এই পোস্টটি 92 বার দেখা হয়েছে
পৃথিবীতে আছে যত নগরাদি গ্রাম।
সর্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম ।।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুর এই ভবিষ্যদ্বাণীকে বাস্তবরূপ দিলেন তাঁরই এক অনন্য ভক্ত, শক্ত্যাবেশ অবতার, নিত্য পার্ষদ কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ, যিনি সারা বিশ্বে কৃষ্ণভাবনামৃতের প্লাবন নিয়ে এলেন। আর যাঁরা শ্রীল প্রভুপাদের চরণে ঐকান্তিক শরণাগতি লাভ করে এই কৃষ্ণভাবনামৃত সারা বিশ্বের শহর, নগর, গ্রামে পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁদের মধ্যে শ্রীমৎ সুভগ স্বামী মহারাজ অন্যতম।
জন্ম
বাংলাদেশের বিক্রমপুরের এক সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবার কালক্রমে কলকাতায় তাদের বসতি স্থাপন করেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। এই সম্ভ্রান্ত এবং আভিজাত্য পরিবারে ২২ ডিসেম্বর ১৯৪০ সালে কলকাতায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
একদিন হঠাৎ একজন সাধুর আগমন হয়। সাধু মহারাজের মায়ের বাবাকে বললেন যে তোমার মেয়ে শীঘ্রই এক দিব্য পুত্র সন্তানের (মহাপুরুষের) জন্ম দিবে যিনি ভগবানের এক পরম ভক্তরূপে সারা বিশ্বে খ্যাতি লাভ করবেন। মহারাজের মা বললেন যখন থেকে এই পুত্র আমার গর্ভে আসে তখন থেকে আমি এক দিব্য আনন্দ আর উন্মাদনা অনুভব করতাম।
বাল্যকালে তাঁর আদরের ডাক নাম ছিল শম্পু। কিন্তু ভাল নাম ছিল মিলন কুমার তালুকদার। ছোটবেলায় খুবই দুষ্টু ছিলেন। পড়াশুনায় মেধা ছিল অসাধারণ। খুবই তীক্ষ্ম বুদ্ধি ছিল তাঁর। “ও ছিল ভাল সাঁতারু। গঙ্গানদীকে সহজে সাঁতার কেটে পার করতেন” বললেন মহারাজের মা। শৈশব কাল থেকে মহাভারত, রামায়ণ, ভাগবত পুরাণ উপনিষদ আদি ধর্মীয় গ্রন্থের কাহিনী শোনার প্রতি তাঁর রুচি ছিল। খেলাধূলায় কখনও সময় নষ্ট করতেন না।
শ্রীল প্রভুপাদের সাথে সাক্ষাৎ
যে কলেজ থেকে শ্রীল প্রভুপাদ গ্র্যাজুয়েশন করেন ঐ একই স্কটিশচার্চ কলেজ থেকে তিনি ইন্টারমিডিয়েট এবং মহারাজা মণীন্দ্র চন্দ্র কলেজ থেকে বি.এস.সি সম্পূর্ণ করেন। তারপরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য এই প্রথমবার কলকাতা শহরের বাইরে অনেক দূরে লণ্ডনে আসেন। এটা ছিল ২০ নভেম্বর ১৯৬৫ সাল, যে বছরে শ্রীল প্রভুপাদ আমেরিকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তাঁর পিতা লণ্ডনে এসে ইঞ্জিনিয়ারিং করার সমস্ত খরচ বহন করেন, কিন্তু তিনি আধ্যাত্মিক জীবনের প্রতি রুচিসম্পন্ন ছিলেন বলে পড়াশুনা শিথিল হয়ে যায়। একদিন ব্রিটিশ মিউজিয়ামে যেখানে তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ এবং চিত্র দেখতে যেতেন ঘটনাক্রমে তিনি এক মন্দিরে গিয়ে পৌঁছান। মন্দিরে দরজার সামনে চমৎকৃত হয়ে যান একজন মাথা নেড়া, গেরুয়া পোশাকধারী বিদেশী সাধুকে মন্দির পরিষ্কার করতে দেখে। কলকাতায় একজন গেরুয়া পোশাকধারীর সাথে তিনি পরিচিত ছিলেন মাত্র। কিন্তু এখানে লণ্ডনে এটা ছিল চমকপ্রদ দৃশ্য। ভক্তের নাম ছিল জেফ কুকার সবেমাত্র কিছুদিন হল মন্দিরে যোগদান করেছে। জেফ মহারাজকে নিমন্ত্রণ করে রাধাকৃষ্ণকে দর্শন করালেন। প্রথম দর্শনেই মহারাজের চোখে ভক্তরা খুবই দিব্য এবং উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল তাদের মুখমণ্ডল। তারপর থেকে তিনি রোজ সকালে মন্দিরে যেতেন দর্শন করতে।
“প্রভুপাদের সাথে সাক্ষাতের আগে আমার বাইরের ভক্তদের সঙ্গে দেখা হয়। আমি মধ্য লণ্ডনের প্রধান সড়কে ভক্তদের প্রথম কীর্তন ও নৃত্য করতে দেখি। আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। তখন ইসকন নতুন স্থাপনা হয়েছে। একজন ভারতীয় প্রফেসর তিনি বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন। হঠাৎ তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “তুমি ভারতীয়?” আমি বললাম – “হ্যাঁ”। তুমি এদের দেখেছ? আমি উত্তর দিই- “হ্যাঁ, আমি দেখেছি।” তোমার কি প্রতিক্রিয়া? আমি বিশ্বাস করতে পারছি না কিভাবে পাশ্চাত্য যুবক-যুবতীরা সুন্দর তিলক কেটে যুবকেরা মাথা নেড়া করে, যুবতীরা শাড়ী, বিবাহিত হলে মাথায় সিঁন্দুর দিয়ে অবিকল ভারতীয়দের মত নৃত্য করে। যেহেতু তাদের গায়ের রঙ অনেক পরিষ্কার, তাই দেখে মনে হচ্ছে, বৈকুন্ঠ ধাম থেকে ময়ূর নেমে এসে নৃত্য করছে। শ্রীল প্রভুপাদ একবার বলেছিলেন যে, এই পাশ্চাত্য দেশের যুবতীরা আমার সাদা হাতী অর্থাৎ খুব দুষ্প্রাপ্য, সাদা হাতি খুব সচরাচর দেখা যায় না। যদি কোন ভারতীয় রাস্তা দিয়ে কীর্তন করে, আমি জানি না সেটা কতজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে? কিন্তু আপনি যদি হঠাৎ এদের দেখেন- যখন শ্রীল প্রভুপাদ প্রথমবার তাঁর পাশ্চাত্য যুবক-যুবতীদের নিয়ে সুরাট আসেন, তখন পুরো সুরাট শহরের লোক এই পাশ্চাত্য যুবক-যুবতীদের দেখতে আসেন। যুবকেরা ধুতি কুর্তা পরে, যুবতীরা শাড়ী পরে, সবাই তিলক কেটে মৃদঙ্গ করতাল নিয়ে কীর্তন করছে, অবিশ্বাস্য! তাই আমি যখন দেখলাম, তখন আমি বিশ্বাস করতে পারলাম না। আমার স্বপ্ন মনে হল। এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, তারা কিভাবে এরকম করছে। তারা আমাকে একটি পত্রিকা দিল। আমি তখন ছাত্র, তাই আমার সাধ্যের বাইরে। তাই দ্বিধাবোধ করছিলাম। কিন্তু তারা নাছোড়বান্দা। যাই হোক আমার কাছে তখন মাত্র বাড়ি ফেরার ভাড়া আছে। রাতে খুব মুশকিল, অনেক দূর- হয়তো তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার। কিন্তু তারা যখন জোর করছে আমি কি করতে পারি? আমি অসহায়। সে আমাকে কিছু দিচ্ছে, তাই আমার তাকে কিছু দিতে হবে, তাই আমার সর্বস্ব বের করে বললাম-“দেখুন, আমার কাছে কেবল এইটুকু আছে এবং সেটা তাকে দিলাম?” সে ঠিক আছে বলে সেটাই গ্রহণ করল। তারপর আমি বাড়ি ফিরে গেলাম এবং পত্রিকাটি খুললাম। আমি সেটি অন্যদের দেখাতে চাই নি, আমার ঘরে পত্রিকাটি কেবল টেবিল গ্লাসের নীচে রাখতাম। যেহেতু আমার সাথে অন্যরা থাকত যদি তারা দেখে; তারা বলবে কি! তুমি একজন ছাত্র আর এইসব ধর্মীয় ব্যাপার পড়ছ। তারা আমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করবে। তাই আমি এটা লুকিয়ে রাখতাম। রাতে যখন বাকীরা ঘুমিয়ে আছে তখন আমি সেটা পড়তাম। সেই সময় আমি এক প্রকার সুগন্ধ পত্রিকার পাতা পেতে পেতাম। খুবই আকর্ষণীয় গন্ধ।
পরে আমি তাদের এক কেন্দ্র খুঁজে পেলাম। ব্রিটিশ মিউজিয়ামের কাছে আমি একটা সাদা বিল্ডিং এ লেখা দেখলাম, “রাধাকৃষ্ণ টেম্পল”। খুব বেশি বড় নয়। ভেতরে ছোট, চার-পাঁচ তলা। কিন্তু বাড়ির সদর দরজায় আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “আমি কি প্রবেশ করতে পারি?” ভেতরে ঢোকা মাত্রই আমি দেখলাম একজন নেড়া মাথার যুবক-অল্প চুল শিখার মতো। পাশ্চাত্য দেশে, একজন পাশ্চাত্য যুবক বালক নেড়া মাথা এবং শিখার সাথে, চিন্তা করা অসম্ভব। যুবকটি পালিশ করছে। দরজার কাছে মাঝে মাঝে চিঠি ফেলার একটি ছিদ্র থাকে এবং হাতল থাকে ভেতরের দিকে ধাক্কা দিয়ে ঢোকার জন্য। পদ্মফুলের অংশবিশেষের সদৃশ-পিতল রঙের এবং যুবকটি ভাল করে পালিশ করছে। দেখতে সোনার মতো আসলে পিতল। কিন্তু চকচক করলে সোনার মতো দেখতে লাগে। তাই কৌতুহলবশতঃ মধ্য লণ্ডনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বাড়ি; নীল রঙে লেখা “রাধাকৃষ্ণ টেম্পল” আমি এটার সামনে দিয়ে যাচ্ছি। আমার পুরানো অভ্যাস আছে। তাই কৌতুহলবশতঃ আমি জিজ্ঞেস করি, আমি ভিতরে যেতে পারি? আমি ভিতরে ঢুকলাম। আমি একটি ছোট গলি দেখি। একটি সিঁড়ির নীচে বেসমেন্টে গেছে এবং আরেকটি সিঁড়ি উপরে গেছে। হাতের বাঁ দিকে একটি বড় মোটা দরজাতে ওভাল এবং ভিতরে দেখা যায়, ডানদিকের দেওয়ালে একটি বড় চিত্রে নারদ মুনি বীনা বাজাচ্ছেন। পুরো বাড়িটা রাতে সেই একই সুগন্ধে ভরা চন্দনের গন্ধ। বাঁদিকের দরজা আমি ঠক্ঠক্ করে বড় ভারী কাঠের দরজা ঠেলে দেখি, দুই দিকে বেগুনি রঙের কার্পেট; উপরে নৌকার খোলের মতো