এই পোস্টটি 1178 বার দেখা হয়েছে
গত দু’সংখ্যায় ‘চৈতন্য সন্দেশ’ পত্রিকায় ‘মানুষ কি চাঁদে গিয়েছিল?’ এ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই অনেকেই বিষয়টিকে হাল্কাভাবে নিয়েছিলেন। অনেকেই আবার পুরো বিষয়টিকেই হাস্যকর রসিকতার সুরে নিয়েছিলেন। তবে সেসব সমালোচকদের উচিত জবাব দিয়েছেন খোদ অ্যাপোলো-১১ এর নভোচারী নীল আর্মষ্ট্রং স্বয়ং। বিগত ৪০ বছর ধরে যে মিথ্যাটাকে ধর্মের নয় বিজ্ঞানেরই জয় হিসেবে জনগণ জেনে এসেছিল সেটা আজ আর্মষ্ট্রং-এর স্বীকারোক্তিতে ভেস্তে গেল। আবারও প্রমাণিত হল ভগবান এবং তার প্রণীত শাস্ত্র অভান্ত। সম্প্রতি সাংবাদিকদের সামনে মানুষের চাঁদে যাওয়ার বিষয়টি যে সম্পূর্ণ প্রতারণা ছিল তার গোমর ফাঁস করেছেন অ্যাপোলো-১১ এর এই প্রধান নভোচারী। বিষয়টি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে মূলত দি অনিয়ন ( w w w . t h e o n i o n . c o m ) ওয়েবসাইটটির মাধ্যমেই। গতমাসে বাংলাদেশেও সমকাল, আমাদের সময় সহ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকাগুলোতে নীল আর্মষ্ট্রংয়ের সাথে সাংবাদিকদের সেই আলোচনামূলক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছিল। এরই সূত্র ধরে ৩ সেপ্টেম্বর’ ০৯ইং সমকালে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনটি পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হল।
চন্দ্রবিজয়ের নামে বিশ্বকে ধোঁকা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আর্মষ্ট্র্রং
যুক্তরাষ্ট্র কি সত্যিই চাঁদে মনুষ্যবাহী যান পাঠিয়েছিল? প্রশ্নটি উঠেছে প্রায় দেড় যুগ আগে। অতঃপর এ নিয়ে প্রতিনিয়তই বিতর্ক চলছে। যারা প্রশ্নটি উত্থাপন করেছেন তারা বহুমুখী গবেষণার মাধ্যমে তাদের প্রশ্নের যৌক্তিকতা প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। ভাওতাবাজি নয়, বিজ্ঞানসম্মত যুক্তির মাধ্যমেই তারা তাদের কথা বোঝাবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিষয়টা শুধু যুক্তি প্রমাণেরই নয়, সৎ স্বীকারোক্তিরও। অ্যাপোলো-১১ মিশনের এক নভোচারী বাজ অলড্রিন বরাবরই তাদের অভিযান যে খাঁটি সে কথা বলেছেন। মাইকেল কলিন্সের কথায় তেমন জোর কখনই ছিল না, তবে তিনি অভিযানের সত্যতা নাকচ করেননি। ব্যতিক্রম ছিলেন চাঁদে প্রথম যিনি পা রাখলেন তিনি অর্থাৎ নীল আর্মষ্ট্রং। অভিযানের পর তিনি কখনও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি, এ ব্যাপারে টু শব্দটিও করেননি। সবার পীড়াপীড়িতে এবং আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার দায়ে সর্বশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানটিতে তিনি কয়েক মিনিটের জন্য হাজির হয়েছিলেন, কিন্তু বক্তব্য রাখেননি। তিনি কি সত্যটা জানেন? ওহাইওতে নিজের বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাপোলো-১১ কমান্ডার আর্মষ্ট্রং রহস্যের গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। তার কথায় সাংবাদিকরা বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে পড়েন। খবর দি অনিয়ন ও অন্যান্য