এই পোস্টটি 707 বার দেখা হয়েছে
বৈদিক শাস্ত্র মতে অনেক অনেক পূর্বে মানুষ সহ সমস্ত প্রাণীদের আকার বা আকৃতি ছিল অনেক বড়। অর্থাৎ মানুষ লম্বায় অনেক বড় ছিল। একইভাবে বিভিন্ন পশু পাখিরাও বিশাল আকৃতির ছিল। কিন্তু বৈদিক শাস্ত্রের এ ধরনের উক্তির সত্যতা কতটুকু এ নিয়ে প্রশ্ন চলে আসছিল বহুদিন আগে থেকেই। বিজ্ঞানী সহ সমস্ত মানুষের মনে প্রশ্ন “আসলেই কি এ ধরনের মানুষ বা প্রাণীর অস্থিত্ব ছিল?”
তাই বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য অনেক আগে থেকেই সারা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে নেমে পড়েছিল এ ধরনের প্রাচীন কোন ফসিলের সন্ধানে। আর তখন তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে যে, আসলেই এ ধরনের প্রাণী বা মানুষের অস্থিত্বে আজ থেকে লক্ষ লক্ষ বছর আগে ছিল। এর প্রমাণ সিরিয়াতে সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত প্রাচীন উঠের হাঁড়। বেসেল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জিন মারি লে টেনসরের নেতৃত্ব সুইজ-সিরিয়ান একটি দল সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে ১৯৯৯ সাল থেকে এ ধরনের ফসিল উদ্ধারে নিয়োজিত। গত ২০০৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তারা প্রায় প্রাচীন বৃহৎ আকারের উঠের প্রায় ৪০টির মতো হাঁড়ের সন্ধান পেয়েছিল। সেই উঠগুলোর হাঁড় এত বড় ছিল যে, সেগুলো বর্তমান থেকে দ্বিগুণ ছিল। সর্বশেষ যে উঠের ফসিল (জীবাশ্ম) বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করেছে তা প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার বছর আগের। তবে সম্প্রতি যে উঠের ফসিলটি আবিষ্কৃত হল তার বয়স ১০ লক্ষ বছরেরও বেশি। সে হিসেবে উঠের অস্থিত্ব আজ থেকে ১০ লক্ষ বছর পূর্বেও বিদ্যমান ছিল। বর্তমানে এ ফসিলটি সিরিয়ার কেন্দ্রীয় অংশের Elkowm থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে। সবচেয়ে অবাকের বিষয় হল, এতদিন আবিষ্কৃত ফসিলগুলো থেকে এবারের ফসিলটি একটু ভিন্ন ধরনের। বিজ্ঞানীরা বলছে এ ফসিলটি একটি ভিন্ন প্রজাতির উঠের। এ উঠের পিঠের অংশ তিন মিটার পর্যন্ত উঁচু এবং প্রায় ৪ মিটারের মত লম্বা। সে হিসেবে তখনকার উঠগুলো ছিল অনেকটা জিরাফ বা বিশাল হাতির সমান। উল্লেখিত উটটিকে তখন মেরে ফেলা হয়েছিল বলে গবেষণায় জানা গেছে। আরো একটি সুখবর হল, ঐ একই স্থান থেকে একজন প্রাচীন মানুষের হাঁড়ও আবিষ্কৃত হয়েছে। পুরোটা আবিষ্কৃত না হলেও হাতের কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত বিস্তৃত একটি লম্বা হাঁড় এবং কিছু দাঁতের সন্ধান পেয়েছে। সেগুলোর সবকটিই বর্তমান মানুষের শারীরিক গঠন থেকে অনেক বিশাল। বর্তমানে এ হাড় ও দাঁতগুলো সুইজারল্যান্ডে পাঠানো হয়েছে গবেষণার জন্য। Elkowm নামক ঐ একই স্থান থেকে বিজ্ঞানীরা প্রাচীন চকচকে পাথর এবং পাথরের তৈরি কিছু অস্ত্রসস্ত্রেরও সন্ধান পেয়েছে। উল্লেখ্য, মূল আবিষ্কৃত স্থানটি সিরিয়ার দুটি পর্বতের মাঝে অবস্থিত। যে পর্বতগুলোর মধ্যবর্তী দূরত্ব ২০ কি.মি. (১৪ মাইল) পর্যন্ত বিস্তৃত। বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক এ আবিস্কার সনাতন ধর্মের প্রাচীন বৈদিক শাস্ত্রের অভ্রান্ততাই আরেকবার প্রমাণিত হল। যারা শাস্ত্রকে সেকেলের প্রাচীন মনগড়া কতগুলো উক্তি বা সাধারণ কোন পাঠ্যবই বলে মনে করে তাদের জন্য সাম্প্রতিক এ আবিস্কার শাস্ত্রের প্রতি বহুগুণ শ্রদ্ধা বৃদ্ধি করবে এটিই আশা। হরে কৃষ্ণ।