উল্টো করে লাগানো-স্বর্ণালী হলুদ রঙের এবং দুই দিকে চৈতন্য মহাপ্রভুর কিংবা রাধাকৃষ্ণ চিত্র। একদিকে কোনায় শ্রীল প্রভুপাদের ব্যাস আসন এবং তাঁর বড়ো ছবি। এখানকার মতো নয়। সোজা মুখোমুখি- মধ্যখানে সোজা গেলে ঠাকুরের আসন এবং সেখানে খুব সুন্দর রাধাকৃষ্ণ, রাধাগোবিন্দ বিগ্রহ তারা বলে, “শ্রীশ্রীরাধালণ্ডনেশ্বর।” তারা উপরে কাঠের বেদীতে জগন্নাথ, বলদেব এবং সুভদ্রা। আমি লণ্ডনের কেন্দ্রে এত সুন্দর মন্দির দেখে চমকে গিয়েছিলাম। তারপর আমি ওখানকার ভক্তদের সাথে পরিচিত হলাম। তখনকার যুবক-যুবতীরা বেশিরভাগ আমেরিকান। কিন্তু ইউরোপীয় যুবক-যুবতীরা ওখানে আছে। আমি নিয়মিত সকালে ভাগবত গীতা প্রবচনে যেতাম এবং কিছু উৎসব যেমন রামনবমী। একদিন তারা আমাকে তাদের সাথে রাস্তায় তাদের সাথে কীর্তনে যোগ দিতে আহ্বান করল। তারা আমাকে প্রচার করছে এবং বলছে, “এটা তোমাদের সংস্কৃতি আমরা প্রচার করছি। তুমি কেন আসছ না? আমাদের গুরুমহারাজও ঐ কলকাতা থেকে এসেছেন; যে শহর থেকে তুমি এসেছ- তোমার আমাদের সাথে যোগ দেওয়া উচিত। তারপরে একদিন তারা আমাকে আসতে বলল, তারা বার বার আসতে বলছিল এবং আমি সবসময় ফিরিয়ে দিচ্ছিলাম। একদিন শুধু পরীক্ষণের জন্য আমি দেখতে গেলাম তারা কিভাবে থাকে এবং সেইভাবে আমি থাকতে পারব কি না। তারা আমাকে কলেজ, বাড়ি যেতে দিল না। কোন সামগ্রী, ব্যাগ, পাসপোর্ট কিছুই আনতে দিল না। তারা বলল কৃষ্ণ সবকিছু দেয়। তারপর একদিন আমাদের গুরুমহারাজ আসবে তুমি তাঁর সাথে কথা বল। এরপর শ্রীল প্রভুপাদ এলেন; আমি তাঁকে দেখলাম এবং আমার দণ্ডবৎ প্রণাম নিবেদন করলাম। তারপর তিনি আমাকে ডাকলেন। জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কোথা থেকে এসেছ। আমি তাঁকে সবকিছু বললাম।”
মহারাজের পিতা তাঁকে ভারতে ফিরে আসার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিলেন এবং তিনি পরিবারকে অখুশী করার কারণে ভয়ভীত ছিলেন। কিন্তু একজন ভক্ত তাকে ভগবদ্গীতা দেখালেন যেখানে শ্রীল প্রভুপাদ লিখেছেন যখন কেউ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে শরণাগত হয় তখন সে সবার ঋণ থেকে মুক্ত হয়। এটাই তোমাদের সংস্কৃতি।” ভক্ত তাকে জোর করে বললেন-“কেন তুমি আসছ না আমাদের মতোই একজন ব্রহ্মচারী হয়ে জীবন নির্বাহ করতে। সেদিন সন্ধ্যায় ‘ব্যাক টু গডহেড’ পত্রিকা নিয়ে ঘরে ফিরে বিছানার নীচে রাখেন। যখন তার অন্য সাথীরা ঘুমিয়ে পড়ছে তখন তিনি সেটা পড়তে শুরু করেন। এটা আগরবাতির সুগন্ধে ভরপুর ছিল এবং তার গন্ধ সারা ঘরটায় ছড়িয়ে পড়ল। সেই রাত্রে অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে এক আধ্যাত্মিক আনন্দে আত্মহারা হলেন।
