এই পোস্টটি 409 বার দেখা হয়েছে
কিছু ঘটনা পৃথিবীতে, কিছু ঘটনা পৃথিবীর বাইরে কিংবা একই সাথে।
সদাপুত দাস
সবার একটি প্রশ্ন থাকতে পারে, এ পৃথিবীতে কি দেব-দেবী বা ভগবান আছেন যারা অদৃশ্যভাবে উপস্থিত কিন্তু আমাদের চোখে অদৃশ্যমান? বলা হয় যে, কুম্ভমেলার সময় দেব দেবীরা অদৃশ্যভাবে নিজ নিজ গ্রহলোক থেকে উপস্থিত হন। শুধুই কী দেব-দেবী অনেক সময় মহান মহান ঋষিদেরও কোনো পবিত্র স্থান বা গ্রহলোক থেকে আগমন ঘটে। বিজ্ঞান এ সবের অস্তিত্ব খুঁজেও পাবে না এবং তাই স্বীকারও করবে না। তবে শ্রীমদ্ভাগবতসহ অন্যান্য বৈদিক শাস্ত্রের সাক্ষ্য মতে এ পৃথিবীতে অন্য লোক থেকে এরকম দিব্য জীবের আগমন ঘটে। যদি পৃথিবীতে তাদের আগমন ঘটে, তবে এ কথা বলা অনস্বীকার্য যে, এই পৃথিবীর সঙ্গে অন্য কোনো গ্রহলোকের সঙ্গে আন্তঃসম্পর্ক রয়েছে। এমনকি শ্রীমদ্ভাগবতের বর্ণিত কিছু ঘটনা এই পৃথিবীতে আবার কিছু ঘটনা অন্য কোনো গ্রহলোকে সংঘটিত হয়েছিল। এ সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা নিম্নে তুলে ধরেছেন শ্রীল প্রভুপাদের অন্যতম বিজ্ঞানী শিষ্য ড. রিচার্ড এল থম্পসন ।
এই পৃথিবী একটি উচ্চতর বাস্তব স্তরের সঙ্গে সংযুক্ত। এই বিষয়টি বোঝার জন্য আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি শব্দগুচ্ছ বা Phrase ব্যবহার করতে পারি, যেটি হল Higher – dimensional connection, অর্থাৎ উচ্চ মাত্রিক সংযোগ। কেননা বৈদিক সাহিত্যে বর্ণনা করা হয়েছে যে, আমাদের এই পৃথিবীর সঙ্গে পৃথিবীর বাইরের অনেক অঞ্চল বা Domain এর সঙ্গে সংযোগ বা যোগাযোগ রয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবতে উল্লেখ রয়েছে যে, পূর্ববর্তী যুগগুলোতে অনেক দেব-দেবী এবং মহান মহান ঋষিরা অন্য গ্রহ থেকে এই পৃথিবীতে নিয়মিতই আসা যাওয়া করতেন। এর কিছু নিদর্শন ভাগবতের আলোকে নিম্নে তুলে ধরা হল:
(১) ত্রিত মুনি, যিনি বরুনলোকের সপ্তর্ষিদের মধ্যে একজন। তিনি পৃথিবীর পাশ্চাত্য দেশ থেকে উদ্ভূত হয়েছিলেন, খুব সম্ভবত তিনি ইউরোপের অধিবাসী ছিলেন। (শ্রীমদ্ভাগবত ১/৯/৭ তাৎপর্য)
(২) মহারাজ মরুত্তের দৈনন্দিন যজ্ঞ অনুষ্ঠানে রন্ধনকার্য ত্বরান্বিত করার জন্য বায়ুলোকের কিছু অধিবাসীদের নিমন্ত্রণ করে নিয়ে আসা হয়েছিল, (তিনি সংকর যজ্ঞ নামক এক যজ্ঞ অনুষ্ঠান করেন, যার ফলে ভগবান তাঁর প্রতি প্রসন্ন হন যে, তাঁকে একটি স্বর্ণপর্বতশৃঙ্গের অধিকার দান করেন। সেই পর্বতশৃঙ্গটি হিমালয় পর্বতের কোনো এক স্থানে রয়েছে এবং আধুনিক দুঃসাহসী অভিযাত্রীরা সেখানে সেটির অন্বেষণ করতে পারেন।) (শ্রীমদ্ভাগবত ১/১২/৩৪ তাৎপর্য)
(৩) গন্ধর্বদের প্রধান, বিশ্বাবসু যখন গগন-মার্গে বিচরণ করছিলেন, তখন তিনি প্রাসাদের ছাদে দেবহুতিকে একটি কন্দুক নিয়ে খেলা করতে দেখেন, তাঁর পায়ের নূপুরের শব্দ শুনে এতই মোহিত হয়েছিলেন যে, তিনি তাঁর বিমান থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। (শ্রীমদ্ভাগবত ৩/২২/১৭ তাৎপর্য) এই ঘটনাটি ভারতে ঘটেছিল ।
