এই পোস্টটি 1124 বার দেখা হয়েছে
১৬ জুলাই ১৯৬৯, অ্যাপেলা-১১ নামে একটি মহাকাশযান নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আকাঙ্খিত চন্দ্রবিজয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। রওনা হওয়ার ৪ দিন পর সেই মহাকাশযানটি চাঁদের মাটিতে স্পর্শ করে বিশ্ববাসীকে নাসা জানান দেই যে, অবশেষে মানুষ চাঁদকে জয় করতে পেরেছে। চন্দ্র বিজয়ের প্রথম মানব হিসেবে নিল আর্মস্ট্রং, এডুইন অলড্রীন, মাইকেল কলিন্স তখন পুরো বিশ্ববাসীর কাছে এক চন্দ্রবিজয়ী কিংবদন্তী। চন্দ্র বিজয়ের ৪০ বছর পরেও বিশ্বের অধিকাংশ মানুষেরই এখনও প্রশ্ন ‘মানুষ কি সত্যিই চাঁদে গিয়েছিল?’
এ প্রশ্নের যৌক্তিকতা কতটুকু সেটি ইতোমধ্যেই অনেক বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা প্রমাণ করে গেছেন। তাদের মতে চন্দ্র বিজয়ের ঐ সামগ্রিক কাহিনীটি নিছক প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই এ সংখ্যায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ প্রতারণা অর্থাৎ চন্দ্র বিজয়ের প্রতারণা বিষয়ক কিছু তথ্যাদি পাঠকদের জ্ঞাতার্থে তুলে ধরা হল। আশা করি এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে ৬৯ এর দশকে চন্দ্র বিজয়ের যে প্রতারণা করা হয়েছিল তা পাঠকরা অনুধাবন করতে পারবেন। উল্লেখ্য অ্যাপেলো-১১ এর পরেও অনেক মহাকাশযান চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেছে এটাই দাবী নাসার বিজ্ঞানীদের । তাই এখানে অ্যাপেলো-১১ সহ চন্দ্র অভিযানের প্রতারণা সম্বন্ধীয় প্রমাণও তুলে ধরা হলো।
নিন্মোক্ত গবেষণাসমূহ যারা করেছিলেন তাদের মধ্যে বিজ্ঞানী রলফ রেনে, বিখ্যাত ফটোগ্রাফার আলোকচিত্র বিশেষজ্ঞ ডেভিড ফারসি, বিখ্যাত FOX TV সংগৃহীত থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন গবেষণামূলক তথ্য সহ নাসার গবেষকাবৃন্দও অন্তর্ভূক্ত ছিল।
১। ধুলি কোথায় : (চিত্র ১) যখন চন্দ্রপৃষ্ঠে অ্যাপেলো-১১ মহাকাশযানটি অবতরণ করেছিল তখন অবতরনের সময় একটি বিশাল পরিমাণের ধূলাবালি যানটির চারপাশে উড়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো যানটির নিচের দিকে যেসব থাম রয়েছে সেই থামগুলিতে ধূলাবালি লেগে থাকার কোনো চিহ্ন পর্যন্ত নেই। এমনিতেই চন্দ্রপৃষ্ঠে কোনো আবাহাওয়াই নেই তাই বাতাস থাকার কোনো প্রশ্নই উঠে না। সুতরাং ধূলি উড়ারও কোনো প্রশ্নই উঠেন না। যদিও বা ইঞ্জিনের বেগের কারণে ঐ সময় ধূলাবালি উড়েছিল কিন্তু তবুও যানটির ফুটপ্যাডে কোনো ধূলাবালির চিহ্নই নেই।
২। পায়ের ছাপ :(চিত্র ২) যদিও চাঁদ সম্পূর্ণ শুল্ক জগত কিন্তু তবুও নভোচারীদের পায়ের ছাপ গুলো দেখে মনে হচ্ছে এখানে নিশ্চয়ই স্যাঁতসেতে অবস্থা বিদ্যমান। পানির মাধ্যমে মাটি নরম হওয়ার কারণেই সাধারণত এ ঘটনা ঘটতে পারে । কিন্তু চাঁদে তো মাটি থাকার কথা নয় কেননা যথেষ্ট তাপমাত্রার কারণে এটি সম্পূর্ণ শুষ্ক একটি জগত।
চন্দ্রযানটির ওজন ছিল প্রায় ১৭ টন যদিও পৃথিবী থেকে উড্ডয়নের সময় এটি জ্বালানী গ্যাসে পরিপূর্ণ ছিল তাই এর ওজন আরো বেশি ছিল যখন এটি চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করে তখন এর ওজন আরো কমে প্রায় ১৭ টনের কাছাকাছি হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, নভোচারীদের ওজন অপেক্ষাকৃত কম হওয়া সত্ত্বেও ৩৭ ইঞ্চি বিশিষ্ট ৪ টি বিশাল ফুটপ্যাডের ছাপের গভীরতার চেয়ে নভোচারীদের পায়ের ছাপগুলোর গভীরতা অনেক বেশি ছিল। যা নিতান্তই হাস্যকর প্রমাণ বটে।
৩। শব্দ নেই : পৃথিবীতে একটি রকেট ইঞ্জিল চালু হওয়া মাত্রই প্রচণ্ড শব্দের সৃষ্টি করে। আর এই প্রচন্ত শব্দসমূহ আশেপাশের আবহাওয়া এবং জেট ইঞ্জিনের বেগ থেকে। কিন্তু চন্দ্রযান যখন চাঁদে অবতরণ করেছিল তখন অ্যাপেলো অডিওতে যানটির ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট শব্দের ছিটেফোটাও শোনা যায়নি। অথচ নভোচারীদের প্রতিমুহূর্তের কথাবার্তা ঠিকই শোনা গিয়েছিল। যদিও তাদের পড়নে যে পোশাকটি ছিল তার মধ্যে অত্যাধুনিক মাইক্রোফোন সংযুক্ত ছিল কিন্তু তবুও ঐ যানটির ইঞ্জিনের শব্দ কেনই বা ঐ মাইক্রোফোনগুলোর মাধ্যমে অ্যাপেলো রেডিওতে শোনা যায়নি। তা একটি রহস্যজনক ব্যাপার।
৪। ফিল্ম গলে যেত : চাঁদে প্রকৃতপক্ষে কোনো ছবি তোলা সম্ভব নয়, কেননা ২৫০ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় নভোচারীদের ক্যামেরার ফিল্ম সমুহ গলে যেত। নাসার সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে ইস্টম্যান কোডাক নামে এক বিজ্ঞানী ক্যামেরাগুলোর জন্য বিশেষ এক ধরনের ফিল্ম তৈরি করেছিলেন। যেখানে এস্টার ব্যবহার করা হয়েছিল। এস্টারের গলনাঙ্ক ৮৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যদিও প্রায় ২০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের কাছাকাছি তাপমাত্রায় গলনের ফলে এর স্বাভাবিক আকৃতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যে, ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে তাপমাত্রা থাকা সত্ত্বেও কিভাবে ক্যামেরার ফিল্মসমূহ টিকে ছিল?
৫। নভোচারীর উপরের অংশ কেন এত আলোকিত ? : (চিত্র-৩)
ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন নভোচারী চন্দ্রপৃষ্ঠে হাঁটছে। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে নভোচারীর নিকটবর্তী পাথরসমূহ সামনে থেকে আসা অত্যধিক আলোর কারণ পেছন দিকে একটি গভীর অন্ধকারের সৃষ্টি করেছে। কিন্তু ঐ নভোচারী পা উত্তোলনের অংশটুকু ছাড়া ছায়াময় স্থানটিতে অর্থাৎ নভোচারীর পেছন দিকটা খুব স্পষ্ট ফুঁটে উঠেছে । এখন প্রশ্ন হচ্ছে যদি পাথরগুলো এত গভীর অন্ধকার সৃষ্টি করতে পারে তাহলে নভোচারীর পেছন দিকের অংশটিতে কেন গভীর অন্ধকারের সৃষ্টি হয়নি? অ্যাপোলো-১৭ এর এরকম আরো অনেক ছবি রয়েছে যেগুলো এরকম সূক্ষ্ম অনেক চিহ্ন পাওয়া গেছে।
৬। কৃত্রিম আলোর উৎস : (চিত্র -২) অ্যাপোলো-১১ এ ফুটেজটিতে দেখানো হচ্ছে কিভাবে দুইজন নভোচারীর ছায়াগুলো বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কমেছে এটি হয়েছে তাদের ভিন্ন অবস্থানের কারণে। তবে বিখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী ডেভিড ফারসি এ ছবিগুলো নিয়ে গবেষণা করে দেখতে পান যে, দুই নভোচারীর এ ছাড়া সৃষ্টি হওয়ার কারণ অবশ্যই খুব কাছ থেকে সরবরাহকারী কোনো আলোক উৎস। চিত্রে ১ম নভোচারীর পেছনদিকে আলোক তীব্রতা ও ছায়াগুলোর দৈর্ঘ্য গবেষণা করে ডেবিড পারসির মন্তব্য করেন নিশ্চয় এখানে কৃত্রিম কোনো আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা চন্দ্র বিজয়ের প্রতারণামূলক আরেকটি স্পষ্ট দৃৃষ্টান্ত।
