এই পোস্টটি 150 বার দেখা হয়েছে
একজন মেধাবী কিছু নেতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন একজন আলোক বাটা জুতা বিক্রেতা অনেক দূরে অবস্থিত একটি উপজাতীয় শহরে গিয়েছিলেন জুতা বিক্রির প্রজেক্ট কেমন হতে পারে তা আবিষ্কার করার জন্য। তিনি ফিরে আসলেন অত্যন্ত হতাশ হয়ে, “কোন ‘লাভ নেই এ শহরে জুতা বিক্রির প্রজেক্ট তৈরি করে, যেখানে প্রত্যেক লোকই হাঁটাচলা করে খালি পায়ে।” অন্য একজন কম মেধাবী কিন্তু পক্ষান্তরে অধিক ইতিবাচক সম্পন্ন একজন ভদ্রলোক ঐ একই স্থান পরিদর্শনে গেলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে অতি উৎফুর হয়ে তার প্রধান অফিসে বার্তা পাঠাল যে, “পরিদর্শনকৃত স্থানে লাভের প্রচুর সম্ভাবনা আছে, কেননা এখানকার লোকেরা কেউ জুতা পড়ে হাঁটে না। তার মানে এই যে, এরা প্রত্যেকেই আমাদের আদর্শ ক্রেতা হবে।” উপরের এই কাহিনীতে আমাদের চিন্তাভাবনাগুলোর একটি সম্পূর্ণ প্রতিফলন ফুটে উঠেছে। প্রথম জনের চিন্তাভাবনা ছিল সম্পূর্ণ নেগেটিভ বা নেতিবাচক কিন্তু ২য় জনের চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণটাই পজেটিভ বা ইতিবাচক ছিল। তাই ২য় জনেই সফল । আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা প্রতিনিয়ত মনের উপর ভীষন চাপ অনুভব করেন। কারণ হিসেবে অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হল আমার অপরপক্ষের লোকটিই। যিনি আপনাকে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন নেতিবাচক কথার বাণে রীতিমত জব্দ করেন। আর এ নেতিবাচক কথার ফলশ্রুতিতে আপনিও বিচলিত হয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক কার্যে লিপ্ত হয়ে পড়েন।
বিশ্বে এত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হল মানুষের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই । ভাবনাগুলো মূলত নেতিবাচক নির্ভর করে মানসিকভাবে দুর্বলতা, খুঁদ দেখার প্রবণতা, খারাপ কাজ করার প্রবণতা, সবকিছু জটিল করে দেখা ইত্যাদির (উদাহরণস্বরূপ ঃ ঈর্ষা, ক্রোধ)। উপরই। এখন নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনাসমূহ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কি ধারণা সে সম্পর্কে আলোকপাত করা যাক । ডাক্তারদের তথ্য মতে অতিরিক্ত রাগের বেগ আপনার পাঁচ মাইল দৌড়াতে যে পরিমাণ শক্তি ব্যবহৃত হয় ঠিক সমপরিমাণ শক্তিসামর্থ্য ক্ষয়প্রাপ্ত করার সামিল। প্রচণ্ড ঈর্ষাকে, যার সঙ্গী হল আপনার প্রতিদ্বন্ধিকে আঘাত করার জন্য ধ্বংসাত্মক ইচ্ছা, যেটিকে তুলনা করা হয়, একজন ব্যক্তি তার নিজের হাতে কতগুলো জ্বলন্ত কয়লার টুকরো বহন করার সঙ্গে, যিনি তার শত্রুকে এক্ষুনি বলপূর্বক দ্রুতবেগে নিক্ষেপ করতে প্রস্তুত। কিন্তু সেই গরম কয়লা শত্রুকে না যতটা ক্ষতি করতে পারছে তার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেই আক্রমনকারীই, কেননা সে অনেক সময় ধরে এই গরম কয়লা হাতে নিয়ে বসে আছে, আর নিজের হাতটিই বরঞ্চ পুড়ছে। তেমনি ঈর্ষা ঈর্ষাকারীকেই অধিক ক্ষতিগ্রস্থ করে ।
কারো বিরুদ্ধে হিংসাকে ধরে রাখাকে তুলনা করা হয় একজন বিষপানকারী লোকের সঙ্গে। যে কিনা নিজে বিষ পান করেছে কিন্তু অত্যন্ত হাস্যকরভাবে বোকার মত আশা করে যে, নিজে বিষ খেয়ে অন্যকে শায়েস্তা করবে, কিন্তু সে নিজে জানে না তার নির্মম পরিণতি সম্পর্কে। এভাবে আপনার নেতিবাচক ভাবনাগুলো শুধুমাত্র যে অন্যকেই ক্ষতিগ্রস্থ করে তা নয়। পক্ষান্তরে সেগুলো অবশ্যম্ভাবী আপনাকেই বেশি পরিমানে ক্ষতি করে। কিন্তু অন্যদিকে আপনার ইতিবাচক চিন্তাভাবনা আপনাকে একজন জয়ী ব্যক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে পারে। এক গবেষনায় দেখা গেছে, কোন ইতিবাচক ভাবনা আপনার শরীরে ondorphin নামক এক প্রকার হরমোনের বৃদ্ধি করে যেটি খুবই উপকারী আপনার শারীরিক স্বাস্থ্যকে স্পন্দনশীল করতে। এক কথায় পজেটিভ চিন্তাভাবনা আপনাকে মানসিকভাবে তো চাঙা রাখতে সক্ষম সেই সঙ্গে শারীরিকভাবেও। আবার নেতিবাচক ভাবনা আপনার শরীরে adrenalin নামক এক প্রকার হরমোনের স্তর বৃদ্ধি করে যা শারীরিক সতেজতা বা মনের উৎসাহকে ভিতরে ধ্বংস করে দেয় বা দুর্বল করে দেয়। আগামী সংখ্যায় বৈদিক শাস্ত্রের সহযোগিতায় এ পজেটিভ নেগেটিভ চিন্তাভাবনাগুলোর ফলাফল কি হতে পারে এবং নেগেটিভ ভাবনাগুলো থেকে কিভাবে উত্তরণ সম্ভব তা বিজ্ঞানসম্মতভাবে তুলে ধরা হবে। হরে কৃষ্ণ!
চৈতন্য সন্দেশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন :https://play.google.com/store/apps/details?id=com.differentcoder.csbtg