ওয়েবসাইটের। সংবাদ সম্মেলনে কী কথা বলেছেন অ্যাপোলো-১১ অধিনায়ক? সেদিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যাক। অ্যাপোলো-১১ এর চন্দ্রাভিযান নিয়ে কনস্পিরেসি থিওরিস্ট রালফ কোলম্যানের যুক্তিতর্কের ওপর ইউটিউব ভিডিও এবং ব্লগ-পোস্ট থেকে এবং পড়ে তিনি তাদের ঐতিহাসিক মিশনের খুঁটিনাটি বিষয়ে পূর্ণবিবেচনা করতে বাধ্য হয়েছেন। আবেগআপ্লুত আর্মষ্ট্রং বলেন, তার (কোলম্যানের) লেখার কয়েকটি অনুচ্ছেদ পড়েই আমার উপলদ্ধি হয়েছে, আমি একটি মিথ্যাকে লালন করেছি। আর্মষ্ট্রং বলেন, বিষয়টা বেদনাদায়ক, তারপর আমার কাছে স্পষ্ট, আড়াই লাখ মাইল পাড়ি দিয়ে আমার ক্রুদের নেতৃত্বাধীন লুনার মডিউল ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদে পৌঁছেনি, চাঁদের মাটি স্পর্শ করেনি, মানবজাতির জন্য নতুন যুগের সূচনাকারী বিভিন্ন পরীক্ষাও চালায়নি। বরং পুরো বিষয়টিই একটি সাউন্ডস্টেজে চিত্রায়িত, খুব সম্ভবত নিউ মেক্সিকোতে। ৪০ বছরের পুরানো ফুটেজে নানা অসঙ্গতির এটাই একমাত্র যৌক্তিক ব্যাখ্যা। আর্মষ্ট্রং বলেন, সে সময় পৃৃথিবীর বায়ুমন্ডল পাড়ি দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি শূন্য-মহাকর্ষের অনুভূতি পেয়েছিলেন। এখন তার মনে হচ্ছে, তার অনুভূতি ভূল সংকেত পেয়েছিল। চাঁদের মাটিতে তার এবং অলড্রিনের পোঁতা আমেরিকান পতাকাটি যে বাতাসে দুলছিল সেটি তিনি খেয়াল করেননি। এর জন্য তিনি লজ্জিত। শূন্যস্থানে এমন হওয়ার কথা নয়, খুব সম্ভবত এয়ারকন্ডিশনারের বাতাসে সেটি দুলছিল। স্পেসস্যুটের ভেতরে থেকে পরিপার্শ্বের শব্দও তিনি শুনতে পাননি। রালফ কোলম্যানের যুক্তিতর্কের ব্যাপারে তিনি বলেন, সে সময়ে আমি একথাই ভেবেছিলাম-নাসার কয়েক হাজার কর্মী সত্যিই একটি অসম্ভবকে সম্ভব করার কাজ করছিলেন। কিন্তু আসলেই কী ঘটেছিল তা সম্ভবত কোলম্যানই জানেন। ভুয়া চন্দ্রাভিযান সম্পর্কে কোলম্যান আমার ধারণার চেয়েও অনেক বেশি জানেন। তিনি অনেক বছর ধরে এ বিষয়ে গবেষনা করছেন। প্রসঙ্গত, রালফ কোলম্যান সে সময় একজন লাইব্রেরি সহকারী ছিলেন। চাঁদের মাটিতে হাঁটার প্রসঙ্গে আর্মষ্ট্রং বলেন, আমাকে পেছন দিকে হাঁটতে বলা হয়েছিল। পরে সেটাই উল্টো করে চালিয়ে দেখানো হয়েছে। এটি একটি চিত্রায়িত বিষয়। আর ব্যাখ্যার কী আছে? চোখ মেলেই দেখুন না। কোলম্যানের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নকে টেক্কা দেয়ার জন্য, বিশ্বের ব্যাংকগুলোকে সমন্বিত করার জন্য এবং তথ্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সেটি করা হয়েছিল। এর বেশি জানতে চাইলে কোলম্যানকে জিজ্ঞেস করুন। ‘দৈনিক আমাদের সময়’ পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের চুম্বক অংশও পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। ওয়েবসাইটটির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এরপরই আর্মষ্ট্রং সুভ্যেনির হিসেবে রাখা চাঁদের মাটির কিছু নমুনা মুঠো করে নেন এবং তা ফেলে দেন ময়লার ঝুড়িতে। ওদিকে রাফ কোলম্যানের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ১৯৬৯ সালে মানুষকে