অনিয়ন্ত্রিত যৌন সঙ্গের ফলঃ ভ্রুণ হত্যা

প্রকাশ: ৯ মার্চ ২০২২ | ১:৩৫ অপরাহ্ণ আপডেট: ৮ মে ২০২২ | ১২:৫৩ অপরাহ্ণ

এই পোস্টটি 388 বার দেখা হয়েছে

অনিয়ন্ত্রিত যৌন সঙ্গের ফলঃ ভ্রুণ হত্যা

সারাবিশ্বে বর্তমানে মাতৃগর্ভে ভ্রুণ হত্যা তথা শিশু হত্যাযজ্ঞের উৎসব চলছে। এই অমানবিক কর্মকাণ্ড দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর কারণ হচ্ছে নারী পুরুষের অনিয়ন্ত্রিত যৌন জীবন যাপন। প্রথমত অবিবাহিত অবস্থায় যৌন উদ্দিপনার চঞ্চলতায় নারী পুরুষের অবাধ গোপনীয় যৌন সঙ্গ। দ্বিতীয়ত বিবাহিত অবস্থায় স্বামী বা স্ত্রীর অবর্তমানে পরকীয়া সম্পর্ক। তৃতীয়ত স্বামী স্ত্রী উভয়ের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত অনিয়ন্ত্রিত যৌন সঙ্গ। এই সকল যৌন সঙ্গের ফলাফলস্বরূপ মাতৃগর্ভে ভ্রুণের আবির্ভাব ঘটে। যৌন মিলনের মাধ্যমে পুরুষের বীর্যের শুক্রাণু নারীর ডিম্বাণুতে মিলিত হয়ে জাইগোট সৃষ্টি করে। যাকে ভ্রুণ বা ফিটাস বলা হয়। এই ভ্রুণ হচ্ছে মাতাপিতার সন্তান যা তখোনো পূর্ণাঙ্গরূপ প্রাপ্ত হয় নি। এই ভ্রুণ মাতৃগর্ভের জরায়ুতে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হতে থাকে। যৌবনের উন্মাদনায় যুবক যুবতীরা মিলন গ্রস্ত হয় কিন্তু তার মাধ্যমে উৎপন্ন হওয়া তাদের গর্ভস্থ সন্তানদের কথা তাদের মনে থাকে না। পরবর্তীতে যখন তারা সেটি বুঝতে পারে তখন অবিবাহিতরা সাধারণত সামাজিকতা তথা লোকলজ্জার ভয়ে গোপনে গর্ভপাত ঘটায়। তাদের গর্ভস্থ নিষ্পাপ শিশুটি সমাজে অবৈধ শিশুরূপে পরিগণিত হয়। এছাড়া বিবাহিত স্বামী স্ত্রীরা ও স্বেচ্ছায় গর্ভপাতের মাধ্যমে তাদের সন্তানকে বলি দিচ্ছেন। বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি (1) সাধনের ফলে তারা পূর্বেই অবগত হতে পারছেন যে, তাদের সন্তান ছেলে কিংবা মেয়ে কিনা। অধিকাংশ সময় গর্ভে মেয়ে সন্তান নজরে এলেই তারা এভোরশান বা গর্ভপাতের আশ্রয় নিচ্ছেন। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষের মানসিকতা হচ্ছে নিজের ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য যতো ইচ্ছা তত সেক্স জীবন যাপন করে যাও এবং তার ফলাফলস্বরূপ সৃষ্ট নিষ্পাপ ভ্রুণ সন্তানদের হত্যা কর। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এই ধরণের কর্মকাণ্ডকে আইন সঙ্গতভাবেও স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। গর্ভস্থ ভ্রুণ হত্যা একটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক পদ্ধতি। আধুনিকতার ছলে কিছু অর্থলোভী কসাইরূপ ডাক্তারদের দিয়ে নরপিশাচরূপ পিতা-মাতারা বিভিন্ন যন্ত্রণাদায়ক পন্থা অথবা বিভিন্ন ঔষধ পরাধি ব্যবহারের মাধ্যমে নির্বিঘ্নেই এই পাশবিক কাজ করে চলেছে। পূর্ণাঙ্গ ভ্রুণকে আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে প্রচন্ড চাপ, অসহা তাপ যন্ত্রণা প্রয়োগ ছাড়াও বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টির মাধ্যমে এমনভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয় যা এখানে বর্ণনা করার ভাষা আমাদের নেই। অনেক সময় পূর্ণরূপ প্রাপ্ত ভ্রুণ শিশুকে গর্ভে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে টুকরো টুকরো করে বের করে আনা হয়। এমনকি এও দেখা যায় যে, সেই তথাকথিত পিতা-মাতারা স্নেহের বহিঃপ্রকাশস্বরূপ তাদের প্রিয় সন্তানের খন্ড খন্ড দেহের অংশগুলো রাতের অন্ধকারে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে কুকুর, বিড়ালদের খাওয়ান। এটি ঠিক একজন খুনির কাউকে হত্যা করে লাশ গায়ের করার মতো। এভাবেই পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট, বর্বর পিতামাতারা প্রতিনিয়তই তাদের সহজাত আবেগ, নৈতিক অনুভূতিতে পূর্ণ তথাকথিত মাতৃত্ববোধকে যৌন উদ্বেগের কাছে বলি দিয়ে তাদের গর্ভজাতক কোমল, নিষ্পাপ শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে যাচ্ছে। এটিই যদি একজন মায়ের মাতৃত্ববোধ হয়ে থাকে তবে সেই মাতৃত্ববোধকে গলা টিপে হত্যা করা উচিৎ। এটি পিতা-মাতার ঠিক কসাই ভাড়া করে। (কতিপয় ডাক্তার) কসাইখানায় (বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে) একটি পশুকে হত্যা করার মতো।
একজন খুনিকে হত্যার অভিযোগে ফাঁসি দেওয়া হয়। তাহলে দিনের পর দিন কৃত্রিমভাবে অত্যন্ত যন্ত্রণা দিয়ে নিজের সন্তানকে হত্যাকারী এইসব অতিস্নেহে আবিষ্ট মাতা-পিতাদের (1) বিজ্ঞ পাঠকগণ কি শান্তি দিবেন ? এই প্রশ্ন রইল সুশীল সমাজের প্রতি। মাতা-পিতারা সাধারণত তাদের ভূমিষ্ট হওয়া শিশুকে “আমার আদরের প্রাণধন সন্তান” বলে দাবি করে। কিন্তু যেসব সন্তানকে তারা গর্ভে হত্যা করেছেন তারা কি তাদের আদরের সন্তান ছিল না ? প্রশ্ন রইল সেইসব মা-বাবার প্রতি আপনাদের হিংস্র থাবায় পৃথিবীর আলো দেখার পূর্বেই ঝরে যাওয়া সেইসব সন্তানদের কি দোষ ছিল? যারা আপনাদেরই অনিয়ন্ত্রিত যৌন জীবনের ফল। (চলবে…..)


 

চৈতন্য সন্দেশ মে -২০০৮ প্রকাশিত
সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।