(৪) অত্রি মুনি তাঁর পত্নীসহ কঠোর তপস্যা করার জন্য ঋক্ষ নামক পর্বতের উপত্যকায় গিয়েছিলেন। (শ্রীমদ্ভাগবত ৪/১/১৭)। এই ঋক্ষ পর্বতটি ভারতের নির্বিন্ধ্যা নদীর নিকটে অবস্থিত।
(৫) যেই যজ্ঞে দক্ষ, ভগবান শিবের কাছে অপরাধ করেছিলেন, সেটি সংঘটিত হয়েছিল গঙ্গা এবং যমুনার যৌথগমন স্থানে। (শ্রীমদ্ভাগবত ৪/২/৩৫)
(৬) শিব পত্নী পার্বতী, হিমালয়ের কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। (শ্রীমদ্ভাগবত ৪/৭/৫৮-৫৯)
(৭) স্বয়ম্ভুব মনুর ক্ষেত্র (Area/place) ব্রহ্মাবর্ত, যেটি ভারতে অবস্থিত, সেখানে সরস্বতী নদী পূর্ববাহিনী হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (শ্রীমদ্ভাগবত ৪/১৯/১)
(৮) মহারাজ গয়ার যজ্ঞে সোমরস পান করে ইন্দ্র উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন। (শ্রীমদ্ভাগবত ৫/১৫/১২)
এ ঘটনাগুলো এটিই নির্দেশ করে যে, পূর্বে এই পৃথিবী অনেক দিব্য কার্যকলাপের স্থান ছিল যেগুলো আমাদের বর্তমান ইন্দ্ৰিয়সমূহের বোধগম্যতার উর্ধ্বে।
শ্রীমদ্ভাগবতে (সংস্কৃত শ্লোক ও শ্রীল প্রভুপাদের তাৎপর্যে) এই সমস্ত কার্যকলাপ সে সমস্ত ব্যক্তির প্রেক্ষাপট থেকে বর্ণনা করা হয়েছে যাদের ইন্দ্রিয়সমূহের বোধগম্যতার স্তর আজকালকার সাধারণ জনগণের চেয়েও উচ্চতর ছিল। চৈতন্য চরিতামৃতে এরকম প্রমাণও প্রদর্শিত হয়েছে যে, এ প্রকার কার্যকলাপ পৃথিবীতে এখনও প্রদর্শিত হচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, চৈতন্য চরিতামৃতের মধ্য লীলা (৯/১৭৪-৭৭) এ বর্ণনা করা হয়েছে যে, দক্ষিণ ভারতে শৈল পর্বতে ভগবান শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু ও শিবের মধ্যে সাক্ষাত হয়েছিল। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, দেবাদিদেব শিব, পার্বতী ব্ৰহ্মা ও অন্যান্য দেব দেবীসহ ঐ পর্বতে বাস করতেন। ঐ বর্ণনা অনুসারে এটি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে সেটি দৃশ্যমান ছিল না।
লীলা পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজা নগ্নজিৎ তাঁর কন্যার বিবাহের যৌতুক হিসেবে ৯ কোটি ঘোড়া এবং ঘোড়ার সংখ্যার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি দাস-দাসী প্রদান করেছিলেন। আধুনিক স্কলার্সরা এই বিবৃতিগুলোকে পৌরাণিক কল্পকাহিনি হিসেবে আখ্যায়িত করে বৈদিক সাহিত্যকে প্রত্যাখান করে। যাহোক তাদের মতামত যে বিরুদ্ধমূলক সেটি বৈদিক সাহিত্যের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণের সাহায্যে খণ্ডানো যায়। এখানে দাস-দাসী ও ঘোড়ার যে সংখ্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা অনুষ্ঠিত হয়েছিল উচ্চতর পৃথিবীর Domain বা অঞ্চলে, যেটি তখনকার দিনের (মধ্য দ্বাপর যুগের) লোকেদের জন্য দৃশ্যমান অভিজ্ঞতা ছিল।
