এই পোস্টটি 568 বার দেখা হয়েছে
চিঠিপত্র, ২০১৩ জানুয়ারী-মার্চ সংখ্যা
আমি ‘ব্যাক টু গডহেড’ এর ভার তোমাদের হাতে অর্পণ করছি কেননা এই পত্রিকা হচ্ছে আমার পারমার্থিক জীবনের সূচনারূপ। আমার গুরু মহারাজের মহাপ্রয়াণের সময় আমার প্রতি তার অন্তিম নির্দেশ ছিল “তুমি আমার কাছ থেকে যে শিক্ষা প্রাপ্ত হয়েছ তা ইংরেজি ভাষায় প্রচার কর, এতে তোমার কল্যাণ হবে এবং সেই সাথে তাদেরও কল্যাণ হবে যারা তোমার কথা শ্রবণ করবে। ১৯৩৬ সালে আমাকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল এবং আমি ১৯৪৪ সালে এই পত্রিকা প্রকাশ শুরু করি। তাই আমার গৃহস্থ জীবনে আমি এই পত্রিকা ছাপাতাম এবং প্রায় বিনামূল্যে বিতরণ করতাম। কেউ কেউ পত্রিকার মূল্য প্রদান করত এবং কেউ করত না। কিন্তু যেকোন প্রকারে আমার প্রচেষ্টা চালু রেখেছিলাম। এই বিষয়ে আমার প্রবৃত্তি কেমন ছিল তা তোমরা পুরানো প্রবন্ধগুলোতে দেখবে এবং অনুগ্রহ করে তুমি যেটা সর্বোৎকৃষ্ট মনে কর সেভাবেই অনুসরণ করার চেষ্টা কর। সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য তোমাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হল। কৃষ্ণভাবনার আদর্শের সাথে সঙ্গতি রেখো। যেহেতু আমি তোমাদের বহুবার বলেছি যে, আমি সেই দিনের জন্য প্রতিক্ষা করছি, যে দিন এই পত্রিকা লাইফ ম্যাগাজিন বা অন্যান্য ম্যাগাজিনের মত জনপ্রিয়তা লাভ করবে। এই পত্রিকা ভারতবর্ষ থেকে আমেরিকার এই আশায় আনা হয়েছে যে, তোমাদের মত আমেরিকান ছেলেরা কৃষ্ণভাবনার মহিমান্বিত আর্দশসমূহ প্রচার করার জন্য আগ্রহান্বিত হবে।(এক শিষ্যকে শ্রীল প্রভুপাদের পত্র)
“আমি এই ব্যাপারটি যথেষ্ট জোড় আরোপ করছি যে, আমাদের অবশ্যই ব্যাক টু গডহেড প্রকাশনার ব্যাপারটি সুন্দরভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে, কেননা ‘ব্যাক টু গডহেড’ হল আমাদের সোসাইটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিবিটি ট্রাস্টিদের কাছে পত্র (ফেব্রুয়ারি ১৭, ১৯৭৩)
‘ব্যাক টু গডহেড’কে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নত করতে হবে, কেননা এটি আমাদের সোসাইটির মেরুদন্ড। এটি নিয়ে আরো বেশি চিন্তা কর এবং যতটুকু সম্ভব সুন্দরভাবে কর। এটি করতে গিয়ে যদি প্রয়োজন হয় তবে তোমার অন্যান্য সেবাগুলো স্থগিত কর। রায়রামকে পত্র (মার্চ ২৩, ১৯৬৮)
“প্রকৃতপক্ষে আমরা চাই যে, প্রত্যেক আমেরিকান তার হাতে একটি করে ‘ব্যাক টু গডহেড’ পাবে।” গুরুদেবকে পত্র(মার্চ ২৫, ১৯৭১)