মন্দিরে মন্দাকিনী মাতাজীর সাথে বন্ধুত্ব হল এবং তিনি দেখতেন যেন সে ভাল প্রসাদ পায়। একদিন মহারাজ একগোছা লাল (সস্তা) ফুল (যেটাকে সেখানে বলা হয় ডেফোডিলস) আনলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে অর্পণ করার জন্য। মন্দাকিনী মাতাজী খুবই প্রশংসা করলেন এই উপহারের জন্য এবং বললেন কেন সে মন্দিরে যোগদান করছে না। একটু ভয়ভীত হলেন। প্রথমদিনে সারাটা দিন রাস্তায় নগরকীর্তন করে কাটালেন এবং তা শেষ হল পুলিশের তাড়া খেয়ে।
পরের দিন তিনি ধুতিকুর্তা পরে সংকীর্তনে যোগদান করলেন। ভক্তরা বললেন, “কোন চিন্তা করো না, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপর ভরসা কর। তিনি আমাদের রক্ষা করবেন।” অন্যরা হাসল এবং তিনি যেন ওদেরকে বিশ্বাস করলেন। তাঁর সব ভয় দূরীভূত হলো।
পরের দিন তিনি রাজী হলেন মাথানেড়া করতে এবং তার পরের দিন তারা তাঁকে মাথানেড়া করে দিলেন। যখন তিনি মন্দিরে নেমে আসছিলেন তখন সব ছেলেমেয়েরা ধুতিকুর্তা পরিহিত এক বাঙালী বৈষ্ণবকে দেখে সবাই আনন্দে নৃত্য কীর্তন করতে লাগল। তিনি অনুভব করলেন যেন তিনি তাঁর আসল পরিবারের সাথে যুক্ত হলেন- তাঁর পিতা শ্রীল প্রভুপাদের সঙ্গে।
বার্মিংহোমে দিগি্বজয় প্রভু এবং পৃথা প্রভু ছিলেন অন্যকারও সাহায্য ছাড়াই। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মহারাজকে তাদের কাছে পাঠিয়ে সেখানকার হিন্দুদের মধ্যে প্রচার করবার জন্য। সেখানে তিনি অনেক ঘন্টা ব্যয় করতেন একটা ম্যাগাজিন বিক্রি করার জন্য। কিন্তু খুব বেশী সফলতা পাচ্ছিলেন না। মন্দিরটা ছিল হেণ্ডসওয়ার্থ-এর একটা ভুতুরে বাড়ি, ধ্বংস স্তুপের দিকে যাওয়া একটা রাস্তা ধরে মরুভূমির শেষ প্রান্তে। যখন তিনি সেখানে কখনও একাকী থাকতেন, শুনতে পেতেন একটি শিশু হাসছেন কিন্তু যখন ফিরে দেখতেন কিছুই নেই। তিনি হরে কৃষ্ণ জপ করতেন এবং সব ভয় দূর হয়ে যেত।
বর্তমানে তিনি ইসকনের একজন আচার্য এবং দীক্ষাগুরু। তিনি সারা বিশ্বব্যাপী ভগবানের বাণী প্রচার করছেন। সেইসাথে তিনি লীলা পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, কপিল শিক্ষামৃত, ঈশোপনিষদ, উপদেশামৃত, অমৃতের সন্ধানে, কুন্তীদেবীর শিক্ষা, শ্রীকৃষ্ণের সন্ধানে কৃষ্ণভাবনার অনুপম উপহার, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা, শ্রীল প্রভুপাদের বিভিন্ন গ্রন্থ ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেন। এছাড়াও চৈতন্য মঙ্গল, অদ্বৈত প্রকাশ, প্রেম প্রদীপ, আনন্দ বৃন্দাবনচম্পু বিভিন্ন পারমার্থিক গ্রন্থাবলী বাংলা ও সংস্কৃত থেকে ইংরেজীতে অনুবাদ করেন।