অলিম্পিকে নিরামিশাষীদের সাফল্য

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২২ | ৯:১২ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২২ | ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 128 বার দেখা হয়েছে

অলিম্পিকে নিরামিশাষীদের সাফল্য

চীনের ‘বেইজিং অলিম্পিক ‘০৮’ সম্প্রতি গোটা বিশ্বে এক মহা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হরেক রকমের ইভেন্টে অংশ নিতে বহু খেলোয়ার চীনের বেইজিং-এ পাড়ি জমিয়েছিল। কিন্তু ৪ বছর অন্তর অন্তর অনুষ্ঠিত এ অলিম্পিক গেমসে অংশ গ্রহনকারীদের খাদ্যাভাস কেমন ছিল? তাদের দেহকে বিভিন্ন ইভেন্টে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য কোন খাদ্যভাসের উপর তারা নজর দিয়েছিল? এসব প্রশ্ন খেলা প্রিয় দর্শকদের হয়ত কৌতুহলী সৃষ্টি করতে পারে । তাদের উদ্দেশ্যেই কিছু অলিম্পিয়ানের চমকপ্রদ তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে। যারা তাদের দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করে নিরামিষ খাদ্যভাসের উপর ভিত্তি করে। নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন যে কি করে আমিষের পরিবর্তে নিরামিষকেই তাদের খাদ্যাভাস হিসেবে গ্রহণ করেছে। নিম্নে সেই সব অলিম্পিয়ানদের নাম উল্লেখ করা হল যারা অলিম্পিকের বিভিন্ন ইভেন্টে পদক প্রাপ্ত। চারলেন রঙ্গ, যিনি ১৯৮৮ সালের অলিম্পিকে কানাডার হয়ে স্কেটিং-এ প্রতিনিধিত্ব করেছিল। তিনি জুনিয়র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নসিপেও অংশগ্রহণ করেছিলেন । তিনি একজন নিরামিশাষী খেলোয়ার হিসেবে শিরোনামে এসেছিলেন এবং বিখ্যাত লিসা ডরফম্যান এর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। পাভো নুরমি একজন বিখ্যাত দৌড়বিদ যিনি ১২ বছর বয়স থেকেই নিরামিশাষী এবং তাকে সর্বকালের সেরা এথলেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯২০, ১৯২৪ এবং ১৯২৮ সালের অলিম্পিকে অংশ নিয়ে তিনি প্রায় ১২টি অলিম্পিক পদক জিতেছিলেন। ক্রিমক্যাম্পবেল, একজন বিখ্যাত কুস্তিবিদ যিনি ৩৭ বছর বয়সে আমেরিকার হয়ে ১৯৯২ সালের অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেছিলেন এবং অলিম্পিক ইতিহাসে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ট আমেরিকান খেলোয়াড় হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছিলেন। তিনি বলেন “আমি আমার শরীরের যত্ন নিই। আমি মাংস খায় না এবং আমি প্রতিদিন যোগাভ্যাস করি যা আমাকে অন্য রকম সুস্বাস্থের অধিকারী করে তুলে।” কার্লস লুইস, যিনি একজন নিরামিশ এথলেট এবং অলিম্পিক ইতিহাসে প্রায় ১০টি পদক তার দখলে তার মধ্যে ৯টিই স্বর্ণপদক ছিল। সূর্য বোনালি, যিনি একজন বিখ্যাত স্কেটার এবং ১৯৯২, ১৯৯৪ এবং ১৯৯৮ সালের অলিম্পিকে ফ্রান্সের হয়ে অংশগ্রহণ করেছিল। ডেবি লরেন্স, যিনি একজন বিখ্যাত নিরামিশাষী রেসওয়াকার, তিনি ১৯৯২, ১৯৯৬ এবং ২০০০ সালের অলিম্পিকে মহিলাদের হয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ৫ কি.