চাঁদে পাঠানোর মতো বাস্তব প্রযুক্তিবিদ এবং পাইলটদের অধীনে ঐতিহাসিক ওই মিশনের জন্য নভোচারীদের হাজার হাজার ঘন্টা প্রশিক্ষণ দেয়া সত্ত্বেও আর্মষ্ট্রং স্বীকার করেছেন-চন্দ্র অভিযান নিয়ে বিতর্কিত তত্ত্বই সঠিক। এক ও অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র কয়েক হাজার কর্মকর্তা ঘন্টার পর ঘন্টা একত্রে কাজ করছিলেন। কিন্তু তাদের কেউ কি জানতেন আসলে কী হচ্ছিল। ৩১ বছর বয়সী পার্টটাইম ভিত্তিতে কর্মরত সহকারী লাইব্রেরিয়ান রাফ কোলম্যান সম্পর্কে আর্মষ্ট্রং বলেছেন আমি যতটুকু জানি এর চেয়ে চন্দ্র অভিযানের ধোঁকা সম্পর্কে বেশি জানেন কোলম্যান। বছরের পর বছর তিনি এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন। ও মিশন কন্টোল ডট অর্গ আরো জানিয়েছে, আর্মষ্ট্রং চাঁদের যেখানে অবতরণ করেছিলেন তার পাশেই ইংরেজি ‘সি’ অক্ষর খোদিত একটি পাথর খন্ড পড়ে ছিল। আর্মষ্ট্রং এ বিষয়টি অভিযানের আগে পরে উল্লেখ করেননি। আবেদপ্রবণ আর্মষ্ট্রং এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ওই পাথরখন্ডটি সম্ভবত নাসা থেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পাথরখন্ডটি আর্মষ্ট্রং এর উদ্ধৃতি দিয়ে কোলম্যান বলেছেন-তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়নকে মহাশূন্য অভিযানে পেছনে ফেলতে যুক্তরাষ্ট্র ওই ঘটনা সাজিয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে আর্মষ্ট্রং চাঁদে তার প্রথম পা রাখার দৃশ্য প্রদর্শন করেন। কয়েকবার বিভিন্ন গতিতে ওই দৃশ্যের ফিল্ম প্রদর্শন করে তিনি বলেন চাঁদের বুকে মানবজাতির পা রাখার ঘটনা চিত্রায়ন ছাড়া কিছুই নয়। এতে প্রথমে তাকে পিছন দিকে ধীরগতিতে যেতে বলা হয়। পরে তা বিপরীত দিকে চালিয়ে দেয়া হয়-যা দেখে মানুষ মনে করে তিনি চাঁদের গায়ের হাঁটছেন। আর্মষ্ট্রং বলেন-এ দৃশ্যের মধ্যেই সব। চোখ খোলা রাখলে তা ধরা পড়বে। এখানেই শেষ নয়, নতুন করে BBC এ ব্যাপারটি নিয়ে মুখ খুলছে। গত ২৮ আগষ্ট BBC World News তার ‘Fake Dutch ‘Moon Rock’Revealed’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে বলে ডাচ ন্যাশনাল মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত মানুষের চাঁদ থেকে আনা প্রথম পাথরটি প্রকৃতপক্ষে প্রস্তরীভূত কাঠ ছাড়া আর কিছুই নয়। সম্প্রতি ঐ মিউজিয়ামের তত্ত্বাবধানে যারা রয়েছে তারা এ তথ্য ফাঁস করেন গবেষকরা ঐ পাথরটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এর প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করেছে। উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালের অ্যাপোলো-১১ এর নভোচারীরা ডাচদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উহলেম ড্রেসকে এটি উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। নীল আর্মষ্ট্রং ও BBC কর্তৃক এসব প্রতিবেদনের মাধ্যমে আশা করি সবার মনে আর সন্দেহ থাকা নয় যে, মানুষের চাঁদে যাওয়ার বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ প্রতারণা। হরে কৃষ্ণ।
(মাসিক চৈতন্য সন্দেশ্ অক্টোবর ২০০৯ সালে প্রকাশিত)