এই পোস্টটি 150 বার দেখা হয়েছে
চন্দন পালঙ্কে শুয়ে একা একা কি হবে
জীবনে তোমায় যদি পেলাম না
শ্বেত পাথরের রাজপ্রাসাদে
থেকে আর কি হবে
জীবনে তোমায় যদি পেলাম না…..
গানটি যাকে উদ্দেশ্য করে রচয়িতা রচনা করেছিরেন সেটি ঘুরিয়ে যদি গানটির প্রতিপাদ্য উদ্দেশ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণে কেন্দ্রীভূত হয় তবে গানটি আরো মাহাত্ম্যপূর্ন হয়ে উঠাই স্বাভাবিক। কেননা উপরের কয়েকটি লাইন বৈদিক শাস্ত্রের সঙ্গে পুরোপুরিই মিলে যায়। এত রাজপ্রাসাদ, অর্থ, আভিজাত্য, মান- প্রতিপত্তি, দামী খাট-পালঙ্ক কিংবা ফার্নিচার এসবের কিইবা মূল্য অবশিষ্ট থাকে যদি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে অর্জন না হয়। সমগ্ৰ বৈদিক শাস্ত্রে ঐ একটি নির্দেশই বহন করে যে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি প্রেমভক্তি অর্জনই জীবনের পরম লক্ষ্য। পক্ষান্তরে বৈদিক শাস্ত্রে এটি বলা হয় নি যে, ঐ সমস্ত বিষয় প্রাপ্তিই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। অথচ বর্তমান এ আধুনিক সভ্যতা এ লক্ষ্য পূরণের জন্যই ধাবিত হচ্ছে। হয়ত চাওয়া-পাওয়ার যা কিছু তা সব। একজনের রয়েছে । কিন্তু …….
সামগ্রিক জীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে এসেও ঐ একটি মাত্র শব্দ মনের অজান্তে হলেও কড়া নেড়ে যায়, ‘কিন্তু…’ তবুও কি আমি আনন্দ পাচ্ছি, তবুও কি আমার সমস্যার নিরসন হয়েছে? তবুও কি আমার দুঃখ দুর্দশা কমেছে? উত্তর একটিই ‘না’। এই ব্যাপারটি অস্ট্রেলিয়ার এক ধনকুবের অনেক পরে এসে উপলব্ধি করতে পারলেন। যদি ‘কিন্তু……. শব্দটি * দিয়ে নিজেকে যদি শুরুর দিকে প্রশ্ন করা হতো তবে হয়ত তার এরকম হাহাকার | মনে হতো না। টেলিগ্রাম অনলাইনের মাধ্যমে প্রকাশিত এ আলোচিত ঘটনাটি সমকাল’ ডেস্কের মাধ্যমে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল । সম্পদের পেছনে ছুটেছিলেন এতদিন। অর্জন করেছিলেন কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ। কিন্তু এখন উপলব্ধি করছেন, ধন রত্ন মানুষকে সুখী করতে পারে না । সেজন্য প্রাসাদোপম বাড়ি এবং বিলাসবহুল গাড়িসহ সব সম্পদ বিক্রি করে অর্থকড়ি দান করে দিচ্ছেন জনকল্যাণে। নিজে থাকবেন এক জীর্ণ কুটিরে। অস্ট্রেলিয়ার ধনকুবের ব্যবসায়ী কাল র্যাবেডারের জীবনে ঘটছে নাটকীয় এই পরিবর্তন । লেক ও স্নানঘরসহ ৩ হাজার ৪৫৫ বর্গফুটের প্রাসাদোপম বাড়ি বিক্রি করছেন। আল্পস পর্বতের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায় এই বাড়ি থেকে । আনুমানিক মূল্য ১০ লাখ (ব্রিটিশ) পাউন্ড। প্রোভেনসে ১৭ হেক্টরের খামারবাড়ি বিক্রি করে পাচ্ছেন ৬ লাখ ১৩ হাজার পাউন্ড। ইঞ্জিনবিহীন ৬টি বিমানের আনুমানিক দাম সাড়ে ৩ লাখ পাউন্ড। বিলাসবহুল অডি এ৮ গাড়ির দাম প্রায় ৪৪ হাজার পাউন্ড। এছাড়া আসবাবপত্র, এমনকি কৃত্রিম ফুলগুলোও বিক্রি করেছেন কার্ল। এসব অর্থ মধ্য ও লাতিন আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত সাহায্য সংস্থায় দান করে একেবারে নিঃস্ব হাতে গিয়ে উঠবেন ইনসব্রুকে পাহাড়ের পাদদেশে কাঠের তৈরি এক কুটিরে। কার্ল র্যাবেডার বলেন, একসময় ভাবতাম, ধন-সম্পদ মানুষকে সুখী করে। কিন্তু এটা ভুল। হাওয়াই দ্বীপে স্ত্রীসহ তিন সপ্তাহ কাটাতে গিয়ে তার উপলব্ধি হয়েছে, সম্পদশালীরা শুধু অভিনয় করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সেখানকার বিলাসবহুল হোটেলগুলোতে একজন প্রকৃত মানুষেরও দেখা পাইনি ।
সুতরাং উপরোক্ত ঘটনাটির পরে নিজের ইন্দ্রিয় তৃপ্তি চরিতার্থ করতে বিষয়ভোগের বাসনা পূরণে যদি তবুও নিজেকে লিপ্ত করেন সেক্ষেত্রে শেষ জীবনে করার কিছুই থাকবে না। লোকটির মতো যদি কুঠিরে থেকেও কৃষ্ণভজন না হয় তাও জীবন বৃথা। হয়ত সেসময় দেরীতে হলেও ঐ কিন্তু শব্দটি জাগরিত হওয়া নিরর্থকই হতে পারে। আর তখনই ভকতিবিনোদ ঠাকুরের রচিত সেই বিখ্যাত ভজনটির মর্মার্থ উপলব্ধি করা যাবে।
হরি! হরি! বিফলে মানব জনম গোঙাইনু মনুষ্য জনম পাইয়া রাধাকৃষ্ণ না ভজিয়া জানিয়া শুনিয়া বিষ খাইন হরি! হরি! বিফলে মানব জনম গোঙাইনু সুতরাং কুঠিরে থাকুন কিংবা বিরাট রাজপ্রাসাদেই থাকুন যদি সমস্ত বিষয় কৃষ্ণভাবনায় ব্যবহৃত না হয় তবে বিষয় বিষ খেয়ে মৃত্যুর করাল গ্রাসেই নিপতিত হতে হবে। কেননা যেখানে কেন্দ্রই ঠিক নেই সেখানে বৃত্ত হবে কি করে?
হরে কৃষ্ণ ।
চৈতন্য সন্দেশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন :https://play.google.com/store/apps/details?id=com.differentcoder.csbtg
Hare Krishna Thanks For Reading