এই পোস্টটি 126 বার দেখা হয়েছে
![ভারতীয় জ্ঞান পদ্ধতি সমূহ (শেষ পর্ব)](http://csbtg.org/wp-content/uploads/2024/02/knowledge.jpg)
রসায়ন (রাসায়নিক বিজ্ঞান)
“বিজ্ঞানের অনেক অগ্রগতি বর্তমানে ইউরোপে ঘটে ছিল বলে বিবেচনা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে তা ঘটেছিল শত শত বছর পূর্বে প্রাচীন ভারতবর্ষে।”
-জেমস্ গ্র্যান্ট ডাফ (স্কটিশ সৈনিক ও ইতিহাসবিদ)
এক্ষেত্রে নাগার্জুনাচার্য ও আচার্য নিত্যানন্দীয়ার অবদান অনস্বীকার্য। তাঁদের অনবদ্য কর্মগুলো সাম্প্রতিক পুনর্গঠন হয় আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে যিনি “এ্যা হিস্ট্রি অব হিন্দু কেমেস্ট্রি ফ্রম দ্যা আর্লিয়েস্ট টাইমস্ টু দ্যা মিডল অব সিক্সটিনথ্ সেঞ্চুরি” গ্রন্থের লেখক, যেটি ১৯০২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
আয়ুর্বেদ
জৈবিক বিজ্ঞান
“১৮ শতক পর্যন্ত ইউরোপীয়ানদের অগ্রযাত্রার পূর্বে ভারতীয় সার্জারী পদ্ধতিই এগিয়ে ছিল। তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সার্জনরা ভারতীয়দের কাছ থেকে রাইনোপ্লাস্টি বা নাকের প্লাস্টিক সাজারী শিখতে সংকোচ বোধ করতেন না।”
-এ. এল বাশাম(দ্যা ওয়ান্ডার দ্যাট ওয়াস ইন্ডিয়া, ১৯৭১)
ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা যেমন চক্র সংহিতা, সুশ্রুত সংহিতা, ধন্বন্তরির একটি প্রাচীন পরম্পরা। পরবর্তীতে এই শাখাগুলো থেকে ৮টি বিভিন্ন প্রশাখার উদ্ভব হয় সেগুলো হল কায় চিকিৎসা (ঔষধ), কৌমার-ভৃত্য (শিশু রোগের চিকিৎসা), শল্যতন্ত্র (সার্জারি কৌশল), শালক্যতন্ত্র (নাক, কান, গলা), ভূতবিদ্যা (প্যাথলজি), অগদ তন্ত্র (টক্সিকোলজি বা বিষবিদ্যা), রসায়নতন্ত্র (আয়ুবর্ধন) ও ভজিকরণতন্ত্র ( যৌন রোগ চিকিৎসা) এবং সে সাথে সমসাময়িক আরো প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভব হয়।
প্রকৃতি
পরিবেশগত ও বাস্তুসংক্রান্ত বিজ্ঞান
“পৃথিবীতে যদি কোন স্থান থেকে থাকে যেখানে মানুষের স্বপ্নগুলো খুঁজে পেয়েছিল একটি গ্রহ যখন মানুষ তার অস্তিত্ব নিয়ে বিভিন্ন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল, সেটি হল ভারত।”
-রোমেইন রোলান্ত(নোবেল লরেট ও ফরাসি দার্শনিক)
বর্তমান প্রকৃতিও কৃত্রিমতার সাথে সমন্বয় রেখে জীবনযাপন করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রকৃতির সাথে জীবনে সিম্বিওসিস বা মিথোজীবিত্ব, হেটেরোজিণেটি, প্রকৃতির সম্পর্ক ও জীবনচক্র এগুলো জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক বিজ্ঞান যেটিকে বলে ‘ডীপ ইকোলজি’ বা ‘বায়োসেন্টিজম”। ভারতীয় পরিবেশগত ও পরিবেশগত বিজ্ঞান বর্তমানে বিজ্ঞানের যেকোনো গবেষণা সহজীকরণ ও উৎপাদন ও ব্যয় বিষয়ক সহজবোধ্য ধারা এবং প্রতিযোগিতা থেকে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতি অবদান রেখেছে।
নন্দনতত্ত্ব ও বাস্তুবিদ্যা
কলাবিদ্যা ও স্থাপত্যবিদ্যা