তারপর (চিত্র-৪) এই নভোচারীর পিছনে চাঁদ থাকা সত্ত্বেও কেন তার সামনের অংশটি এত আলোকিত? গবেষকরা মন্তব্য করেন, সামনে থেকে নিশ্চয়ই একটি কৃত্রিম আলো ব্যবহার করা হয়েছিল যার কারণে তার সামনের অংশটি এত স্পষ্ট দেখাচ্ছিল।
ছবিতে (চিত্র-৫)
দেখা যাচ্ছে অ্যাপোলো মিশনের দু’জন নভোচারী একইদিকে হাঁটছে। কিন্তু তাদের হাঁটার দিক অনুসারে ছায়াগুলোর দিক সম্পূর্ণ ভিন্ন। ছবিতে পেছনের নভোচারীর ছায়া বামদিকে এবং সামনের নভোচারীর ছায়া ডানদিকে দেখা যাচ্ছে। তার মানে ছবিটি থেকে এটি সুস্পষ্ট যে নিশ্চয় এখানে অনেকগুলো কৃত্রিম আলো উপস্থিত ছিল যার ফলশ্রুতিতে এদের ছায়ার দিকসমূহ ভিন্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
৭। ছায়া পড়েনি : (চিত্র-৬) ছবিতে দেখা যাচ্ছে অ্যাপেলো মিশনের একজন নভোচারী একটি ছায়ার সামনে দাড়িয়ে আছে। যদিও ছবিটি অস্পষ্ট তোলা হয়েছিল কেননা নাসার দাবী জন ইয়াং নামেই এই নভোচারী তখন লম্প ঝম্প করেছিল এবং ঐ অবস্থায় ঐ ফটো তোলা হয়েছিল। কিন্তু অবাকের বিষয় এই যে, তার সামনের ছায়াটি তার শরীরের উপর না পড়ে কিভাবে এটি তার পেছনদিকে পতিত হল? যদিও সম্পূর্ণরূপে ঐ ছায়া ডানদিকে অগ্রসর হচ্ছে পক্ষান্তরে তার সম্মুথস্থ একই অবস্থানে অবস্থানরত অন্য বস্তুটির ছায়ার দিক সোজাভাবে অগ্রসর হয়েছ যা আরো একটি সন্দহজনক। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ধরা পড়েছে যে, নিশ্চয়ই শুধুমাত্র জন ইয়াং এর উপর ভিন্ন দিক থেকে কৃত্রিম আরো একটি আলো ফেলা হয়েছে যার কারণে তার ছায়ার দিকও ভিন্ন দিকে অগ্রসর হয়েছে। উল্লেখ্য, জন ইয়াং ঐ অবস্থায় আমেরিকার পতাকাকে স্যালুট দিচ্ছিলেন। জন ইয়ং অ্যাপোলো -১৬ এর নভোচারী ছিলেন।
৮। অনুন্নত কম্পিউটার প্রযুক্তি : চন্দ্র অভিযানের সত্যতা গবেষণা করতে গিয়ে অনেক বিজ্ঞানী রসিকতার ছলে বলেন, “ষাটের দশকের প্রথম দিকে নাসা অ্যাপেলো বিষয়ক অর্থাৎ চাঁদে যাওয়ার জন্য যেসব কম্পিউটার ব্যবহার করেছিল তা বর্তমান এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে এসে রান্নাঘরে ব্যবহৃত হচ্ছে।” এর অর্থ হলো ১৯৬০ সালের দিকে অ্যাপোলোর গবেষণার জন্য উন্নত কম্পিউটারের অস্তিত্ব ছিল না।
৯। ২০,০০০ ত্রুটি : অ্যাপোলো ১১ এর আগে যেসব অ্যাপোলো মিশন নাসা কর্তৃক চন্দ্রে প্রেরণের চেষ্টা করা হয়েছিল সর্বসাকুল্যে প্রায় ২০,০০০ ত্রুটি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু যখন অ্যাপোলো ১১ সহ পরবর্তীতে যে মহাকাশযানগুলো চন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছিল বলে নাসা দাবী করছে সেসব মিশনগুলোতে কোনো ত্রুটিই ছিল না। যা একটি সন্দেহের সৃষ্টি করে যে কিভাবে সম্পূর্ণ ত্রুটিহীনভাবে প্রেরণ করা হয়েছিল? সূত্র : ইন্টারনেট
এভাবে আরো প্রমাণাদি রয়েছ যা চন্দ্র অভিযানের পুরো কাহিনীগুলোকেই সন্দিহান করে তোলে। বিখ্যাত FOX TV রো প্রোগ্রামে এ পুরো বিষয়টি যে প্রতারণা ছিল তার একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়েছিল। আগামী সংখ্যায় থাকছে আরো প্রমাণ ও যুক্তি, সেসঙ্গে শাস্ত্রীয় পর্যালোচনাতো রয়েছেই। (চলবে) হরে কৃষ্ণ ॥
(মাসিক চৈতন্য সন্দেশ আগষ্ট ২০০৯ সালে প্রকাশিত)