“আমরা চাই ‘ব্যাক টু গডহেড’ যত বেশি সম্ভব বিতরণ করতে। তাই যত বেশি তুমি এটি ছাপাবে এবং বিতরণ করবে, তত বেশি আমার গুরুমহারাজ তার বিশাল স্বপ্ন যে স্বার্থক হচ্ছে তা দেখে প্রসন্ন হবেন।” ব্রহ্মানন্দকে পত্র (জুলাই ১৬, ১৯৬৯)
“এটি খুবই উৎসাহপ্রদ যে, তুমি ‘ব্যাক টু গডহেড’ প্রচারে খুবই উৎসাহী। আমি ‘ব্যাক টু গডহেড’ প্রচারকে খুবই মূল্যবান হিসেবে বিবেচনা করি। কারণ ভারতে শুরুর দিকে আমি একা দিন রাত এটির জন্য কঠোর পরিশ্রম করি। আমার এখনও মনে পড়ে যে, এটি বের করার জন্য কত কষ্টই না করতে হয়েছে। শুরুর দিকে আমি ছিলাম গৃহস্থ, তখন এটি কেনার পর কে টাকা পরিশোধ করছে কে করছে না তার খেয়াল না রেখেই আমি মুক্তভাবে এটি বিতরণ করতাম। কিন্তু যখন আমি গৃহস্থ জীবন ত্যাগ করি তখন আমি ছিলাম একা। ‘ব্যাক টু গডহেড’ প্রকাশ করার জন্য কখনো বৃন্দাবনে, কখনো বা দিল্লি বা কখনো বা এখানে ওখানে ভ্রমণ, সেসব দিনগুলো খুবই কঠোর ছিল। অতএব, ‘ব্যাক টু গডহেড’ শুধু শত শত নয় হাজার হাজার নয়, লক্ষ লক্ষ কপি এখন প্রকাশিত হবে, তবে সেটিই আমাকে বড় সান্ত্বনা দেবে। মধুবীনাকে পত্র(এপ্রিল ১৪, ১৯৭০)
‘ব্যাক টু গডহেড’কে তোমার জীবন ও প্রাণ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। সর্বোপরি ‘ব্যাক টু গডহেড’র জন্য তোমার সেবাই হবে প্রথম এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের সেবা। যদি তুমি অন্যান্য সেবা করার কোন সময় না পাও তবে তাতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আমি দেখতে চাই তুমি ‘ব্যাক টু গডহেড কে গড়ে তুলবে একটি সফল ম্যাগাজিন আকারে। (লাইফ ম্যাগাজিন বা উইকলি অব ইন্ডিয়ার ন্যায়)
আমি ম্যাগাজিনটির উন্নতির ব্যাপারে খুবই উচ্চাকাক্ষী এবং এটি কিভাবে করতে হবে সেজন্য তুমি তোমার বিচক্ষণতা বা পারদর্শিতা ব্যবহার কর। রায়রামকে পত্র (মার্চ ২৩, ১৯৬৮)
“আমরা চাই ‘ব্যাক টু গডহেড’ প্রকাশিত হবে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ ভাষায় এবং সারাবিশ্বে এটি বিতরণ হবে, যাতে করে আমাদের আন্দোলন গ্রহণের জন্য কোন ভাষা প্রতিবন্ধকতা না থাকে।” চিলুখানন্দকে পত্র (মার্চ ২৫, ১৯৭১)
‘ব্যাক টু গডহেড’ আমার জীবন ও প্রাণ। অতএব অনুগ্রহ করে চেষ্টা কর, যত বেশি সম্ভব এটি বিতরণ করতে। আমি গৃহস্থ জীবন থাকাকালীন ১৯৪৪ সালে এই ম্যাগাজিনটি শুরু করেছিলাম। সে সময় ৩০০ থেকে ৪০০ রুপি ব্যয় করেছিলাম। মুনাফার কথা বিবেচনা ছাড়াই আমি এই ম্যাগাজিনটি বিতরণ করেছিলাম। কিন্তু দশ বছর পর, ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৯ পর্যন্ত এটি বের করতে