মি. একটি রেসে বিশ্বরেকর্ড করেছিলেন সবচেয়ে কমসময়ে ফিনিশিং লাইন স্পর্শ করার জন্য। মুররে রেসে, যিনি জন্ম থেকেই নিরামিশাষী, তার দখলে প্রায় ৬টি অলিম্পিক পদক রয়েছে। তিনি ১৭ বছর বয়সেই একজন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হিসেবে গোটা বিশ্বে পরিচিত লাভ করেছিলেন। এডউইন মোসেস, যিনি আমেরিকান হার্ডলার এবং তিনি পর পর আট বছর ৪০০ মিটারের হার্ডেলে অপরাজিত থেকে ছিলেন তার দখলে প্রায় দুটি স্বর্ণ পদক রয়েছে। অলিম্পিক ট্র্যাক থেকে অবসরের পর তিনি ১৯৯০ সালের ববস্লেড রেসে যেটি জার্মানীতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে দুটি ব্রোঞ্জ মডেল জিতেছিলেন এবং তিনি একজন খাটি নিরামিশাষী ছিলেন। লেবই বুবেল, যিনি একজন বিখ্যাত স্প্রিন্টার এবং ১০০ মিটার স্প্রিন্টের দ্বিতীয় সেটের বিশ্ব রেকর্ডটি তার দখলে রয়েছে। তিনি আমেরিকার হয়ে ১৯৯২ সালে বার্সেলোনায় একটি স্বর্ণপদক অর্জন করেছিলেন তিনিও একজন আজন্ম নিরামিশাষী হিসেবে পরিচিত লাভ করেছিলেন। নিরামিশাষী খেলোয়াড়দের এসফলতায় উদ্ভাষিত হয়ে ১৯৯২ সালে প্রকাশিত বিখ্যাত অলিম্পিক কোজ ম্যাগাজিন’ এ ছাপানো হয়েছিল যে, “যদি দৈনন্দিন খাদ্যাভাসের তালিকায় শুধু নিরামিষের হরেক রকম খাবার অন্তর্ভূক্ত করা হয় তাহলে একজন এথলেট ভালো এথলেট হতে পারে। অলিম্পিকের প্রাচীন ইতিহাসে অনেক গ্রীক এথলেট নিরামিশাষী হয়ে বিভিন্ন ইভেন্টে চমকপ্রদ সাফল্য দেখিয়েছিল”। এবারের “বেইজিং অলিম্পিক ২০০৮” এ রোনডা রউসে ‘জুডো’ ইভেন্টে প্রথম আমেরিকান মহিলা হিসেবে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন। তাকে তার সাফল্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন “আমি এখন সম্পূর্ণরূপে নিরামিশাষী, আর আজকের এ সাফল্য আমার এই খাদ্যাভাসের উপর ভিত্তি করে অর্জিত হয়েছে। অ্যান মারিয়া ডে ম্যাবস নামক আরেকজন নিরামিশাষী খেলোযার জুডো ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে পদক অর্জন করেন। তাকে এক রিপোর্টার প্রশ্ন করেন যে, একজন নিরামিশাষী হয়ে কিভাবে জুডোর মত এরকম হিংস্র খেলা খেলতে পারেন। তার উত্তরে তিনি বলে “হ্যা আমরা প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন হতে পারি কিন্তু ২ আমরা তো তাদের হত্যা কিংবা আহার করি না”, এক্ষেত্রে তিনি পরোক্ষভাবে নিরামিশ আহারের উপর জোড় উক্তি প্রদর্শন  করেছিলেন। প্রায় অনেকবার “চৈতন্য সন্দেশ’ পত্রিকায় নিরামিশ আহার সম্পর্কে  বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও দার্শনিক এবং পৃথিবীর  বিখ্যাত বিখ্যাত ব্যক্তিদের সমর্থন ও গ্রহণ । সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছিল । ‘নিরামিশ আহার করুন’ এ শ্লোগানটি এবারের বেইজিং অলিম্পিয়ানরা তো রয়েছেই সঙ্গে অলিম্পিক ইতিহাসের বিভিন্ন অলিম্পিয়ানরা জোরভাবে সমর্থন জানালেন। তাহলে আপনি কেন এ – শ্লোগানের বহির্ভূত হবেন ? আর দেরী না  করে আজই নিরামিশ তথা প্রসাদের মত । খাদ্যাভাসের বশবর্তী হয়ে নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলুন। হরেকৃষ্ণ।

সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।