শ্রীশ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী গুরু মহারাজের প্রদত্ত সর্বশেষ প্রবচন

প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১১:০০ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

এই পোস্টটি 218 বার দেখা হয়েছে

শ্রীশ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী গুরু মহারাজের প্রদত্ত সর্বশেষ প্রবচন

হরে কৃষ্ণ, আশা করছি তোমরা সকলেই ভাল আছো। সকলেই ভক্তিপথে খুব সুন্দরভাবে অগ্রসর হচ্ছো। তোমাদের সঙ্গলাভ করার সুযোগ পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। বাংলাদেশের প্রতি আমার স্বাভাবিক ভাবেই একটা টান রয়েছে। আর বিশেষ করে তোমরা যেভাবে ভক্তিপথে এগিয়ে এসেছো, যেভাবে নিষ্ঠা সহকারে ভক্তিপথ গ্রহণ করেছ, সেজন্য আমাদের খুবই আনন্দ হয়। সেই সঙ্গে আমার আক্ষেপও হয় যে, আমি বাংলাদেশে ততটা সময় দিতে পারছি না। পরের বার যখন আমি বাংলাদেশে যাব একটু বেশি সময় দেয়ার চেষ্টা করব।

ভগবানকে ভালবাসার পথ

ভক্তিপথ মানে ভগবানকে ভালবাসার পথ। আমি জানি, তোমরা সকলেই ভগবানকে মানো। শ্রীল প্রভুপাদের কৃপায় আমরা সকলেই জানতে পেরেছি কৃষ্ণ হচ্ছেন ভগবান। “কৃষ্ণঃস্তু ভগবান স্বয়ম্”। সেই কৃষ্ণ সকলের হৃদয়ে রয়েছেন পরমাত্মারূপে। শাস্ত্রে বলা হয়েছে তিনি সাক্ষী রূপে ও অনুমোদন কর্তা রূপে আমাদের মধ্যে রয়েছেন। তিনি যেটা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক বলে মনে করেন, সেটাই তিনি অনুমোদন করেন। কিন্তু তিনি শুধু সাক্ষী রূপে আমাদের মধ্যে থাকেন না, ভগবান আমাদের অন্তরে থেকে শুনতে চান যে আমরা তাঁকে কতটা ভালবাসি। কেবল মানুষের শরীরেই ভগবান পরমাত্মা রূপে রয়েছেন তা নয়, তিনি প্রতিটি জীবের হৃদয়ে রয়েছেন। তিনি আত্মার সঙ্গে রয়েছেন, তাই আত্মা যেখানে যাচ্ছে ভগবানও সেখানে যাচ্ছে। এই বঙ্গভূমি একটি বিশেষ স্থান। এই স্থানে মহাপ্রভু অবতীর্ণ হয়ে সমস্ত বঙ্গভূমিকে এবং বাঙ্গালি জাতিকে ধন্যাতিধন্য করেছেন। আমরা এই বঙ্গভূমিতে জন্মলাভ করার ফলে মহাপ্রভুর অনেক কাছে এসে গেছি। মহাপ্রভু এই ভাষায় কথা বলেছেন, আমাদের মহাপ্রভুর সাথে কথা বলতে কোন অসুবিধা হবে না। কৃষ্ণের সঙ্গে কথা বলতে হলে সংস্কৃতে কথা হবে, কিন্তু মহাপ্রভুর সাথে আমরা বাংলায় কথা বলতে পারি, কারণ আমরা পবিত্র বঙ্গভূমিতে জন্মগ্রহণ করতে পেরেছি। শুধু বঙ্গভূমি নয়, এই ভারতবর্ষ একটা পবিত্র স্থান। এই ভারতবর্ষে মনুষ্য জন্ম পেয়ে আমরা ধন্যাতিধন্য হয়েছি। মহাপ্রভু বলে গেছেন, “ভারত ভূমিতে হইল মনুষ্য জন্ম যার। জন্ম সার্থক করি কর পর উপকার॥” ভারতবর্ষ মানে যেখানে সকলে ভগবদ্ভক্তি অনুশীলন করে। যেখানে মানুষ বৈদিক সংস্কৃতি অনুসারে জীবন যাপন করে সেটি হচ্ছে ভারতবর্ষ। শ্রীল প্রভুপাদের কৃপায় সারা পৃথিবী জুড়ে ভারতবর্ষ স্থাপন হয়েছে।
মহাপ্রভু বলেছেন “পৃথিবীতে আছে যত নগরাদি গ্রাম, সর্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম। আমরা এই যে সুযোগটা পেয়েছি, এই সুযোগের সদ্্ব্যবহার করে সকলেই সর্বত্র কৃষ্ণ ভক্তি প্রচার করব। বাংলাদেশের অনেক ভক্ত সিঙ্গাপুর ও দুবাই-এ আছে। ওরা খুব নিষ্ঠা সহকারে কৃষ্ণ ভক্তি করছে। তোমরা সকলেই এই পথটাকে অবলম্বন করে থাক। এই পৃথিবীতে দুঃখ-দুর্দশা আসবেই সেটা স্বাভাবিক। সুতরাং জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি এগুলো থাকবেই, সেজন্য আমরা বিচলিত হব না, বরং বাইরে থেকে যখন এরকম বিপৎসংকুল পরিবেশ আসবে তখন আমরা আরো বেশি করে কৃষ্ণের স্মরণ নেব। এই পরিস্থিতি থেকে কেউ আমাদের রক্ষা করতে পারবে না। কৃষ্ণ আমাদের রক্ষা করবেন, এই বিশ্বাসটা রাখতে হবে। ভক্তিপথে যারা এগিয়ে আসছে, তোমরা যারা নেতৃস্থানীয় ভক্ত রয়েছ, তারা সকলে এদেরকে খুব সুন্দরভাবে ভক্তিপথে এগিয়ে নিয়ে চল। কী করে ভালো ভক্ত হতে হয় সেই শিক্ষা তাদের দান করো। অন্যান্য সমস্ত ভক্তরাও যারা নেতৃস্থানীয় রয়েছে তাদের শিক্ষা-গুরু-রূপে গ্রহণ করে তাদের যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করো। তারা যে নির্দেশগুলো দেন সেগুলো পালন করে এই পথে এগিয়ে চলো। এভাবে সারা বাংলাদেশে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করো। শ্রীল প্রভুপাদ কি জয়।


মাসিক চৈতন্য সন্দেশ সেপ্টেম্বর ২০২২ হতে প্রকাশিত
সম্পর্কিত পোস্ট

‘ চৈতন্য সন্দেশ’ হল ইস্‌কন বাংলাদেশের প্রথম ও সর্বাধিক পঠিত সংবাদপত্র। csbtg.org ‘ মাসিক চৈতন্য সন্দেশ’ এর ওয়েবসাইট।
আমাদের উদ্দেশ্য
■ সকল মানুষকে মোহ থেকে বাস্তবতা, জড় থেকে চিন্ময়তা, অনিত্য থেকে নিত্যতার পার্থক্য নির্ণয়ে সহায়তা করা।
■ জড়বাদের দোষগুলি উন্মুক্ত করা।
■ বৈদিক পদ্ধতিতে পারমার্থিক পথ নির্দেশ করা
■ বৈদিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।
■ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করা ।
■ সকল জীবকে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা স্মরণ করানো ও তাঁর সেবা করতে সহায়তা করা।