পৃথিবীর অনেক সংস্কৃতিতেই আমরা এ ধারণা খুঁজে পাই যে, প্রাচীন যুগে মানুষের সাথে উচ্চতর লোকের কিংবা সেই লোকগুলোর অধিবাসীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল। ভাবা হয় যে, নিকট অতীতে এ প্রকার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, এই প্রকার জীবন সংগ্রাম মহাজাগতিক ভিন গ্রহলোকিয় অবস্থায় ছিল। জুডিও-ক্রিস্টিয়ান ঐতিহ্যে আদম ও ইভের পতন, এর একটি উদাহরণ। যাহোক বৈদিক সাহিত্যকে ভাবা হয় যে, এগুলো আমাদের পতনের পূর্বপ্রেক্ষিতে রচিত।
শ্রীমদ্ভাগবতে ৬/১০/১৬ এর তাৎপর্যে শ্রীল প্রভুপাদ ভাষ্য দেন যে, ইন্দ্র ও বৃত্রাসুরের যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, তা ভারতবর্ষে যে নর্মদা নদী রয়েছে তার নিকটে হয়নি। সেই নর্মদা নদী পৃথিবীর বাইরে অন্য গ্রহলোকে অবস্থিত ছিল। শ্রীল প্রভুপাদ উল্লেখ করেন, “ভারতে পাঁচটি পবিত্র নদী – গঙ্গা, যমুনা, নর্মদা, কাবেরী এবং কৃষ্ণা হচ্ছে দিব্য নদী। গঙ্গার মতো নর্মদাও স্বর্গে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর কোনো নদী ও পৃথিবীর বাইরে দিব্য নদীর মধ্যে একটি সম্পর্ক বা সংযোগ রয়েছে, যা আমরা প্রত্যক্ষভাবে দর্শন করতে পারি এবং সেটি উচ্চ মাত্রিক।
তদ্রুপ শ্রীমদ্ভাগবতের ৩/২১/২৫ তাৎপর্যে শ্রীল প্রভুপাদ উল্লেখ করেন যে, ব্রহ্মাবর্ত যেখানে স্বয়ম্ভূব মনু শাসন করতেন সেটি ভারতের কোনো একটি স্থানে ছিল এবং আবার কারো কারো মতে ব্রহ্মলোকের কোনো একটি স্থান ছিল। প্রভুপাদ বলেন, “এই পৃথিবীর ওপর এমন অনেক স্থান রয়েছে, যা উচ্চলোকেও রয়েছে; উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, এই পৃথিবীতে বৃন্দাবন, দ্বারকা, মথুরা আদি স্থান রয়েছে, যেগুলি কৃষ্ণলোকেও নিত্য বিরাজমান।”
এভাবে পৃথিবীতে ভারতের কোনো একটি স্থান ব্রহ্মলোকের কোনো একটি অঞ্চলের সঙ্গে উচ্চ মাত্রিক স্তরে যোগসাজশ ঘটতে পারে ।
শ্রীল প্রভুপাদ পৃথিবীতে বিদ্যমান বিভিন্ন স্থান ও উচ্চতর গ্রহলোকের সঙ্গে সম্বন্ধ বিষয়ে বিভিন্ন উদাহরণ উল্লেখ করেন। কিছু উদাহরণ এখানে প্রদর্শিত হল:
(১) স্বর্গ তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত-দিব্য স্বর্গ, ভৌম্ স্বর্গ এবং পাতাল লোকের বিল স্বর্গ। এই তিনটি স্বর্গের মধ্যে ভারতবর্ষ ছাড়া অন্য আটটি বর্ষ হচ্ছে ভৌম স্বৰ্গ।….এই তিন শ্রেণির স্বর্গের মধ্যে কখনও কখনও ভারতবর্ষের কাশ্মীর অঞ্চলকেও ভৌম স্বর্গ বলে গণনা করা হয়। (শ্রীমদ্ভাগবত ৫/১৭/১১ তাৎপর্য)
(২) বলা হয় যে, “শিবলোক হিমালয় পর্বতের সন্নিকটে অবস্থিত”। (শ্রীমদ্ভাগবত ৪/২৪/২২ তাৎপর্য)
(৩) যক্ষরা (Varnas) (যারা কুবের দেবতার সহচরী) যাদের হিমালয় পর্বতের কোনো উপজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তারা দেখতে তিব্বতীয়দের মতো। (শ্রীমদ্ভাগবত ৪/১০/৫ তাৎপর্য)