যে সংগ্রাম করতে হয়েছিল তা ছিল খুবই কঠোর, কেননা সেসময় আমার কোন অর্থ ছিল না এবং আমি একা সম্পাদনা করতাম, প্রকাশ করতাম এবং পরবর্তী প্রকাশনার জন্য টাকা বাঁচাতাম। তখন সেটি ছিল একটি বড় সংগ্রাম। আমার আকাঙ্খা ছিল যে, আমি বেশী করে ‘ব্যাক টু গডহেড’ প্রকাশ করব, যাতে করে লোকেরা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অপ্রাকৃত কৃপা উপলব্ধি করতে পারে।
এখন যেহেতু আমি তোমাদের দেশে এসেছি আমি আশা করছি আমার প্রিয় এসব আমেরিকান ছেলেমেয়েদের উপর এবং আমার দেখার ইচ্ছা যে, এই ম্যাগাজিনটি প্রকাশিত হবে এবং প্রচার হবে রীডার’স ডাইজেস্ট, লাইফ ইত্যাদি বিখ্যাত সব ম্যাগাজিনের মত। লক্ষ লক্ষ কপি ছাপাও এবং সারাবিশ্বে এটি বিতরণ কর। প্রকৃতপক্ষে ‘ব্যাক টু গডহেড’ অন্যান্য ম্যাগাজিনের চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত কেননা এতে রয়েছে মানব প্রয়োজনের সারতত্ত্ব¡। গুরুদাসকে পত্র (এপিল ১৬, ১৯৭০)
আমি তোমার চিঠি পেয়েছি….এবং সেসাথে ৪৯নং ‘ব্যাক টু গডহেড’ এর একটি আধুনিক কপিও পেয়েছি। সতর্কতার সাথে এবং পরম সন্তুটির সাথে এর সম্মতি জ্ঞাপন করছি। আমি এটি জেনে খুব খুশি যে, তুমি এবং অন্যান্যরা ইসকন প্রেসে খুব সুন্দরভাবে সেবা করছ। এই গ্রন্থসমূহ এবং ম্যাগাজিনসমূহ আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূণর্ অস্ত্র, যেগুলো মায়ার সৈন্যদের অজ্ঞানতাকে পরাস্ত করবে এবং যত বেশি সংখ্যক সাহিত্য বিতরণ করব। তত বেশি আমরা এই জগতকে আত্মঘাতি প্রবণতা থেকে মুক্ত করতে পারব। তাই তোমার সেবাটি হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রচারমূলক সেবা আর এজন্য কৃষ্ণ তোমাকে আরো বেশি আশীর্বাদ করুক। আমাকে এইভাবে সহায়তা করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। জয়দ্বৈতকে পত্র (নভেম্বও ১৮, ১৯৭২)
শ্রীল প্রভুপাদের প্রবল ইচ্ছ ছিল যে, ‘ব্যাক টু গডহেড’ বিতরণ হবে বেশী পরিমাণে। “তোমাদের অনেকবার বলেছি যে, আমি সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করে আছি, যখন এই ম্যাগাজিন হবে লাইফ ম্যাগাজিনের আকারে অথবা আরো জনপ্রিয় সব ম্যাগাজিনের মত” (১৯৬৮ সালের জুনে এক পত্রে শ্রীল প্রভুপাদ)
হ্যাঁ, আমার দৃঢ় আদেশ, অনুগ্রহ করে ‘ব্যাক টু গডহেড’ বিতরণের আয়োজন সুন্দরভাবে কর। সংকীর্তন দল, আমার গ্রন্থ ও ‘ব্যাক টু গডহেড’ প্রচার করাই হল আমাদের প্রকৃত কর্মসূচী। আমাদের উচিত সমস্ত শক্তি এই ‘ব্যাক টু গডহেড’ ম্যাগাজিন প্রচারে ব্যয় করা।” সৎস্বরূপকে পত্র (জুন ২১, ১৯৭১)