এটি ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট, যে অধ্যায় পশ্চিমারা শুরু করেছিল সেটি শেষ হবে ভারতীয় অধ্যায় দিয়ে, যদি মানবজাতি নিজেদের ধ্বংস করে না দেয়। ইতিহাসের এই চরম দূর্দশাপূর্ণ মুহূর্তে মানবজাতির মুক্তির পথ নিহিত রয়েছে ভারতীয় পন্থায়।
-ড. আলনল্ড জে টয়নরি(ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ)
ভারতীয় শিল্প শাস্ত্র বিশেষ পদ্ধতিগত চারুকলা, যা মানব জাতিকে তুলে ধরে যেখানে জৈব কেন্দ্রিক ও সৃষ্টিতত্ত্বের মতো বিষয়গুলো উঠে আসে। এরকম একটি শাখা হলো বাস্তুশাস্ত্র। যেটি বিশাল শহরে বা নগরে পরিকল্পিত উপায়ে ছোট ছোট দালান নিদর্শন সম্পর্কে ধারণা দেয়। এরকম কিছু নিদর্শন শুধু ভারতবর্ষে নয় আরিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়ার মতো হলেও দেখা যায়।
ন্যায় শাস্ত্র
যুক্তি, আইন, নীতি ও সামাজিকতা সংক্রান্ত পদ্ধতি
“গবেষণার যেকোনো ক্ষেত্র নিয়ে মানব মন চিন্তা করুক না কেন এমনকি সেটি যদি হয় ভাষা, ধর্ম, দর্শন, আইন, রীতিনীতি, প্রাচীন শিল্প ও বিজ্ঞান সবক্ষেত্রে পারদর্শী হওয়ার জন্য আপনাকে ভারতে যেতে হবে। সেটি আপনি পছন্দ করুন বা নাই করুন। এর কারণ মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে মূল্যবান ও নির্দেশনা মূলক বস্তুগুলো সংরক্ষিত রয়েছে ভারতে এবং শুধুমাত্র ভারতেই।”
– ম্যাক্সলার(ফিলোলজিস্ট)
ন্যায় হল ভারতীয় দর্শনের একটি সুগভীর শাখা যেখানে যুক্তিতত্ত্ব, মেথডলজি ও এপিস্টেমোলজি পদ্ধতিগত বর্ণনা রয়েছে। কার্যকরণের আইন সৃষ্টি সম্বন্ধীয়, ঋগবেদের ১০ম মণ্ডল হল বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের জ্ঞান পদ্ধতির মৌলিক ভিত্তি। ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ সম্বন্ধীয় পর্যায়ক্রমিক ধাপ সম্বন্ধে মানবজাতির চেতনার বিবরণ তুলে ধরে।
শিল্প তথা নাট্যশাস্ত্র
ক্লাসিকাল আর্টস
মহাজগতের একটি অপরিহার্য অংশ হতে ও সবক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য প্রাচীন শিল্পীদের ছিল গভীর অনুভূতি। আর এই অনুভূতি অর্জিত হয়েছে অগণিত শতাব্দীর অজস্র প্রজন্মের নিবিড় অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে।
-এলিস বোনার(সুইস্ আর্ট ইতিহাসবিদ্)
নাট্যশাস্ত্র বললেই প্রথমেই চলে আসে ভরত মুনির নাম (৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)। কিন্তু এর নান্দনিক ভিত্তি ‘রসতত্ত্ব’ হল সমস্ত বিনোদনের ও চারুকলার সারসংক্ষেপ। যেখানে একজন ব্যক্তি তার চেতনার বিকাশ ঘটাতে পারে। কাশ্মীরের অভিনবগুপ্ত কর্তৃক নির্দিষ্ট প্রদর্শনী অভিনব ভারতীয় তথ্য পাওয়া যায় ‘অগ্নিপুরাণে বেদাঙ্গের কল্পসূত্রে’ও এমনকি ঋষি অগস্ত্যের কাছে (ঋকবেদ ১/১৮৭/৪)। সমস্ত ভারতীয় সুর সঙ্গীত, নৃত্য ও গীত এই রসতত্ত্বকে ঘিরে সংঘটিত হয়। উদাহরণস্বরূপ নটরাজ প্রদর্শনী উপনিষদের তাণ্ডব শাখার অন্তর্গত।
(যান্ত্রিকগোলযোগের কারণে পোস্ট ডিলেট হয়ে যাওয়ার পুনরায় দেওয়া হল)