস্‌কন।
পিয়াস: আরো কি কোনোভাবে ইস্‌কন সমাজের সেবা করছে?
পলাশ: অবশ্যই! আরো অনেকভাবে। যেমন ইসকন ফুড ফর লাইফ। এই কার্যক্রমটির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত অসংখ্য ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবার দিচ্ছে সংগঠনটি। তাছাড়া বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত ও শরণার্থীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে সংস্থাটি।
এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করে থাকে ইস্্কন।
পাশাপাশি ইস্‌কনের পক্ষ থেকে জেলখানায় হিন্দু কয়েদিদের মাঝে গীতা বিতরণ একটি ব্যাপক প্রশংসনীয় কার্যক্রম যা সারা বিশ্বের বিভিন্ন জেলখানায় অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়াও আরো বিভিন্ন অভিনব উদ্যোগের মাধ্যমে সুন্দর সমাজ গঠনে অবদান রাখছে ইস্‌কন।
পিয়াস: সত্যিই অসাধারণ! আমি আসলে এত কিছু জানতাম না বন্ধু। আজ আমার ভুল ভাঙ্গল। আমি মনে করতাম ইস্‌কন শুধুমাত্র একটা ধর্মীয় সংগঠন। কিন্তু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের পাশাপাশি সমাজের বিদ্যমান সমস্যাগুলো নিরসন করে সুন্দর সমাজ গঠনে অবদান রাখছে ইস্‌কন। তোকে অনেক ধন্যবাদ বন্ধু, এতো সুন্দর ব্যাখ্যা করে আমাকে বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।
পলাশ: তুই ধৈর্য ধরে আমার কথা শুনেছিস। এজন্য তোকেও ধন্যবাদ।

লেখক পরিচিতি: বর্তমানে সুযোগ তালুকদার ৩য় বর্ষ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছেন। ইস্‌কন কর্তৃক পরিচালিত অদ্বৈত ভয়েসে থেকে অপূর্বভাবে লেখা-পড়া ও কৃষ্ণভক্তি পালন করছেন এবং সে সাথে তিনি যুব প্রচারে ভূমিকা রাখেন।

সূত্র: ব্যাক টু গডহেড ( এপ্রিল – জুন) ২০২০ সালে প্রকাশিত।

মাসিক চৈতন্য সন্দেশ ও ব্যাক টু গডহেড এর ।। গ্রাহক ও এজেন্ট হতে পারেন

প্রয়োজনে : 01820-133161, 01758-878816, 01838-144699

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।