এই পোস্টটি 291 বার দেখা হয়েছে
যখন নন্দলাল কৃষ্ণের বয়স এক বছর পূর্ণ হল, তখন ভাদ্রপদের পবিত্র মাসে তাঁর প্রথম জন্মদিন উদযাপন করা হয়, সেদিন গর্গমুনির নির্দেশনা অনুসারে কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে পূজা সম্পাদন করা হয় এবং নন্দ মহারাজ কর্তৃক পবিত্র মন্ত্র জপের এক মহোৎসবের আয়োজন করা হয়। সেই উৎসবে বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয় এবং বিভিন্ন ধরণের গীত গাওয়া হয়। শিল্পীরা বিভিন্ন নৃত্য ও নাট্য প্রদর্শন করে। শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে এক মনোরম অভিষেক সম্পাদিত হয়। তখন অনেক ধরণের উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়, তখন ব্রজবাসীদের মধুর ও উল্লেখিত শব্দে চারদিক মুখোরিত হল তিল বীজ সহিত ৬ ভাগে সেটি উদ্যাপন করা হয়, সেগুলো হল: ১) তিলোধ্বতি, কৃষ্ণের শরীরে তিল বীজের প্রলেপ লাগানো ২) তিল্লায়ি, তিলবীজ দ্বারা মিশ্রিত জল দ্বারা কৃষ্ণকে অভিষেক করানো ৩) তিলহোমি, যজ্ঞে তিল বীজ অর্পন করা ৪) তিলপ্রদি, ব্রাহ্মণদেরকে তিল বীজ প্রদান করা ৫) তিলভুক, তিলবীজ থেকে তৈরি বিভিন্ন উপাদ্য কৃষ্ণকে খাওয়ানো ৬। তিলকপি, ভূমিতে তেল বীজরোপন করা, অন্যান্য বিবিধ বস্তু যেমন ধূলি অগুর শস্যও সবুজ দুর্বা ঘাস ইত্যাদি কৃষ্ণের দিব্য শরীরে ব্যবহৃত হয়, কৃষ্ণের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির জন্য মৎস্য মোচন নামে একটি পবিত্র অনুষ্ঠান উদ্যাপন করা হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর উৎসবের আয়োজন আরো বর্ধিত হয় যেন, কৃষ্ণের বয়সের সঙ্গে প্রতিটি উৎসবের সম্পর্ক রয়েছে। বয়োজ্যেষ্ঠরা যে সমস্ত খাদ্যশস্য ও বস্ত্র কৃষ্ণকে উপহার স্বরূপ প্রদান করেছিল সেগুলোর মাধ্যমে ঐ সমস্ত ব্যক্তির নাম ও খ্যাতি লাভ হয়েছিল। লোকেরা তখন বলত, এই বস্ত্রটি দিয়েছেন উপনন্দ এবং এই সমস্ত শস্য প্রদান করেছেন অভিনন্দন।”
এদিকে মাতা যশোদা প্রসাদ প্রদান করে শিশু কৃষ্ণকে কোলে নিয়ে তাঁর সাথে ক্রীড়া করছিলেন। মাঝে মাঝে তিনি কৃষ্ণের মুখমণ্ডলকে নিজের মুখমণ্ডলে স্পর্শ করেন। তাঁকে চুম্বন করেন এবং শিশু সুলভ ধ্বনিতে কথা বলতেন যাতে কৃষ্ণ সন্তুষ্ট হন। এর মাধ্যমে যখন কৃষ্ণ হাসতেন তখন যশোদাও হাসতেন হাসতেন এবং অপরিসীম আনন্দের ধারায় নিমজ্জিত হতেন।
মাসিক চৈতন্য-সন্দেশ সেপ্টেম্বর ২০১৮