(৪) ‘আ-মানস-অচলাৎ’ এ শব্দটির অর্থ ‘মানস পর্বত পর্যন্ত’ যেটি পৃথিবীর উত্তর মেরুর অঞ্চলকে উল্লেখ করে । (শ্রীমদ্ভাগবত ৪/১৬/১৪ তাৎপর্য)
(৫) মহারাজ পৃথু ছিলেন সপ্তদ্বীপ-সমন্বিত পৃথিবীর একচ্ছত্র সম্রাট। “সপ্তদ্বীপ হচ্ছে- (১) এশিয়া (২) ইউরোপ (৩) আফ্রিকা (৪) উত্তর আমেরিকা (৫) দক্ষিণ আমেরিকা (৬) অস্ট্রেলিয়া ও (৭) ওশেনিয়া এই সাতটি মহাদেশ। আধুনিক যুগে অনেকে মনে করে যে, বৈদিক যুগে বা প্রাগৈতহাসিক যুগেরও হাজার হাজার বছর পূর্বে পৃথু মহারাজ পৃথিবীর ওপর আধিপত্য করেছিলেন এবং এখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তখনকার দিনে পৃথু মহারাজের মতো একজন রাজার দ্বারা শাসিত হত। যে দেশে পৃথু মহারাজ বাস করতেন, তা ছিল অবশ্যই ভারতবর্ষ, কারণ সেই স্থানটি ছিল গঙ্গা ও যমুনার মধ্যবর্তী ভাগ। ব্রহ্মাবর্ত নামক সেই স্থানটি হচ্ছে বর্তমান পাঞ্জাব ও উত্তর ভারত । (শ্রীমদ্ভাগবত ৪/২১/১২ তাৎপর্য)
একই উক্তি তুলে ধরা হয়েছে শ্রীমদ্ভাগবতে ৩/২১/২ এর তাৎপর্যে, “এই শ্লোকে স্বয়ম্ভুব মনুর দুই পুত্র প্রিয়ব্রত এবং উত্তানপাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা সাতটি দ্বীপে বিভক্ত এই পৃথিবী শাসন করেছিলেন। এই সাতটি দ্বীপ এখনও বর্তমান, যথা-এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু।”
সপ্তদ্বীপ সম্পর্কে এই একই তথ্য ‘শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা’ নামক গ্রন্থেও উল্লেখ রয়েছে। দেবাদিদেব মহাদেব সর্বদা হিমালয়ের সাহচর্যে রয়েছেন এবং বৈদিক সাহিত্যেও শিবকে নিয়ে এ ধরনের অনেক কাহিনি রয়েছে যেগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল হিমালয়ে। অতএব, স্বাভাবিকভাবেই হিমালয়কে শিবের স্থান হিসেবে মনে করা হয় এবং তিনি বিশেষত অগ্রসরমান যোগীদের নিকট সুলভ।
এই ধরনের সাদৃশ্য বা চিহ্নিতকরণের ব্যাপারটি ঘটে হয়তো প্রত্যক্ষভাবে পৃথিবী এবং পৃথিবীর বাইরের অঞ্চলের মধ্যকার উচ্চ-মাত্রিক সংযোগের মাধ্যমে। এভাবে উচ্চতর গ্রহলোক হিসেবে প্রাচীন অভিজ্ঞতার আলোকে, পৃথিবীতে বিভিন্ন ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে ।
বিশিষ্ট বিজ্ঞানি রিচার্ড লেসলি থম্পসনের দীক্ষিত নাম সদাপুত দাস একজন আমেরিকান গণিতবিদ, লেখক এবং প্রভুপাদের অন্যতম প্রিয় শিষ্য । বৈদিক সৃষ্টিতত্ত্বের ওপর গবেষণায় সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখেন। এ বিষয়ে তাঁর অনেক বিখ্যাত গ্রন্থ রয়েছে, যা সারা বিশ্বে খ্যাতি লাভ করে। তিনি ভক্তিবেদান্ত ইনস্টিটিউটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সদস্য। ২০০৮ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি অপ্রকট হন।
ত্রৈমাসিক ব্যাক টু গডহেড, জানুয়ারী – মার্চ ২০১৪